খড়্গপুর স্টেশন চত্বরে বন্ধ একাধিক এটিএম ।
এক দিকে বেশিরভাগ এটিএম বন্ধ, অন্য দিকে ডাকঘরে টাকা নেই— নোট বাতিলের চোটে শুক্রবারও দুর্ভোগ চলল মেদিনীপুর, খড়্গপুর দুই শহরখড়্গপুরের ঝাপেটাপুরের বাসিন্দা বেসরকারি সংস্থার কর্মী সত্যজিৎ চক্রবর্তী এ দিন গিয়েছিলেন খড়্গপুরের উপ-ডাকঘরে। ৮টি পাঁচশো টাকার নোট দিয়ে ৪ হাজার টাকার নতুন নোট নেওয়ার ইচ্ছে ছিল। কিন্তু ডাকঘর কর্তৃপক্ষ সাফ জানিয়ে দেন তাঁরা কোনও নগদ টাকা দিতে পারবেন না। তাই খালি হাতেই ফিরতে হয় সত্যজিতবাবুকে। এমন ভোগান্তির ছবি সর্বত্রই। মেদিনীপুর প্রধান ডাকঘরের আওতায় ৪৯টি উপ-ডাকঘর ও প্রায় সাড়ে তিনশো গ্রামীণ ডাকঘর রয়েছে। প্রধান ডাকঘর সূত্রে খবর, বৃহস্পতিবার স্টেট ব্যাঙ্ক থেকে ডাকঘরকে মাত্র ২৫ লক্ষ টাকা আসে। তা ভাগ করে দেওয়া গিয়েছিল ২৩টি উপ-ডাকঘরকে। বাকি সব ডাকঘরই কপর্দক শূন্য! পশ্চিম মেদিনীপুরের জেলা মুখ্য ডাকঘর আধিকারিক বিকাশকুমার মিশ্র বলেন, “টাকা না পাওয়ায় সকলকে দিতে পারিনি। ফের স্টেট ব্যাঙ্কের কাছে ১ কোটি টাকা চেয়ে চেক পাঠিয়েছি। কিন্তু বিকেল পর্যন্ত টাকা পাইনি।”
মেদিনীপুর এলআইসি মোড়ে ব্যাঙ্কের সামনে লাইন। নিজস্ব চিত্র।
স্টেট ব্যাঙ্ক সূত্রে জানা গিয়েছে, একজনকে ১০ হাজার টাকার বেশি দেওয়া যাবে না, এই নির্দেশ মাথায় রেখেই ব্যবস্থা করা হয়েছিল। সরকারি প্রতিষ্ঠানকে টাকা দেওয়ার প্রয়োজনীয় অনুমতি নেওয়া হয়নি। এ দিন দুপুরে সেই অনুমতি মেলে। তখন আবার দেখা যায়, প্রধান ডাকঘরের চেক ভাঙাতে বৈদ্যুতিন পদ্ধতিতে প্যান নম্বর চাইছে। কিন্তু ডাকঘর প্যান কার্ড দেবে কোত্থেকে! ফলে, সমস্যা মেটেনি। স্টেট ব্যাঙ্কের মেদিনীপুর শাখার দায়িত্বপ্রাপ্ত অ্যাসিস্ট্যান্ট জেনারেল ম্যানেজার শক্তিপদ ঘোষ বলেন, “সমস্যা সমাধানের চেষ্টা চলছে।”
এ দিন এটিএম-ও সে ভাবে খোলেনি। স্টেট ব্যাঙ্কের মেদিনীপুর শাখার অধীনে ২৬টি এটিএম কাউন্টারই বন্ধ ছিল। কেন? ব্যাঙ্ক কর্তৃপক্ষ জানিয়েছেন, পদ্ধতির পরিবর্তন ঘটাতে সময় লাগছে। তবু শনিবার অন্তত যাতে দু’টি এটিএম কাউন্টারও চালু করা যায় সেই চেষ্টা হবে বলে ব্যাঙ্ক কর্তৃপক্ষ জানান। এটিএম দুর্ভোগের ছবি খড়্গপুরেও। ব্যবসায়ী মনোজ অগ্রবাল এটিএমে টাকা জমা দিতে হন্যে হয়ে ঘুরেছেন। শেষে মালঞ্চর একটি এটিএম খোলা পেয়ে লাইনে দাঁড়ান। তিনি বলেন, “শহরে অধিকাংশ এটিএম বন্ধ। আর টাকা জমার সুবিধা সামান্য কয়েকটি এটিএমে রয়েছে। জানি না কতক্ষণ লাইনে দাঁড়াতে হবে।’’ স্টেট ব্যাঙ্কের খড়্গপুরের রিজিওনাল ম্যানেজার মনমোহন রথের বক্তব্য, “নতুন নোটের অভাবে এটিএম বন্ধ রয়েছে। তবে সন্ধের মধ্যে আমরা এটিএম খোলার চেষ্টা করছি।’’