গগনচুম্বী বিল, নিয়মিত চিকিৎসক না আসা, অসাধুতা— কলকাতার বেসরকারি হাসপাতাল ও নার্সিংহোমের এমনই নানা ‘রোগ’ নিয়ে বুধবার কড়া বার্তা দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। পশ্চিম মেদিনীপুরের একাধিক নার্সিংহোমের বিরুদ্ধেও অভিযোগের তালিকা দীর্ঘ। চিকিৎসা পরিষেবা নিয়ে গাফিলতির অভিযোগ ঘিরে স্বাস্থ্য দফতরের নজরে খড়্গপুরের একটি নার্সিংহোম।
গত ৩০ ডিসেম্বর খড়্গপুরের ওই নার্সিংহোমে হানা দেয় স্বাস্থ্য দফতরের প্রতিনিধিদের একটি দল। ওই দলে ছিলেন জেলা উপ-মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক সুদীপ মণ্ডল, অতিরিক্ত মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক শক্তিপদ মুর্মু, কুণাল মুখোপাধ্যায়। পরিকাঠামোগত ত্রুটি, অগ্নিনির্বাপণ ব্যবস্থার শংসাপত্র না থাকা-সহ একাধিক অভিযোগের ভিত্তিতে নার্সিংহোমে হানা দেওয়া হয়েছিল বলে স্বাস্থ্য দফতরের এক সূত্রে খবর।
যদিও নার্সিংহোমে কর্তৃপক্ষ স্বাস্থ্য দফতরের কর্তাদের জানান, সাতদিন আগে নোটিস না দিয়ে নার্সিংহোমে তল্লাশি চালানো যাবে না। তাই তল্লাশি না চালিয়েই ফিরে আসেন স্বাস্থ্য দফতরের প্রতিনিধিরা। জেলা মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক গিরীশচন্দ্র বেরা বলেন, “যাঁরা নার্সিংহোমের লাইসেন্স দেন, অভিযানে যাওয়ার আগে তাঁদের নার্সিংহোমকে জানাতে হয় না। এই কথা আমরা চিঠি দিয়ে ওই নার্সিংহোম কর্তৃপক্ষকে জানিয়েছি।’’ তিনি বলছেন, ‘‘খড়্গপুরের ওই নার্সিংহোমের বিরুদ্ধে নানা অভিযোগ আমাদের কাছে এসেছে। ফের ওই নার্সিংহোমে হানা দেওয়া হবে।’’
খড়্গপুরের ওই নার্সিংহোমে স্ত্রীর চিকিৎসা করিয়েছেন শহরের তালবাগিচার বাসিন্দা সত্যজিৎ দে। তাঁর অভিযোগ, “ওই নার্সিংহোমে বছর চারেক ধরে আমার স্ত্রীর চিকিৎসা চলেছে। অথচ দিনের পর দিন স্ত্রীর ভুল চিকিৎসা করা হয়েছে। বিষয়টি মুখ্যমন্ত্রীকেও জানিয়েছিলাম।’’ খড়্গপুরের কাউন্সিলর তথা জেলা তৃণমূল নেতা জহরলাল পালেরও অভিযোগ, “ওই নার্সিংহোমের বিরুদ্ধে আমার কাছে বহু মানুষ অভিযোগ জানিয়েছেন। নার্সিংহোমের বিরুদ্ধে মামলাও করেছি।”
যদিও এ সবে গুরুত্ব দিতে নারাজ নার্সিংহোম কর্তৃপক্ষ। নার্সিংহোম কর্তৃপক্ষের পক্ষে চিকিৎসক বিমল রাজের দাবি, “২০১২ সালে নার্সিংহোমের অগ্নিনির্বাপণ ব্যবস্থার শংসাপত্র চেয়ে আবেদন করেছিলাম। যদিও তা এখনও দেওয়া হয়নি। নার্সিংহোমে যে কোথাও ত্রুটি নেই তার প্রমাণ আমার কাছে আছে।’’ একইসঙ্গে তাঁর সংযোজন, ‘‘স্বাস্থ্য দফতরের প্রতিনিধিরা সঠিকভাবে আইন জানেন না। আইন অনুযায়ী নার্সিংহোমের লাইসেন্স যাঁরা দেয়, তাঁরাও নার্সিংহোমে হানা দিলে আগাম জানাতে হয়।”