চিকিৎসাধীন: হাসপাতালে অচিন্ত্য। নিজস্ব চিত্র
একটি মাছ চুরির অভিযোগ তুলে কোপানো হল দুই যুবক ও তাঁদের মাকে। পুলিশ জানিয়েছে, অচিন্ত্য নায়েক ও শ্রীমন্ত নায়েক নামে জখম দুই যুবক আশঙ্কাজনক অবস্থায় নয়াগ্রাম সুপার স্পেশ্যালিটি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। শনিবার নয়াগ্রাম থানার কাণ্ডঘষা গ্রামের এই ঘটনায় আবার নাম জড়িয়েছে শাসক তৃণমূলের। অভিযুক্ত ও আক্রান্ত উভয় পক্ষই তৃণমূল সমর্থক বলে পরিচিত। থানায় পাঁচ জনের বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগ হলেও রবিবার বিকেল পর্যন্ত কাউকে গ্রেফতার করতে পারেনি পুলিশ।
জানা গিয়েছে, শনিবার বিকেলে স্থানীয় খুদমরাই গ্রামে একটি যৌথ মালিকানাধীন পুকুরে মাছ ধরছিলেন স্থানীয় কয়েকজন জেলে। কাণ্ডঘষা গ্রামের বছর পঁচিশের অচিন্ত্যও সেখানে হাজির ছিলেন। পরে মাছ গোনার সময় হিসেবে একটি মাছ কম কম হয় বলে স্থানীয়দের দাবি। ততক্ষণে অচিন্ত্য বাড়ি চলে গিয়েছেন। মাছ চুরির অভিযোগ তুলে তাঁর বাড়িতে চড়াও হন কয়েকজন। দু’পক্ষের মধ্যে গোলমাল শুরু হয়।
হামলাকারীদের টাঙির কোপে অচিন্ত্য গুরুতর আহত হন। তাঁকে বাঁচাতে গিয়ে জখম হন তাঁর দাদা শ্রীমন্ত ও মা মঞ্জুদেবী। মঞ্জুদেবীকে প্রাথমিক চিকিৎসার পরে ছেড়ে দেওয়া হলেও তাঁর দুই ছেলের অবস্থা আশঙ্কাজনক। এ দিন মঞ্জুদেবী বলেন, “মিথ্যা অপবাদ দিয়ে বাড়িতে ঢুকে স্থানীয় কিছু লোকজন আমাদের মারধর করে। টাঙি দিয়ে দুই ছেলের মাথায় কোপানো হয়।” অচিন্ত্যর বাবা খাঁদু নায়েক স্থানীয় পাঁচজনের বিরুদ্ধে নয়াগ্রাম থানায় অভিযোগ দায়ের করেন। যদিও কেউ গ্রেফতার হয়নি।
স্থানীয় সূত্রের খবর, পুকুরটি শাসক-ঘনিষ্ঠ কিছু লোকের মালিকাধীন। অচিন্ত্যরাও তৃণমূল সমর্থক। রাজনৈতিক কারণেই প্রভাব খাটিয়ে বিষয়টি ধামাচাপা দেওয়ার চেষ্টা করছেন স্থানীয় শাসক নেতৃত্বের একাংশ, এমনই অভিযোগ বাসিন্দাদের। তৃণমূলের ঝাড়গ্রাম জেলা সাধারণ সম্পাদক উজ্জ্বল দত্ত অবশ্য অভিযুক্তদের পক্ষই নিয়েছেন। তাঁর দাবি করেছেন, “অচিন্ত্য ও তাঁর দাদা মদ্যপ অবস্থায় মাছ কেড়ে নিতে চেয়েছিলেন জেলেদের থেকে। ওঁরাই প্রথমে জেলেদের ধাক্কাধাক্কি করেন।’’ তবে অন্য পক্ষও একটু বাড়াবাড়ি করে ফেলেছেন বলে স্বীকার করেছেন তিনি। ঝাড়গ্রাম জেলার পুলিশ সুপার অভিষেক গুপ্ত বলেন, “এখনও কাউকে গ্রেফতার করা হয়নি। তদন্ত করে দেখা হচ্ছে প্রকৃত অভিযুক্ত কারা। তারপর আইন অনুযায়ী পদক্ষেপ করা হবে।”