অপহরণের অভিযোগ, তৃণমূল আর বিজেপির চাপানউতোর 

তৃণমূলের জেলা পরিষদ সদস্য মানব পড়ুয়ার অভিযোগ, সিপিএম থেকে আসা বিজেপির লোকের এলাকায় বিশৃঙ্খলা তৈরির চেষ্টা করছে। এভাবে আমাদের অঞ্চল সভাপতিকে অপহরণ করার প্রতিবাদে ওই এলাকায় ধারাবাহিক সাংগঠনিক কর্মসূচির মাধ্যমে বিজেপিকে জব্দ করব।’’

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

ভূপতিনগর শেষ আপডেট: ০৩ ডিসেম্বর ২০১৯ ০০:০১
Share:

—ফাইল চিত্র।

রাজ্যের তিনটি কেন্দ্রে বিধানসভা উপ নির্বাচনের ফল প্রকাশের পর থেকে বিজেপি এবং শাসক দলের মধ্যে লাগাতার চাপান উতোর থেকে কয়েক জায়গায় সংঘর্ষের ঘটনাও ঘটেছে।

Advertisement

রবিবার রাতে ভগবানপুর-২ ব্লকের ইটাবেড়িয়া গ্রাম পঞ্চায়েতের পাঁচঘরি গ্রামে উত্তেজনা ছড়ায়। সেখানকার অঞ্চল তৃণমূল সভাপতি কালিপদ বর্মনকে অপহরণ করে স্থানীয় একটি স্কুলে আটকে রাখা হয় বলে শাসক দলের অভিযোগ। পরে খবর পেয়ে রাতেই ভূপতিনগর থানা থেকে বিরাট পুলিশ বাহিনী গিয়ে ওই তৃণমূল নেতাকে উদ্ধার করে নিয়ে যায়। এ ব্যাপারে ভূপতিনগর থানায় লিখিত অভিযোগদায়ের করেছে শাসক দলের অঞ্চল নেতৃত্ব। যদিও, শাসকদলের হাতে তাদের দলের দুই কর্মী আক্রান্ত বলে পাল্টা দাবি বিজেপি নেতৃত্বের। বুদ্ধদেব মালাকার এবং শুভজিৎ সাহু নামে ওই দুই বিজেপি কর্মী এগরা মহকুমা হাসপাতালে চিকিৎসাধীন।

পাল্টা খেজুরিতে সংখ্যালঘু মোর্চার মণ্ডল সভাপতির বাবাকে বাড়ি থেকে তুলে নিয়ে যাওয়ার অভিযোগ তুললেন বিজেপি নেতৃত্ব। শেখ সিরাজ নামে ওই বিজেপি নেতার বাবাকে দলের কর্মীরাই উদ্ধার করে নিয়ে আসে বিজেপি নেতৃত্বের দাবি।

Advertisement

রবিবার সন্ধ্যায় ইটাবেড়িয়া পঞ্চায়েতের পাঁচঘরি এবং পচহরি গ্রামে তৃণমূল এবং বিজেপি কর্মীদের মধ্যে বচসা ও সংঘর্ষ হয়। সেখানকার অঞ্চল তৃণমূলের কার্যকরী সভাপতি নিতাই ভুঁইয়ার অভিযোগ, ‘‘স্থানীয় বড়বড়িয়া গ্রামে জেলা তৃণমূল সভাপতি শিশির অধিকারীর সভার পর থেকে তৃণমূলের কর্মীদের অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করছিল বিজেপির লোকজন। খবর পেয়ে আমরা গিয়েছিলাম এলাকায়। কিন্তু অঞ্চল সভাপতি কালিপদকে বিজেপির লোকেরা স্থানীয় একটি স্কুলে নিয়ে গিয়ে আটকে রাখে।’’ খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে গিয়ে ওই তৃণমূল নেতাকে উদ্ধার করে পুলিশ থানায় নিয়ে যায়।

বিজেপি নেতা প্রশান্ত পন্ডার অভিযোগ, ‘‘কাটমানি ইস্যুতে এলাকার বাসিন্দারা অঞ্চল তৃণমূল সভাপতিকে ঘিরে বিক্ষোভ দেখাচ্ছিল। সে সময় তৃণমূলেরই একাংশ তাকে তুলে নিয়ে গিয়ে আটকে রেখেছিল। বরং পুলিশের উপস্থিতিতে তৃণমূলের লোকজন আমাদের দলের বেশ কয়েকজন কর্মীর বাড়িতে চড়াও হয়। আমাদের দুজন কর্মী জখম হয়ে হাসপাতালে ভর্তি।’’

রবিবার রাতে খেজুরি-১ ব্লকের কুলঠ্যা গ্রামে সংখ্যালঘু মোর্চার মণ্ডল সভাপতি শেখ মইবুলের অভিযোগ, বাড়ি থেকেই বাবাকে ডেকে নিয়ে গিয়েছিল অঞ্চল তৃণমূলের এক নেতা। তারপর তাঁকে স্থানীয় মিয়ামোড়ে তৃণমূলের কার্যালয়ে আটকে রাখা হয়। পরে বাড়ির লোকজন গিয়ে বাবাকে উদ্ধার করে আনে। হেঁড়িয়া তদন্ত কেন্দ্র এবং খেজুরি থানায় লিখিত অভিযোগ জানাতে গেলে পুলিশ অভিযোগ নিতে অস্বীকার করে। যদিও অপহরণের অভিযোগ অস্বীকার করেছে শাসক দল।

তৃণমূলের জেলা পরিষদ সদস্য মানব পড়ুয়ার অভিযোগ, সিপিএম থেকে আসা বিজেপির লোকের এলাকায় বিশৃঙ্খলা তৈরির চেষ্টা করছে। এভাবে আমাদের অঞ্চল সভাপতিকে অপহরণ করার প্রতিবাদে ওই এলাকায় ধারাবাহিক সাংগঠনিক কর্মসূচির মাধ্যমে বিজেপিকে জব্দ করব।’’

যদিও অপহরণের অভিযোগ অস্বীকার করে বিজেপির জেলা সভাপতি (কাঁথি) অনুপ চক্রবর্তী বলেন, ‘‘উপ-নির্বাচনে জিতে জেলাজুড়ে অত্যাচার চালাচ্ছে তৃণমূল।’’

কাঁথির এসডিপিও অভিষেক চক্রবর্তীর বক্তব্য, এলাকায় গোলমালের খবর পেয়ে সেখান থেকে অঞ্চল তৃণমূল সভাপতিকে পুলিশ উদ্ধার করে আনে। এ ব্যাপারে ভূপতি নগর থানায় অভিযোগ জমা পড়েছে। তবে পরিস্থিতি এখন নিয়ন্ত্রণে। গতকাল ঠিক কী হয়েছিল তদন্ত করে দেখা হচ্ছে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন