Clay Lamps

প্রদীপের আলো জ্বেলেও ‘আঁধারে’ পড়ে কুমোর পাড়া 

এক সময় বেশ জনপ্রিয়তা ছিল স্থানীয় বেরা পাড়ার কারিগরদের তৈরি মাটির প্রদীপের। এ বছর সেখানে গিয়ে দেখা গেল একেবারেই আলাদা চিত্র।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কাঁথি শেষ আপডেট: ১৮ অক্টোবর ২০২২ ০৯:১০
Share:

প্রদীপ শুকনো হচ্ছে কাঁথির কুমোর পাড়ায়। নিজস্ব চিত্র।

বৈদ্যুতিক আলোর জনপ্রিয়তায় কদর কমেছে মাটির প্রদীপ আর লম্ফের। সঙ্গে প্রদীপ জ্বালানোর কাঁচামালের দামও আকাশ ছোঁয়া। তাই দীপাবলীর আগে কার্যত হতাশ কাঁথির পদ্মপুখুরিয়ার কুমোর পাড়া। উৎসবের মরসুমেও চাহিদা কম থাকছে বলে বংশ পরম্পরায় মাটির প্রদীপ এবং লম্ফ বানানোর পেশা ছাড়ছে ওই সব কুমোর পরিবারগুলি। কেউ চালাচ্ছেন টোটো, কেউ মাছের কারবারে যুক্ত হয়েছেন।

Advertisement

পূর্ব মেদিনীপুরের কালীনগর, বাথুয়াড়ির চেয়েও কাঁথিতে বংশগত ভাবে বহু পরিবার প্রদীপ, লম্ফ, ধুনুচি তৈরি করে। কাঁথির ১৮ নম্বর ওয়ার্ডের অন্তর্গত ১১৬ বি জাতীয় সড়কের গায়ে খড়্গপুর বাইপাস লাগোয়া পদ্মপুখুরিয়া গ্রামে ৭০টি কুমোর পরিবারের বাস। বছরের বিভিন্ন সময় মাটির জিনিসপত্র তৈরি করলেও কালী পুজোয় মাটির প্রদীপ, লম্ফ এবং ধুনুচি তৈরি করে তারা। এক সময় কাঁথির স্থানীয় চাহিদা মিটিয়ে ওই পরিবারগুলি জেলার অন্যত্রও প্রদীপ সরবরাহ করত। এখন করোনা পরিস্থিতির উন্নতি হলেও সে সব এখন অতীত। এলাকার বাসিন্দা রামচন্দ্র বেরা বলেন, ‘‘করোনা পরিস্থিতি খুব খারাপ সময়ে দাঁড় করিয়েছিল আমাদের। এখন কিছু সামগ্রী তৈরি করে বসে রয়েছি। কিন্তু বাজার একেবারেই নেই।’’ একই বক্তব্য গোকুল, সনাতন, মনোরমা বেরাদের। নানা রঙের মাটির প্রদীপ আর লম্ফ তৈরি করে এক সময় লাভের মুখ দেখতেন মনোরমা এবং তাঁর ছেলে সনাতন। এবার তাঁরা আর সে সব বানাচ্ছেন না। মনোরমা বলছেন, ‘‘সব জায়গায় টুনি বাল্ব ছেয়ে গিয়েছে। তারপর কেরোসিন লিটার কিছু ১০০ টাকার গণ্ডি ছাপিয়ে গিয়েছে। দীপাবলীতে আর কেউ তেমন ভাবে প্রদীপ জ্বালান না।’’

এক সময় বেশ জনপ্রিয়তা ছিল স্থানীয় বেরা পাড়ার কারিগরদের তৈরি মাটির প্রদীপের। এ বছর সেখানে গিয়ে দেখা গেল একেবারেই আলাদা চিত্র। হাতে গোনা মাত্র আট থেকে ১০টি পরিবার অল্প বিস্তর মাটির প্রদীপ আর ধনুচি বানিয়েছে। ওই কারিগরেরা জানাচ্ছেন, ৫০ ফুট বালির দাম সাড়ে তিন হাজার টাকা, এক রিকশা মাটি কেনার জন্যও কমপক্ষে ১৫ হাজার টাকা দিতে হয়। কিন্তু বিক্রি করে খরচটুকুই উঠে আসে না। তবু শেষবেলায় কিছুটা বিক্রি বাড়ার আশায় গোকুল সনাতনের প্রদীপ, ধুনুচি, ঘট বানানোর কাজ চালিয়ে যাচ্ছে। মাটির সামগ্রী শুকনোর পরে এখন চলছে তাতে রং করার কাজ।

Advertisement
(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন