বিদ্যাসাগর হল চত্বরের এই মুক্তমঞ্চের ছাউনি দেওয়া হবে। নিজস্ব চিত্র
মেদিনীপুরের বিদ্যাসাগর হল এবং সংলগ্ন মুক্তমঞ্চ সাজানোর কাজ শুরু হচ্ছে। এই কাজের সূচনা করবেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। আজ, সোমবার খড়্গপুরে আসছেন মুখ্যমন্ত্রী। বেশ কয়েকটি প্রকল্পের শিলান্যাস করার কথা তাঁর। এরমধ্যে মেদিনীপুরের এই প্রকল্পও রয়েছে। এ ক্ষেত্রে অর্থ সহায়তা দিচ্ছে মেদিনীপুর-খড়্গপুর উন্নয়ন পর্ষদ (এমকেডিএ)।
এমকেডিএ-র চেয়ারম্যান তথা মেদিনীপুরের বিধায়ক মৃগেন্দ্রনাথ মাইতি বলেন, ‘‘বিদ্যাসাগর হলের পরিকাঠামো উন্নয়নে পরিচালন সমিতি অর্থ সাহায্য চেয়েছিল। সেই মতো এমকেডিএ অর্থ সাহায্যের সিদ্ধান্ত নিয়েছে। এই হল সাজানো হলে সংস্কৃতিপ্রেমী মানুষ উপকৃত হবেন। মেদিনীপুরের এই হল আমাদের কাছে গর্বের।’’ তিনি মানছেন, মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ই এই প্রকল্পের শিলান্যাস করবেন।
১৯৩৯ সালের ১৬ ডিসেম্বর মেদিনীপুরে এসে এই হলের দ্বারোদ্ঘাটন করেছিলেন রবীন্দ্রনাথ। এখানে বঙ্গীয় সাহিত্য পরিষদের ঘরও রয়েছে। সেখানে বিদ্যাসাগর হলের দ্বারোদ্ঘাটনের সভায় রবীন্দ্রনাথের ব্যবহৃত চেয়ার ও টেবিল রয়েছে। রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের স্মৃতি বিজড়িত এই মেদিনীপুর বিদ্যাসাগর স্মৃতি মন্দিরের (বিদ্যাসাগর হল) সংস্কার মাঝে হলেও হাল সে ভাবে ফেরেনি। এখন সেখানে কোথাও দেওয়ালে ফাটল, কোথাও ছাঁদ চুঁইয়ে জল পড়ে।
এমকেডিএ সূত্রে খবর, এই ঐতিহাসিক হলের পরিকাঠামো উন্নয়নে ৩ কোটি ৫২ লক্ষ টাকা দেওয়া হচ্ছে। ভেতরে বসানো হবে এসি ও আধুনিক সাউন্ড সিস্টেম। নতুন চেয়ার কেনা হবে। হলের মধ্যে থাকা সাজঘরও নতুন রূপ পাবে। বিদ্যাসাগর হল চত্বরের মুক্তমঞ্চের হালও ফেরানো হবে। মুক্তমঞ্চের উপর দিকে ছাউনি নেই। ঠিক হয়েছে, সেই ছাউনি দেওয়া হবে। পাশাপাশি আরও কিছু পরিকল্পনা রয়েছে।
মেদিনীপুর শহরে রোজই নানা অনুষ্ঠান, সভা-সম্মেলন হয়। এখন শহরে উন্নতমানের সভাঘর সে ভাবে নেই। বড় মাপের অনুষ্ঠানের জন্য ভরসা প্রদ্যোৎ স্মৃতি সদন (জেলা পরিষদ হল) আর বিদ্যাসাগর হল। আরও কয়েকটি সভাঘর রয়েছে ঠিকই তবে সেখানে বড় মাপের অনুষ্ঠানের আয়োজন প্রায় অসম্ভব। এর মধ্যে প্রদ্যোৎ স্মৃতি সদনের পরিকাঠামো সবথেকে ভাল। সেখানে এসি রয়েছে। সাউন্ড সিস্টেমও ভাল। এই সভাঘরও আগে সংস্কারের অভাবে ধুঁকছিল। সংস্কারের পরে সেটি নতুন রূপ পেয়েছে। একই ভাবে বিদ্যাসাগর হলেরও ভোলবদল হতে চলেছে।
জেলা প্রশাসনের এক সূত্রে খবর, সোমবার খড়্গপুরে এসে মুখ্যমন্ত্রী মোট ২৯টি প্রকল্পের শিলান্যাস করতে পারেন। সেই প্রকল্পগুলি রূপায়নে সব মিলিয়ে ২৩ কোটি ৫৪ লক্ষ ৬২ হাজার টাকা খরচ হওয়ার কথা। অন্যদিকে, ৩৬টি প্রকল্পের উদ্বোধন করতে পারেন মুখ্যমন্ত্রী। সেগুলির জন্য ৩২ কোটি ৫৮ লক্ষ ১৬ হাজার টাকা খরচ হয়ে গিয়েছে। ইতিমধ্যে প্রয়োজনীয় সব প্রস্তুতি সারা হয়েছে।