Coronavirus

থমকে সোনা, তামার হাব

জমানো টাকাই ভরসা। কাজে ফিরতে চান স্বর্ণশিল্পীরা। শুনল আনন্দবাজারসোনার কাজে যুক্ত অনেকেই মনে করিয়ে দিয়েছেন, করোনা পরিস্থিতির আগেও স্বর্ণশিল্পে বিপর্যয় এসেছে বারবার।

Advertisement

অভিজিৎ চক্রবর্তী

ঘাটাল শেষ আপডেট: ০১ সেপ্টেম্বর ২০২০ ০০:৪৪
Share:

পশ্চিম মেদিনীপুরের ঘাটাল-দাসপুর সোনা তালুক হিসেবেই পরিচিত। তবে সেটা একানকার শিল্পীদের ভিন্ রাজ্যে কাজের সূত্রে। এলাকার বহু ছেলে-বুড়ো বংশ পরম্পরায় সোনার কাজ করছেন। তবু তাঁদের আটকে রাখতে জেলাতেই সোনার কাজের বন্দোবস্ত চার দশকেও করা যায়নি।

Advertisement

সোনার কাজে যুক্ত অনেকেই মনে করিয়ে দিয়েছেন, করোনা পরিস্থিতির আগেও স্বর্ণশিল্পে বিপর্যয় এসেছে বারবার। ২০০৮ সালে বিশ্বজুড়ে আর্থিক মন্দার সময় এই শিল্পে জোর ধাক্কা লাগে। ২০১৬ সালে নোটবন্দির সময় ঘাটাল-দাসপুরের একটা বড় অংশের স্বর্ণশিল্পী কর্মস্থল ছেড়ে গ্রামে ফিরেছিলেন। এখন আবার করোনার জেরে ঘনিয়েছে আঁধার।

অথচ এলাকার স্বর্ণশিল্পীরা যাতে এলাকাতেই কাজের সুযোগ পান, সেই লক্ষ্যে দাসপুরে সোনার হাব গড়ার পরিকল্পনা হয়েছিল। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ই এই ঘোষণা করেছিলেন। পরে বিকল্প কর্মসংস্থান হিসাবে তামার হাব তৈরির কাজ শুরু হয়েছিল। তবে বিকল্প কোনও কিছুই বাস্তবায়িত হয়নি। করোনা পরিস্থিতির আগে জেলায় স্বর্ণশিল্পীদের কোনও হিসেবও নথিভুক্ত ছিল না। এই সঙ্কটে স্বর্ণশিল্পীদের সেই তথ্য ভাণ্ডার তৈরি হয়েছে। কে, কোন কাজে যুক্ত তা-ও নথিভুক্ত করা হয়েছে। বিকল্প কাজের সুযোগ তৈরি হলে শ্রমিকদের সেখানে নিয়োগ করার আলোচনা হচ্ছে।

Advertisement

অথচ ভোট প্রচারে এসে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় দাসপুরে সোনার হাব গড়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন। সেখানে প্রশিক্ষণ এবং বাজার— দুইয়ের সুবিধে থাকবে বলেই ঘোষণা হয়েছিল। ২০১৬ সালে নোটবন্দির পরে কাজ হারানো শিল্পী-কারিগরদের কথা ভেবে সোনাখালি ব্লকে তামার হাব তৈরির প্রক্রিয়াও শুরু হয়। কিন্তু কয়েক জনকে প্রশিক্ষণ ও জমি চিহ্নিত আর কাজ এগোয়নি।

মুম্বই স্বর্ণশিল্পী সংগঠনের পক্ষে কালীদাস সিংহ রায়, চেন্নাই স্বর্ণশিল্পী সংগঠনের পক্ষে আমজেদ আলিরা বলছেন, “ঘাটাল-দাসপুরে জুয়েলারি হাব তৈরি জরুরি। যেখানে উৎপাদন ক্ষেত্র ও বাজার, দুইই থাকবে। সংগঠনের তরফে থেকে প্রশাসনকে বহুবার বলা হয়েছে।” দিল্লির স্বর্ণকার সঙ্ঘের রবীন্দ্রনাথ হাইতেরও বক্তব্য, “ঘাটাল-দাসপুরের শিল্পীরা এখন তাঁরা বসে রয়েছেন। এলাকায় বিকল্প সুযোগ থাকলে ভিন্ রাজ্যের জন্য অপেক্ষা করতে হত না কারিগরদের।”

সোনা-তামার হাব নিয়ে প্রশাসনের তরফে নির্দিষ্ট প্রতিশ্রুতি মিলছে না। তবে পশ্চিম মেদিনীপুর জেলা পরিষদের সহ-সভাধিপতি অজিত মাইতি বলেন, “দাসপুরে তামার হাবের প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। সোনার হাবের বিষয়টি মুখ্যমন্ত্রীর মাথায় রয়েছে।” (শেষ)

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন