যুবকের রহস্যমৃত্যু, তদন্তে কুইকোটায় সিআইডি-র দল

গত বছরের ফেব্রুয়ারি মাসে কুইকোটায় প্রেমিকার বাড়ির সামনে থেকে চৌধুরী হাসানুজ ওরফে খোকন নামে এক যুবকের রক্তাক্ত দেহ উদ্ধার হয়। তাঁর বাড়ি বীরভূমের বোলপুরে। ঘটনার পরে পুলিশের একাংশের বক্তব্য ছিল, এটি আত্মহত্যার ঘটনা।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

মেদিনীপুর শেষ আপডেট: ১৮ ফেব্রুয়ারি ২০১৮ ০০:২১
Share:

বছর খানেক আগে মেদিনীপুর শহরের কুইকোটায় উদ্ধার হয়েছিল বীরভূমের এক যুবকের রক্তাক্ত দেহ। প্রাথমিক তদন্তের পর পুলিশের অনুমান ছিল, প্রেমে প্রত্যাখ্যাত হয়ে ওই যুবক আত্মঘাতী হয়ে থাকতে পারেন। ওই যুবককে খুনের অভিযোগ তুলে সুবিচার পেতে মৃতের পরিজনেরা কলকাতা হাইকোর্টের দ্বারস্থ হয়। হাইকোর্ট ঘটনার সিআইডি তদন্তের নির্দেশ দেয়। আদালতের নির্দেশে শনিবার কুইকোটায় এসে ঘটনার তদন্ত শুরু করল সিআইডি-র একটি দল।

Advertisement

গত বছরের ফেব্রুয়ারি মাসে কুইকোটায় প্রেমিকার বাড়ির সামনে থেকে চৌধুরী হাসানুজ ওরফে খোকন নামে এক যুবকের রক্তাক্ত দেহ উদ্ধার হয়। তাঁর বাড়ি বীরভূমের বোলপুরে। ঘটনার পরে পুলিশের একাংশের বক্তব্য ছিল, এটি আত্মহত্যার ঘটনা। যুবতীর সঙ্গে সম্পর্কে চিড় ধরায় হাসানুজ পিস্তল থেকে নিজের মাথায় গুলি করেছেন।

তবে ঘটনার দিনই মেদিনীপুরে এসে হাসানুজের বাবা চৌধুরী জাকির হোসেন কোতোয়ালি থানায় অভিযোগ দায়ের করেন। হাসানুজের বাবার অভিযোগ ছিল, ওই যুবতী, তাঁর মা এবং আরও অনেকে মিলে তাঁর ছেলেকে খুন করেছেন। অভিযোগের ভিত্তিতে ওই যুবতীকে গ্রেফতার করে পুলিশ। যুবতীর মা-কেও জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। ওই যুবতী বেশ কয়েক সপ্তাহ জেলে ছিলেন। পরে জামিনে ছাড়া পান।

Advertisement

তদন্তে নেমে পুলিশ জানতে পারে, ওই যুবতী জেলারই এক আদালতের কর্মী। বছর কয়েক আগে তাঁর বাবা মারা গিয়েছেন। মায়ের সঙ্গে থাকেন তিনি। বছর খানেক আগে ফেসবুকের মাধ্যমে হাসানুজের সঙ্গে তাঁর আলাপ হয়। তারপর মোবাইল নম্বর, বাড়ির ঠিকানা দেওয়া-নেওয়াও হয়। শুরুতে সম্পর্ক ভালই ছিল। ঘটনার মাস খানেক আগে থেকে দু’জনের মধ্যে দূরত্ব বেড়েছিল। ওই যুবতী আর হাসানুজের সঙ্গে যোগাযোগ রাখতে চাইছিলেন না। পুলিশের দাবি, ওই যুবতী জানিয়েছেন, হাসানুজ তাঁর কাছে অনেক কথা গোপন করেছিলেন। তাই তিনি সম্পর্ক থেকে সরে আসতে চেয়েছিলেন। কিন্তু নাছোড় হাসানুজ সোজা মেদিনীপুরে চলে আসেন। ওই যুবতীর বাড়ির উঠোনে রক্তাক্ত দেহ পড়েছিল হাসানুজের। দেহের পাশ থেকে পিস্তলও উদ্ধার হয়। পিস্তলটি মৃতদেহের বাম দিকে পড়েছিল। যুবকের পরিজনেদের প্রশ্ন ছিল, দেহের বাম দিকে পিস্তল পড়েছিল। কেউ নিজে গুলি চালালে ডান হাত দিয়ে গুলি চালাবে। সে ক্ষেত্রে পিস্তল ডান দিকে পড়ে থাকার কথা। আরও বেশ কিছু প্রশ্ন সামনে এনেছিলেন পরিজনেরা। পুলিশের এক সূত্রে খবর, জিজ্ঞাসাবাদে ওই যুবতী পুলিশকে জানিয়েছিলেন, ঘটনার আগে ওই যুবকের সঙ্গে তাঁর কোনও কথা হয়নি। ওই যুবক তাঁর বাড়ির সামনে এসে নিজেই আত্মহত্যা করেছেন। শনিবার সিআইডি বেশ কয়েকজনের সঙ্গে কথা বলে সেই দিনের ঘটনার ব্যাপারে জানার চেষ্টা করে। ওই ঘটনা কি আত্মহত্যা না খুন? সিআইডি-র এক কর্তা বলেন, “তদন্ত চলছে। এখনই এ নিয়ে বলার সময় আসেনি।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন