—ফাইল চিত্র।
ভিন্ রাজ্যের যোগ ছাড়াই রেলশহরে ছড়াচ্ছে করোনা সংক্রমণ। আশঙ্কা সত্যি করে ২০ জনের অমীমাংসিত রিপোর্টের মধ্যে থেকে একসঙ্গে পজ়িটিভ হলেন ৪জন।
আনলক-২ পর্বের প্রথম দিন, বুধবার রাতেই ওই ৪জন করোনা আক্রান্তের কথা জানা যায়। তার মধ্যে ৩জন ৬ নম্বর ওয়ার্ডের ভবানীপুরের বাসিন্দা। বাকি একজন ৪নম্বর ওয়ার্ডের পাঁচবেড়িয়ার বাসিন্দা। মঙ্গলবার রাতে তাঁদের লালারসের নমুনা পরীক্ষার রিপোর্ট অমীমাংসিত এসেছিল। ভবানীপুরের তিনজন করোনা আক্রান্ত এলাকারই আর এক সংক্রমিত যুবকের সংস্পর্শে এসেছিলেন। গত রবিবার রাতে ওই যুবক করোনা আক্রান্ত জানার পরে তাঁর সংস্পর্শে থাকা অনেকের নমুনা সংগ্রহ হয়। যুবকের শ্বশুর, পড়শি ও বাড়ির এক রাজমিস্ত্রি পজ়িটিভ বলে জানা গিয়েছে। ওই রাজমিস্ত্রির বাড়ি মুর্শিদাবাদে। আনলক-১ পর্বে তিনি মুর্শিদাবাদ থেকে এসে ওই যুবকের বাড়িতে কাজ করছিলেন। আর পাঁচবেড়িয়ায় আক্রান্ত হয়েছেন এক রিকশা চালক। উপসর্গ নিয়ে তিনি কোয়াক ডাক্তারের কাছে গিয়েছিলেন। শহরে গত কয়েকদিন ধরে কোয়াক ডাক্তারদের মাধ্যমে যে সমীক্ষা চলছে, তাতেই সোমবার এই রিকশা চালকের নমুনা পরীক্ষা হয়। খড়্গপুর মহকুমা হাসপাতালের সুপার কৃষ্ণেন্দু মুখোপাধ্যায় বলেন, “যে ২০ জনের রিপোর্ট অমীমাংসিত এসেছিল তাতে ৪-৫জন আক্রান্ত হবে বলে আশঙ্কা করেছিলাম। সেটাই সত্যি হয়েছে। আমরা তাই চেষ্টা করছি আরও বেশি নমুনা সংগ্রহ করে সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণ করার। কিন্তু অধিকাংশই উপসর্গহীন হওয়ায় উদ্বেগ থাকছেই।”
পাঁচবেড়িয়া লাগোয়া ৪, ৫ ও ৬ নম্বর ওয়ার্ড থেকেই শহরের ৫০ শতাংশ করোনা আক্রান্তের সন্ধান মিলেছে। করোনা আক্রান্তের মৃত্যুর ৫০ শতাংশও ঘটেছে ৪ ও ৫ নম্বর ওয়ার্ডেই। চিন্তা বাড়াচ্ছে অমীমাংসিত রিপোর্ট। প্রতি পাঁচ অমীমাংসিত রিপোর্টে একজন পজ়িটিভ হচ্ছেন। এর আগে ১৫জনের অমীমাংসিত রিপোর্ট থেকে পাঁচবেড়িয়ায় ৩জন পজ়িটিভ হয়েছিলেন। স্বাস্থ্যকর্তাদের ব্যাখ্যা, মূলত ৫জনের একসঙ্গে পুল টেস্ট করায় এমন রিপোর্ট আসছে। জেলার অতিরিক্ত মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক দেবাশিস পাল অবশ্য বলেন, “এখনই ভয়ের কারণ নেই। বিক্ষিপ্তভাবেই করোনা দেখা দিচ্ছে। পাঁচবেড়িয়া সংলগ্ন এলাকায় নমুনা সংগ্রহের হার বেশি হওয়ায় আক্রান্তের হারও বেশি।”
তাই পরীক্ষা বাড়ানোর দাবি উঠছে। সুভাষপল্লির বাসিন্দা শুভাশিস ঘোষ বলেন, “পাঁচবেড়িয়ায় বেশি পরীক্ষা হচ্ছে বলে আক্রান্তের হদিশ পাওয়া যাচ্ছে। অন্যত্রও দ্রুত নমুনা সংগ্রহ প্রয়োজন।” খড়্গপুরের মহকুমাশাসক বৈভব চৌধুরী জানান, গোটা শহরেই র্যান্ডম নমুনা সংগ্রহ হবে। তবে এখন যেখানে আক্রান্ত পাওয়া যাচ্ছে সেখানে নমুনা সংগ্রহে জোর দেওয়া হচ্ছে।