মশা মারতে মাস তিনেক আগেই উঠেপড়ে লেগেছিল চন্দ্রকোনা পুরসভা। মশা দমনে প্রচারও চলছে জোরকদমে। নাগরিকদের সচেতন করতে বাড়ি বাড়ি যাচ্ছেন পুর ও স্বাস্থ্যকর্মীরা। এতকিছুর পরেও চন্দ্রকোনা পুরসভার ওয়ার্ডগুলিতে মশা নিধনের ছবিটা তেমন বদলায়নি বলেই অভিযোগ পুরবাসীর। বর্ষার শুরুতেই জঞ্জালে মুখ ঢেকেছে চন্দ্রকোনা।
পুরসভার চেয়ারম্যান অরূপ ধাড়ার কিন্তু দাবি, ‘‘চন্দ্রকোনা শহরের নালা-নদর্মাগুলিতে আবর্জনা জমে থাকার কোনও চিহ্নই নেই। রাস্তাঘাটও পরিষ্কার। পুরসভার ভয়ে মশার দল শহর ছেড়ে চম্পট দিয়েছে কবেই।” তবে বাস্তব চিত্র যে পুরসভার দাবিকে নস্যাৎ করেছে শহর ঘুরে তার প্রমাণ মিলল। শহরের সিংহভাগ নিকাশি নালা এখনও সংস্কার হয়নি। নালাগুলিতে কিলবিল করছে মশার লার্ভা। বাড়ি এবং দোকানের নোংরা ডাঁই হয়ে জমে আছে নালাগুলিতে। জমে থাকা জলে ডিম পেড়েছে মশা। পুরসভার এক কাউন্সিলরের কথায়, ‘‘মাইকে প্রচারে মশাদের কিছু যায় আসে না। মশার জন্ম নিয়ন্ত্রণ জরুরি। আর সেখানেই যত গলদ পুরসভার।”
পুরসভা সূত্রের খবর, প্রতি ওয়ার্ডে লিফলেট বিলি সহ জল জমলেই সঙ্গে সঙ্গে পৌঁছে যাচ্ছেন সাফাইকর্মীরা। মশানাশক তেল স্প্রেও করা হচ্ছে। পুরসভার স্বাস্থ্যকর্মীরা বাড়ি বাড়ি গিয়ে পরিস্থিতি দেখে আসছেন। মোড়ে মোড়ে অস্থায়ী ভ্যাট বসানো হয়েছে। সেগুলিও নিয়মিত সাফাই করা হচ্ছে। স্বাস্থ্য দফতর ও পুরসভা সূত্রেই খবর, গত বছর এখানে জ্বরে আক্রান্ত হয়েছিলেন ৩০ জন। যদিও বেসরকারি মতে সংখ্যাটা এর প্রায় তিনগুণ। চলতি বছরেও প্রায় বারো জন জ্বরে আক্রান্ত হয়েছেন। তবে ডেঙ্গি বা ম্যালেরিয়া এখনও মেলেনি।
শহরের গোপসাই, জয়ন্তীপুর, সতীবাজার, সুরেরহাট, মল্লেশ্বরপুর, নবকুঞ্জতলা প্রভৃতি এলাকার মূল নিকাশি নালাগুলি আবর্জনায় ভরে গিয়েছে। একটু বৃষ্টিতেই জল উপচে পড়ছে রাস্তায়। পাশাপাশি শহরে শতাধিক ভগ্নপ্রায় মন্দির রয়েছে। তার চারপাশ ঝোপ-জঙ্গলে ভরে গিয়েছে। মূল সড়ক সহ অলি-গলির সব রাস্তাতেই ঘাস, আগাছায় ভর্তি। কিন্তু সে সব সাফাইয়ে পুরসভা কোনও পদক্ষেপ করে না বলে অভিযোগ মানুষের। তাঁদের দাবি, পুরসভার পক্ষ থেকে মাশা মারার যে তেল স্প্রে করা হয় তাও করা হয় দায়সারা ভাবে।