প্রতীকী ছবি।
মহিলা সমবায় ব্যাঙ্কে অর্থ নয়ছয়ে ধৃত তৃণমূল নেতা সুকুমার ভুঁইয়াকে নিয়েই এ বার ব্যাঙ্কে হানা দিল সিআইডি। বৃহস্পতিবার বিকেলে সুকুমারবাবুকে নিয়ে মেদিনীপুর শহরের বার্জটাউনে ওই আসে সিআইডির একটি দল। দলে ছিলেন মামলার তদন্তকারী অফিসার নীরেন ভট্টাচার্য। দীর্ঘক্ষণ তল্লাশি চলে। সুকুমারবাবুকে জিজ্ঞাসাবাদ করে বেশ কিছু নথিপত্রও বাজেয়াপ্ত করা হয়। নীরেনবাবু এ নিয়ে মুখ খুলতে নারাজ। সিআইডির এক কর্তা মানছেন, “গুরুত্বপূর্ণ বেশ কিছু নথিপত্র বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে। ওই সব নথি তদন্তে সহায়ক হবে।”
ওই মহিলা সমবায় ব্যাঙ্কের সঙ্গে একটি বেসরকারি ব্যাঙ্কের আর্থিক লেনদেন হত। এ দিন সুকুমারবাবুকে সঙ্গে নিয়ে ওই বেসরকারি ব্যাঙ্কেও গিয়েছিলেন সিআইডি কর্তারা। এই মামলায় এ দিনই মেদিনীপুর আদালতে গোপন জবানবন্দি দিয়েছেন ব্যাঙ্কের মেদিনীপুর শাখার ম্যানেজার কৃষ্ণা বেরা দত্ত। বুধবারই কৃষ্ণাদেবী ও সুকুমারবাবুকে মুখোমুখি বসিয়ে জিজ্ঞাসাবাদও করেছে সিআইডি। সেই জেরাতেও অনেক গুরুত্বপূর্ণ তথ্য উঠে এসেছে। সিআইডি সূত্রে খবর, গোড়ায় অনেক কিছুই অস্বীকার করেছিলেন সুকুমারবাবু। মুখোমুখি জিজ্ঞাসাবাদে অবশ্য সেই সব স্বীকার করতে বাধ্য হন তিনি।
‘মহিলা কো-অপারেটিভ ক্রেডিট সোসাইটি’ নামে এই সমবায় ব্যাঙ্কের প্রায় ১ কোটি ৩১ লক্ষ ৬০ হাজার টাকা তছরুপের মামলার তদন্ত করছে সিআইডি। মেদিনীপুর বাদেও ব্যাঙ্কের আরও দু’টি শাখা রয়েছে চন্দ্রকোনা রোড এবং খড়্গপুরে।
এই মহিলা সমবায় ব্যাঙ্কের পরিচালন সমিতির সম্পাদিক হলেন মধুমিতা ভুঁইয়া। তিনি ধৃত সুকুমারবাবুর স্ত্রী। অভিযোগ, স্ত্রীকে সামনে রেখে ব্যাঙ্কের সব কাজ সুকুমারবাবুই পরিচালনা করতেন।
ঘটনার তদন্তে নেমে আগেও বার্জটাউনে এই ব্যাঙ্কে হানা দিয়েছিল সিআইডি। তবে সে বার দলে শুধু সিআইডি কর্তারাই ছিলেন। দীর্ঘ তল্লাশি শেষে সে দিনও বেশ কিছু নথিপত্র বাজেয়াপ্ত করা হয়েছিল। সুকুমারবাবুকে ৫ দিনের জন্য হেফাজতে পেয়েছে সিআইডি।
আগামী ২৭ মে ফের তাঁকে মেদিনীপুরের সিজেএম আদালতে হাজির করাতে হবে। অর্থ নয়ছয়ের এই মামলায় আরও কয়েকজন জড়িত বলে অভিযোগ। সিআইডি সূত্রের দাবি, ওই অভিযুক্তদের খোঁজে ইতিমধ্যে কয়েকটি এলাকায় তল্লাশি-অভিযান চালানো হয়েছে। পাশাপাশি, এই সময়ের মধ্যে ব্যাঙ্কের আরও বেশ কয়েকজন কর্মীর সঙ্গে কথা বলেছেন তদন্তকারী অফিসারেরা। সুকুমারবাবু কতক্ষণ ব্যাঙ্কে থাকতেন, তাঁর সঙ্গে কার কার সুসম্পর্ক ছিল, এ সব জানার চেষ্টা করেছেন।