বাস চালাতে বাধা, সংগঠন কাঠগড়ায়

সরকারি অনুমতি রয়েছে বাসের। চলাচলও করে সরকারের বেঁধে দেওয়া টাইম টেবিল মেনে। কিন্তু তারপরেও সেই বাস চালানোয় বাধা দেওয়ার অভিযোগ উঠল পশ্চিম মেদিনীপুর জেলার চন্দ্রকোনা রোডের বাসমালিক সংগঠনের বিরুদ্ধে।

Advertisement

আনন্দ মণ্ডল

তমলুক শেষ আপডেট: ০৯ অগস্ট ২০১৮ ০৭:১০
Share:

সরকারি অনুমতি রয়েছে বাসের। চলাচলও করে সরকারের বেঁধে দেওয়া টাইম টেবিল মেনে। কিন্তু তারপরেও সেই বাস চালানোয় বাধা দেওয়ার অভিযোগ উঠল পশ্চিম মেদিনীপুর জেলার চন্দ্রকোনা রোডের বাসমালিক সংগঠনের বিরুদ্ধে। অভিযোগ, চন্দ্রকোনা রোডের বাসমালিক সংগঠন তাঁদের বেঁধে দেওয়া সময়ে ওই বাস চালানোর জন্য জোর দিচ্ছেন।

Advertisement

পরিবহণ দফতর ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, পশ্চিম মেদিনীপুরের পিংলার বাসিন্দা প্রতিমা পাল ময়না থেকে মেদিনীপুর, চন্দ্রকোনা রোড, দূর্গাপুর হয়ে বরাকর রুটে বাস চালানোর অনুমোদন পান রাজ্য পরিবহণ দফতর থেকে। মাস খানেক আগে ওই বাস চলাচল শুরু হয়। কিন্তু দিন কয়েক আগে চন্দ্রকোনা রোড এলাকার তৃণমূল প্রভাবিত বাসমালিক সংগঠন বাসের সময়সূচি নিয়ে আপত্তি তোলে।

স্থানীয় সূত্রে খবর, ‘স্টেট ট্রান্সপোর্ট অথরিটি’-র নিয়ম মতো বাসটি ময়না থেকে ভোর ৪টে ১০ মিনিটে ছেড়ে চন্দ্রকোনা রোডে সকাল ৭টা ২৫ মিনিটে পৌঁছয়। অভিযোগ, চন্দ্রকোনা রোড এলাকার বাসমালিক সংগঠন ওই বাসটি সকাল ৫টার মধ্যে চন্দ্রকোনা রোডে পৌঁছতে হবে বলে চাপ দিচ্ছে। অভিযোগ, গত মঙ্গলবার সকালে ময়না বাস স্ট্যান্ড থেকে যাত্রী নিয়ে বাসটি চন্দ্রকোনা রোডে যাওয়ার পরেই স্থানীয় বাসমালিক সংগঠনের সদস্যরা সেটি আটকে দেয়। বাধ্য হয়ে যাত্রীদের বাস থেকে নেমে যেতে হয়। গন্তব্যে পৌঁছতে হয়রানির শিকার হন তাঁরা।

Advertisement

বাস আটক ও যাত্রীদের নেমে যাওয়ার ঘটনা অস্বীকার করেছেন চন্দ্রকোনা রোড বাস ওনার্স অ্যাসোসিয়েশন-এর সম্পাদক বরুণ চৈরা। তাঁর দাবি, ‘‘ময়না-বরাকর রুটের ওই বাসমালিক পক্ষের সঙ্গে আলোচনায় বাস যাতায়াতের সময় পরিবর্তন করতে বলা হয়েছিল। কিন্তু ওই বাসের মালিক রাজি হননি। মঙ্গলবার বাসটি চন্দ্রকোনা রোডে আসার পর সংগঠনের সদস্যরা সময়সূচি পরিবর্তন করে আনার জন্য বলেছিলেন। বাস আটকে রাখার অভিযোগ ঠিক নয়।’’ তাঁর পাল্টা অভিযোগ, ‘‘মিথ্যা তথ্য দিয়ে ওই বাসের মালিকপক্ষ রাজ্য পরিবহণ দফতর থেকে সময়সূচি নিয়েছেন। এ নিয়ে সংগঠনের পক্ষ থেকে পরিবহণ দফতরে মঙ্গলবার অভিযোগ জানিয়েছি।’’

কিন্তু সময় পরিবর্তন কেন?

এ ব্যাপারে সরাসরি কোনও পক্ষই সরাসরি মুখ না খুললেও স্থানীয় সূত্রে খবর, ময়না-বরাকর রুটের বাসটি তার নির্ধারিত সময়ে চললে চন্দ্রকোনা রোড এলাকার অন্য বাসের ব্যবসা মার খাবে। স্থানীয় এক বাসযাত্রীর কথায়, ‘‘দূরপাল্লার বাসগুলিতে দ্রুত গন্তব্যে পৌঁছনো যায়। তাই লোকাল বাস ছেড়ে অনেকে ওই বাসেই চড়তে চান।’’

সমস্যার সমাধানে প্রতিমাদেবী পশ্চিম মেদিনীপুর জেলা বাস ওনার্স অ্যাসোসিয়েশন-এর সম্পাদকের হস্তক্ষেপ চেয়েছিলেন। সেখানকার নেতৃত্ব চন্দ্রকোনা রোড বাসমালিক সংগঠনের নেতাদের নির্দেশ দেন ওই বাস মালিকের সঙ্গে আলোচনা করার। প্রতিমাদেবীর অভিযোগ, ‘‘চন্দ্রকোনা রোড বাসমালিক সংগঠনের নেতৃত্ব আলোচনা বসলেও তাঁরা তাঁদের নির্ধারিত সময়েই বাস চালানোর দাবিতে অনড় থাকেন।’’ চন্দ্রকোনার বাস মালিকদের দেওয়া সময় প্রসঙ্গে প্রতিমাদেবীর দাবি, ভোর পাঁচটার মধ্যে চন্দ্রকোনা রোডে পৌঁছতে হলে ময়না থেকে রাত ২টো আড়াইটে নাগাদ বাস ছাড়তে হবে। এতে যাত্রী কম হবে। তাঁদেরও লোকসান হবে।

এই পরিস্থিতিতে সমস্যার সমাধানে ময়না পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি শেখ সাজাহানের কাছে আবেদন জানিয়েছেন প্রতিমাদেবী। শেখ সাজাহান বলেন, ‘‘বিষয়টি নিয়ে বাস মালিকদের সংগঠনের সঙ্গে আলোচনা করব।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন