ভাড়া করা ঘরেই শুরু শিশু আলয়

ঝকঝকে বাড়ি, রঙিন খেলনা, পরিষ্কার সতরঞ্চি। মডেল অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্রের সূচনা হল মেদিনীপুর শহরে। নতুন নাম ‘শিশু আলয়’।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

মেদিনীপুর শেষ আপডেট: ২৮ নভেম্বর ২০১৬ ০০:৫১
Share:

কামারপাড়ার শিশু আলয়। —নিজস্ব চিত্র

ঝকঝকে বাড়ি, রঙিন খেলনা, পরিষ্কার সতরঞ্চি। মডেল অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্রের সূচনা হল মেদিনীপুর শহরে। নতুন নাম ‘শিশু আলয়’।

Advertisement

মেদিনীপুর শহরে থাকা ১০২টি অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্রের মধ্যে ৫টি কেন্দ্রকে মডেল হিসাবে গড়ে তোলা হয়েছে। কেন্দ্রীয় সরকারের ‘আর্লি চাইল্ডহুড কেয়ার অ্যান্ড এডুকেশন’ই এ রাজ্যে ‘শিশু আলয়’। তবে কাজের কোনও পরিবর্তন নেই। আগের মতোই শিশু ও গর্ভবতী মায়েদের পুষ্টির জন্য খাবার দেওয়া হবে। স্কুলে যাওয়ার আগেই তৈরি করে দেওয়া হবে শিশুশিক্ষার ভিত।

কিন্তু পরিকাঠামো নিয়ে প্রশ্নচিহ্ন ঝুলেই থাকছে। কারণ এখনও বেশিরভাগ অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্রের নিজস্ব ভবনই নেই। এমনকী এ দিন শহরের কামারপাড়ায় যে অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্র শিশু আলয় হিসাবে রূপান্তরিত হল সেটিও চলে একটি ক্লাবঘরে। ফলে নেই নিজস্ব শৌচাগারও। ছোট্ট ক্লাব ঘরের মধ্যেই খাওয়া ও পড়াশোনা। এতে কতটা মান উন্নয়ন ঘটানো সম্ভব হবে?

Advertisement

মেদিনীপুরের (শহর) সিডিপিও অসিতবরণ ঘোষের দাবি, “শহরাঞ্চলে জমির অভাবে উন্নত পরিকাঠামো গড়ে তোলা যায়নি। ফলে ক্লাব বা ভাড়া বাড়িতেই কেন্দ্রগুলি চালাতে হয়। তবে এই সমস্যা শিক্ষার মান উন্নয়নে বাধা হবে না।”

শিশুদের পড়ানোর পদ্ধতিতে বৈচিত্র্য আনা হয়েছে এই মডেল অঙ্গনওয়াড়িগুলিতে। নতুন ছবি-ছড়ার বই, খেলনার মাধ্যমে পড়া— সবই থাকছে। সেই সঙ্গে একেবারে শুরু থেকেই যাতে ছোটদের মধ্যে শৃঙ্খলা বোধ গড়ে ওঠে সে ব্যবস্থাও করা হয়েছে।

যেমন, শিশু আলয়ে ঢোকার মুখেই লেখা হয়েছে— ‘জুতো খুলে সাজিয়ে রাখি’। ঘরের এক কোণায় লেখা— ‘গল্প ও ছবির বই’। অর্থাৎ ওই নির্দিষ্ট জায়গায় পাওয়া যাবে বই। শিশুরা বুঝবে ওইটি গ্রন্থাগার। কোথাও লেখা ‘আঁকার কোণ’, কোথাও ‘ধাঁধার কোণ’ বা ‘খেলনা কোণ’।

দু’টি বিভাগে শিশুদের ভাগ করে পড়ানো হবে। একটি বিভাগকে যখন অঙ্গনওয়াড়ি কর্মী পড়াবেন তখন অন্য বিভাগের ছাত্রছাত্রীরা নিজেদের খুশী মতো খেলবে, আঁকবে বা পড়বে। অঙ্গনওয়াড়ির সুপারভাইজার প্রীতিলতা দত্ত বলেন, “একবার শৃঙ্খলা তো একবার পূর্ণ স্বাধীনতা। এভাবেই শিশুরা এগিয়ে চলবে।” ধীরে ধীরে সমস্ত অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্রেই এই পদ্ধতিতে পুষ্টি ও পঠনপাঠনের বিষয়টি চালু করা হবে।

প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, মেদিনীপুর শহরের ১০২টি অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্রের মধ্যে মাত্র দু’টি কেন্দ্রের নিজস্ব ভবন রয়েছে। বাকি সবই ক্লাব বা ভাড়া বাড়িতে চলে।

প্রশাসন অবশ্য জানিয়েছে, শহরে জমির সমস্যা থাকলেও গ্রামাঞ্চলে, বিশেষত জঙ্গলমহলের ব্লকগুলি তা নেই। জঙ্গলমহলে আগে থেকেই মডেল অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্র তৈরি করা হয়েছিল। যেখানে পর্যাপ্ত জায়গা তো রয়েছেই, এমনকি রান্নাতে যাতে টাটকা সব্জি ব্যবহার হয় সে জন্য ভবনের সামনে কৃষির উপযোগী জমিও রয়েছে। প্রশাসনিক কর্তাদের দাবি, এটা খুব বেশি সমস্যা হয়ে দাঁড়াবে না। স্বল্প পরিসরেই যাতে পদ্ধতি বজার রাখা হয় সে জন্য সব ধরনের পদক্ষেপ করা হবে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন