Coronavirus

পুরনো সূত্রেই আক্রাম্ত আরও ৬

তমলুকে করোনা আক্রান্ত বৃদ্ধের পরিবারের আরও চার সদস্যর করোনা আক্রান্তের রিপোর্ট দিয়েছে রাজ্য স্বাস্থ্য দফতর।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

তমলুক ও হলদিয়া শেষ আপডেট: ০৬ এপ্রিল ২০২০ ০৯:৪২
Share:

করা হচ্ছে জীবাণুনাশক স্প্রে। তমলুকের বল্লুক এলাকায়। নিজস্ব চিত্র

জেলায় নতুন করে আর ও ৬ জনের শরীরে করোনা সংক্রমণের খোঁজ মিলেছে বলে পূর্ব মেদিনীপুর স্বাস্থ্য দফতর সূত্রে জানানো হয়েছে। এঁদের মধ্যে দু’জন হলদিয়ার ও চারজন তমলুকের বাসিন্দা।

Advertisement

তমলুকে করোনা আক্রান্ত বৃদ্ধের পরিবারের আরও চার সদস্যর করোনা আক্রান্তের রিপোর্ট দিয়েছে রাজ্য স্বাস্থ্য দফতর। শহিদ মাতঙ্গিনী ব্লকের বাসিন্দা ওই বৃদ্ধের পরিবারের ১২ জন সদস্যকে আগেই পাঁশকুড়া সুপার স্পেশ্যালিটি হাসপাতালে আইসোলেশনে রাখা হয়েছিল। তাঁরা আক্রান্ত কিনা তা পরীক্ষার জন্য গত শুক্রবার নমুনা সংগ্রহ কলকাতায় পাঠানো হয়েছিল। শনিবার রাতে রাজ্য স্বাস্থ্য দফতর থেকে দেওয়া রিপোর্টে জানানো হয়েছে বৃদ্ধের পরিবারের চার সদস্য করোনায় আক্রান্ত। তবে বাকি ৮ জনের রিপোর্ট নেগেটিভ এসেছে। অর্থাৎ তাঁরা করোনায় আক্রান্ত নন।

জেলা স্বাস্থ্য দফতর ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, বৃদ্ধের ছেলে, ভাইয়ের স্ত্রী এবং দুই ভাইপো করোনায় আক্রান্ত। এঁদের সকলকে রবিবার সকালে পাঁশকুড়া সুপার স্পেশ্যালিটি হাসপাতাল থেকে পাঁশকুড়া মেচগ্রামে করোনা হাসপাতালে স্থানান্তরিত করা হয়েছে। প্রসঙ্গত, তমলুকের ওই বৃদ্ধের পানের ব্যবসা রয়েছে কলকাতার বড়বাজারে। তিনি প্রায়ই তমলুকে বাড়িতে আসতেন। বছর আশির ওই বৃদ্ধ তমলুকে বাড়িতে এসে অসুস্থ হন। প্রথমে এলাকার এক গ্রামীণ চিকিৎসক ও পরে তমলুক শহরে এক চিকিৎসকের কাছে চিকিৎসা করান। অবস্থার অবনতি হওয়ায় তাঁকে কলকাতার একটি বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সেখানে তাঁর লালারসের নমুনা সংগ্রহ করে পরীক্ষার পর জানা যায় তিনি করোনায় আক্রান্ত। বর্তমানে ওই বৃদ্ধ বেসরকারি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন।

Advertisement

তমলুকের পাশাপাশি হলদিয়ায় শনিবার আরও দুই ব্যক্তির শরীরে করোনাভাইরাস কোভিড ১৯ পরীক্ষার রিপোর্ট পজিটিভ পাওয়া গিয়েছে। তাঁদের মধ্যে রয়েছেন দিল্লির ধর্মীয় সম্মেলন ফেরত এক যুবকও। ২৩ মার্চ ওই যুবক দিল্লি থেকে হলদিয়ায় নিজের বাড়িতে ফেরেন। ২৪ মার্চ স্বাস্থ্যপরীক্ষা করার পর হলদিয়া মহকুমা হাসপাতালের চিকিৎসকরা তাঁকে হোম কোয়রান্টিনে থাকার পরামর্শ দেন। চিকিৎসকদের পরামর্শ মেনেই ওই যুবক হোম কোয়রান্টিনে ছিলেন। গত ২ এপ্রিল পুলিশ ও স্বাস্থ্য দফতরের আধিকারিকরা জানতে পারেন এই যুবক দিল্লির ধর্মীয় সম্মেলনে গিয়েছিলেন। সেদিনই তাঁকে হলদিয়া মহকুমা হাসপাতালের আইসোলেশন ওয়ার্ডে ভর্তি করা হয়। ৩ এপ্রিল দেহের নমুনা সংগ্রহ করে পরীক্ষার জন্য কলকাতায় পাঠানো হয়েছিল। শনিবার রাতে তাঁর শরীরে করোনা পজিটিভের রিপোর্ট পাওয়া যায়। অন্যদিকে করোনা পজিটিভ রিপোর্ট পাওয়া গিয়েছে করোনায় আক্রান্ত হাতুড়ের স্ত্রীরও। দু’জনকেই পাঁশকুড়ার মেচগ্রামের করোনা হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।

প্রসঙ্গত ওই হাতুড়ে গত ২৯ মার্চ শ্বাসকষ্ট নিয়ে তমলুকের একটি বেসরকারি নার্সিংহোমে দেখাতে যান সেখান থেকে তাঁকে কলকাতায় রেফার করা হয়। ৩১ মার্চ তিনি কলকাতার একটি বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি হয়। সেখানে ২ এপ্রিল তাঁর করোন সংক্রমণ ধরা পড়ে। এর পরই জেলা স্বাস্ত্য দফতর ওই হাতুড়ের পরিবারের ৮ জন এবং দুই অ্যাম্বুল্যান্স চালককে হলদিয়া মহকুমা হাসপাতালে আইসোলেশনে রাখে। সেখানেই পরীক্ষায় হাতুড়ের স্ত্রীর শরীরে করোনা পজিটিভ ধরা পড়ে। অন্যদের পরীক্ষায় করোনা সংক্রমণ ধরা না পড়ায় তাঁদের ছেড়ে দেওয়া হয়েছে। এ দিকে দিল্লি ফেরত ওই যুবকের পরিবারের সদস্যদের হলদিয়া মহকুমা হাসপাতালে আইসোলেশন ওয়ার্ডে ভর্তি করা হয়েছে।

পূর্ব মেদিনীপুরের মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক নিতাইচন্দ্র মণ্ডল বলেন, ‘‘তমলুকের বৃদ্ধের করোনা আক্রান্ত যোগে তাঁর পরিবারের আরও চার সদস্য ও হলদিয়ার দুই বাসিন্দা করোনা আক্রান্ত বলে রিপোর্ট পাওয়া গিয়েছে। এঁদের সকলকে পাঁশকুড়া করোনা হাসপাতালে ভর্তি করে চিকিৎসা করা হচ্ছে।’’

তবে করোনায় আক্রান্ত বৃদ্ধের যিনি চিকিৎসা করেছিলেন সেই হাতুড়ের পরিবারের ৬ জনকে তমলুক জেলা হাসপাতালে আইসালেশনে রাখা হয়েছে। এ ছাড়া ওই হাতুড়ের কাছে চিকিৎসা করানো চারজনকে পরীক্ষার জন্য পাঁশকুড়া সুপার স্পেশ্যালিটি হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। এ দিকে বৃদ্ধের পরিবারের দু’জন পরিচারিকা, গাড়ি চালক সহ বাকি যে ৬ জন তমলুক জেলা হাসপাতালে আইসোলেশন ছিলেন তাঁদের নমুনা পরীক্ষার রিপোর্ট নেগেটিভ এসেছে বলে স্বাস্থ্য দফতর সূত্রে জানানো হয়েছে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন