সাদ্দামের সঙ্গে ছবিতে প্রশ্ন
Suvendu Adhikari

মোদী-আসারাম প্রসঙ্গ টেনে পাল্টা শুভেন্দুর

ধৃত শেখ সাদ্দামের ফেসবুক প্রোফাইলে শুভেন্দু অধিকারীর সঙ্গে তার কিছু ছবি নিয়ে আসরে নেমেছে বিজেপি।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

মেচেদা  শেষ আপডেট: ২৯ ফেব্রুয়ারি ২০২০ ০১:৩২
Share:

নমস্তে: মেচেদায় দলের সভায় শুভেন্দু অভিকারী। শুক্রবার। নিজস্ব চিত্র

হলদিয়া মা ও মেয়েকে পুড়িয়ে মারার ঘটনায় ধৃত শেখ সাদ্দামের সঙ্গে তাঁর ছবি নিয়ে ইতিমধ্যেই মাঠে নেমে পড়েছে বিজেপি। শুক্রবার তা নিয়ে যখন তমলুক শহরে দলের তরফে লকেট, সায়ন্তনরা শাসক দলকে কাঠগড়ায় তুলছেন, তখন মেচেদায় দলের জনসভা থেকে বিজেপির সেই অভিযোগের বিরুদ্ধে মুখ খুললেন মন্ত্রী শুভেন্দু অধিকারী।

Advertisement

ধৃত শেখ সাদ্দামের ফেসবুক প্রোফাইলে শুভেন্দু অধিকারীর সঙ্গে তার কিছু ছবি নিয়ে আসরে নেমেছে বিজেপি। দলের রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষের অভিযোগ, ‘‘শুভেন্দুর ছত্রচ্ছায়াতেই সাদ্দাম বেপরোয়া হয়ে ওঠে। গত লোকসভা ভোটে হলদিয়ায় ইভিএম ছিনতাইয়ের চেষ্টার অভিযোগে সে ধরা পড়লেও শাসক ঘনিষ্ঠ হওয়ায় সে জামিন পেয়ে যায়।’’

এদিন জনসভা থেকে বিজেপির সেই অভিযোগের জবাবে শুভেন্দু বলেন, ‘‘আমি পুলিশের ঘেরাটোপে থাকি না। মানুষের মধ্যে থাকি। আমার পিছনে দাঁড়িয়ে কেউ ছবি তুলে নিতে পারে। সেই ছবি ছড়িয়ে তৃণমূলকে কালিমালিপ্ত করা যাবে না।’’ তাঁর পাল্টা মন্তব্য, ‘‘আমি যদি বলি ভারতবর্ষের প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে আসারাম বাপু, রাম রহিমের ছবি কেন? জ্যোতিবাবুর সঙ্গে আসানসোলের কয়লা মাফিয়া কালে সিংহের ছবি উঠেছিল কেন? তা হলে জ্যোতিবাবু কি কয়লা মাফিয়া ছিলেন?’’

Advertisement

হলদিয়ার ঘটনা নিয়ে বিজেপির মাঠে নামার পাল্টা হিসাবে এদিন দিল্লির হিংসার প্রসঙ্গ তুলে ধরেন পরিবহণ মন্ত্রী। শুভেন্দু বলেন, ‘‘একটা সরকারের কাজ বিভাজন সৃষ্টি করা নয়। সকলের খাদ্য, বাসস্থান ও কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করা। কেন্দ্রের জনবিরোধী নীতির প্রভাব দেখা গিয়েছে ঝাড়খণ্ড ও দিল্লির নির্বাচনে।’’

কেন্দ্রীয় সরকারের জনবিরোধী নীতির প্রতিবাদে এদিন সভা হলেও শুভেন্দুর বক্তব্যের সিংহভাগ জুড়ে ছিল হলদিয়া ও কোলাঘাট প্রসঙ্গ। কোলাঘাট তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রের এক আধিকারিককে মারধরে নাম জড়ায় শহিদ মাতঙ্গিনী পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি ও তৃণমূল নেতা দিবাকর জানার। দিবাকর থানায় আত্মসমর্পণ করেন ও গ্রেফতার হন। বেশ কিছুদিন জেল খাটার পর এখন তিনি জামিনে মুক্ত। ওই ঘটনায় দল সাসপেন্ড করে দিবাকরকে। তবে এ দিন দিবাকরের স্ত্রী তথা পূর্ব মেদিনীপুর জেলা পরিষদ সদস্য তনুশ্রী জানা বেশ দিবাকর অনুগামীদের নিয়ে মিছিল করে আসেন সভাস্থলে। বৃহস্পতিবার সকালে মেচেদা বাসস্ট্যান্ড এলাকায় দিবাকরের বিরোধী গোষ্ঠীর কয়েকজন নেতার বিরুদ্ধে কাটমানি পোস্টার পড়ে। ‘জন জাগরণ’ নাম দেওয়া পোস্টারগুলি যে দিবাকরের অনুগামীদেরই কাজ বলে তৃণমূলের একাংশের ধারণা। এদিন তা নিয়ে দিবাকরের নাম না করে শুভেন্দু বলেন, ‘‘কম্পিউটারে কয়েকটা পোস্টার ছাপিয়ে দিলে দলের পুরনো কর্মীদের অসৎ সাজানো যাবে না। যারা এই সব পোস্টার দেওয়ার কাজ করছে তাদের জন্মের আগে থেকে এখানকার পুরনো কর্মীরা রাজনীতি করেন।’’ শুভেন্দুর এই মন্তব্যের সময় দেখা যায় দিবাকরের স্ত্রী ও তাঁর অনুগামীরা মাথা নীচু করে আছেন। পরে শুভেন্দু বলেন, ‘‘তৃণমূলের কোনও নেতা অন্যায় করলে আমরা শাস্তি দিই। কোলাঘাটে যে ঘটনা ঘটেছে আমরা সমর্থন করিনি। আমরা ধরতেও বলিনি, ছাড়তেও বলিনি। আইন আইনের পথে হেঁটেছে। এখানকার পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি আত্মসমর্পণ করে গ্রেফতার হয়েছেন। এটাই বিরোধীদের সঙ্গে তৃণমূলের তফাৎ।’’

মন্ত্রীর এমন কথার পর উল্লাসে ফেটে পড়েন দিবাকর অনুগামীরা। যা দেখে দেলের একাংশের ব্যাখ্যা, দলীয় অনুশাসনের কথা বলে দিবাকরের প্রতি শুভেন্দুর এটা আসলে শুদ্ধিকরণের বার্তা।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন