বাড়ির ভাড়া না মেটানোর অভিযোগ উঠল স্বাস্থ্য দফতরের বিরুদ্ধে। দু’এক মাস নয়, স্বাস্থ্য দফতরের বিরুদ্ধে টানা ১৬ বছরের ভাড়া বকেয়া রাখার অভিযোগ উঠেছে। বকেয়া ভাড়ার পরিমাণও সাড়ে ১৩ লক্ষ টাকার বেশি বলে অভিযোগ।
বাড়ির মালিক অমিত লাহা বলেন, “সম্প্রতি একটি দুর্ঘটনায় শারীরিক সক্ষমতা হারিয়েছি। চোখেও ভাল দেখি না। এই পরিস্থিতিতেও ভাড়ার টাকা চেয়ে প্রশাসনিক কর্তাদের দোরে দোরে ঘুরে বেড়াচ্ছি। সুরাহা মেলেনি।” অমিতবাবুর অভিযোগ, “স্বাস্থ্য দফতর সে সব কিছুই করছে না। উল্টে আমাদের অনুমতি ছাড়াই দফতরের আরও একটি অফিস সেখানে বসিয়ে দিয়েছে!”
মেদিনীপুর শহরের কেরানিতলায় একটি ভাড়াবাড়িতে জেলা স্বাস্থ্য দফতরের অফিস রয়েছে। অফিসে বসেন জেলা উপ মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক-৩। অফিস থাকাকালীন এক ব্যক্তির থেকে প্রায় ১২ কাঠা জমি-সহ বাড়িটি কেনেন দু’ভাই অমিত লাহা ও অসিত লাহা। ভাড়াটিয়া উচ্ছেদের জন্য মামলা করেন তাঁরা। মামলায় হেরেও যান। পরবর্তীকালে ভাড়া চেয়ে আবেদন জানান। স্বাস্থ্য দফতর প্রতি বর্গফুটে ২০ পয়সার হিসেবে ভাড়াও দেয় (৩৫০০ বর্গ ফুট বাড়ি ও সামনের ফাঁকা জমি ৪২৩১ বর্গফুট)।
কিন্তু মেদিনীপুর শহরে এমন গুরুত্বপূর্ণ জায়গায় অফিস থাকায় ভাড়া বৃদ্ধির আবেদন জানান অমিতবাবু। ২০১২ সালে স্বাস্থ্য দফতর ভূমি অধিগ্রহণ দফতরের কাছে ভাড়ার হার জানতে চেয়ে চিঠি দেয়। ২০১৩ সালে তার উত্তরে জানানো হয়, কোন সাল থেকে কোন সাল পর্যন্ত কত টাকা করে ভাড়া হবে। তাতে দেখা যাচ্ছে, ২০১১ সালের পর থেকে মাসিক ভাড়া দাঁড়িয়েছে ১০,১৫১ টাকা। সে ভাবে অঙ্ক কষেই দেখা যায়, বকেয়া ভাড়ার পরিমাণ ১৩ লক্ষ ৭৯ হাজার ২৯৮ টাকা। স্বাস্থ্য দফতরের পক্ষ থেকে বকেয়া ভাড়ার টাকা চেয়ে রাজ্যকে চিঠিও দেওয়া হয়েছে বলে স্বাস্থ্য দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে। যদিও এখনও বাড়ি মালিক ভাড়ার টাকা পাননি বলে অভিযোগ।
এ ব্যাপারে পশ্চিম মেদিনীপুরের জেলা মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক গিরিশচন্দ্র বেরা বলেন, “অনেক পুরনো বকেয়া এটা। শুনেছি মাঝে মামলাও হয়েছিল। ভাড়ার কিছু টাকা দেওয়াও হয়েছে। বাকি টাকা পেলেই দেওয়া হবে।” অমিতবাবুও অবশ্য জানিয়েছেন, কিছু টাকা পেয়েছেন। কিন্তু তা বকেয়ার থেকে নিতান্তই কম বলে তাঁর দাবি।