নদিয়ায় প্রশাসনিক সভা থেকে বৃহস্পতিবার রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় কেন্দ্রীয় সরকারের ‘আয়ুষ্মান ভারত’ প্রকল্প ছেড়ে দেওয়ার কথা জানিয়েছিলেন। ওই প্রকল্পে উপভোক্তাদের বাড়ি বাড়ি প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর ছবি সম্বলিত স্বাস্থ্যবিমার কার্ড পৌঁছনোর বিরুদ্ধে তোপ দেগেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী। এমন পরিস্থিতিতে রাজ্যে ওই স্বাস্থ্য প্রকল্পের (আয়ুষ্মান ভারত) কার্ড বিলি হবে কিনা সেই প্রশ্ন উঠেছে। যদিও বৃহস্পতিবার থেকে পূর্ব মেদিনীপুরে ডাক বিভাগের মাধ্যমে অনেক উপভোক্তার হাতে ওই কার্ড পৌঁছতে শুরু করেছে বলে জানা গিয়েছে।
ডাক বিভাগ সূত্রে খবর, পূর্ব মেদিনীপুর জেলার ডাক বিভাগের তমলুক ও কাঁথি দু’টি ডিভিশন রয়েছে। তমলুক ডিভিশনের মধ্যে তমলুক ও হলদিয়া মহকুমার অধিকাংশ এবং কাঁথি ডিভিশনের মধ্যে কাঁথি ও এগরা মহকুমার অধিকাংশ এলাকা রয়েছে। তমলুক ও কাঁথি দুই প্রধান ডাকঘরে কয়েকদিন আগে প্রথম পর্যায়ের উপভোক্তাদের হাতে পৌঁছে দেওয়ার জন্য ওই কার্ড পৌঁছে গিয়েছে। বৃহস্পতিবার থেকেই তমলুক ও কাঁথি এলাকায় এই কার্ড পৌঁছনো শুরু হয়েছে। তমলুক শহরে বহু উপভোক্তাকে কার্ড পৌঁছে দেওয়া হয় বলে জানা গিয়েছে। শহরের আবাসবাড়ির বাসিন্দা সমর মাজি বৃহস্পতিবার আয়ুষ্মান ভারত কার্ড হাতে পান। চা-খাবারের দোকান চালানো সমরবাবু বলেন, ‘‘বছর দুয়েক আগে আমার পরিবারের জন্য রাজ্য সরকারের দেওয়া ‘স্বাস্থ্যসাথী’ কার্ড পেয়েছিলাম। বৃহস্পতিবার ডাক কর্মী ‘আয়ুস্মান ভারত কার্ড’ বাড়িতে দিয়ে এসেছে। ফলে এখন চিকিৎসার প্রয়োজনে কোন কার্ড ব্যবহার করব তাও বুঝতে পারছি না।’’
শহরের ৬ নম্বর ওয়ার্ডের পদুমবসান এলাকার বাসিন্দা অরূপ অধিকারীর পরিবারও আয়ুষ্মান ভারত কার্ড পেয়েছেন। পুরসভার অফিসের কাছে চায়ের দোকান চালান অরূপবাবু। তিনি বলেন, ‘‘আমার পরিবারের স্বাস্থ্যসাথী কার্ড ছিল না। বৃহস্পতিবার প্রধানমন্ত্রীর ছবি দেওয়া ‘আয়ুষ্মান ভারত’ কার্ড পেয়েছি। ওই কার্ড ব্যবহার করে ৫ লক্ষ টাকা পর্যন্ত চিকিৎসা করা যাবে বলে লেখা রয়েছে। কিন্তু ওই কার্ড নিয়ে ইতিমধ্যেই বিতর্ক তৈরি হয়েছে। তাই ওই কার্ড ব্যবহার করে করে থেকে চিকিৎসার সুযোগ পাওয়া যাবে তা নিয়ে সংশয় রয়েছে।’’
ডাক বিভাগ সূত্রে খবর, তমলুক প্রধান ডাকঘরের আওতাধীন এলাকার উপভোক্তাদের জন্য প্রথম দফায় প্রায় ৯০ হাজার ও কাঁথি প্রধান ডাকঘরের আওতাধীন এলাকার জন্য প্রায় ১৮ হাজার ‘আয়ুষ্মান ভারত’ কার্ড এসেছে। ওই কার্ড অনেক উপভোক্তাকে পৌঁছে দেওয়া হলেও তা নিয়ে মন্তব্য করতে নারাজ তমলুক প্রধান ডাকঘরের পোস্টমাস্টার অনুপ ভক্তা। ডাকবিভাগের তমলুক ডিভিশনের সুপারিন্টেন্ডেন্ট রামেন্দ্রসুন্দর কর্মকার বলেন, ‘‘ও ব্যাপারে আমার বলার কিছু নেই।’’