ফাইল চিত্র
রবিবারের ‘জনতা কার্ফু’তে ইঙ্গিত ছিলই। তা সত্যি করে এ দিনই জানিয়ে দেওয়া হল, আজ সোমবার বিকেল থেকে আগামী শুক্রবার রাত ১২টা পর্যন্ত করোনা সুরক্ষায় এ রাজ্য জারি হচ্ছে সম্পূর্ণ নিরাপত্তা বলয় (কমপ্লিট সেফটি রেস্ট্রিকশন)। তবে আপাতত গোটা রাজ্যে নয়, মূলত জেলার প্রধান শহরগুলির জন্য এই নির্দেশিকা জারি হয়েছে। সেই মতো পশ্চিম মেদিনীপুরের জেলা সদর মেদিনীপুর, খড়্গপুর, ঘাটাল ও ঝাড়গ্রামের সদর শহর ঝাড়গ্রামে এই নিরাপত্তা বেষ্টনী থাকবে। নবান্ন সূত্রে জানা গিয়েছে, যেখানে এই বেষ্টনী থাকবে সেখানে অবশ্য অত্যাবশকীয় পণ্য ও জরুরি পরিষেবা পাওয়া যাবে।
পশ্চিম মেদিনীপুর জেলা প্রশাসনের বার্তা, আতঙ্কিত নয়, সুরক্ষিত থাকুন। যে কোনও প্রয়োজনে প্রশাসনের সাহায্য নেওয়া যেতে পারে। জরুরি কাজ ছাড়া অবশ্য বাড়ির বাইরে বেরনো যাবে না। বাইরে একসঙ্গে ৭ জন কিংবা তার বেশি জমায়েত করা যাবে না।
করোনা আতঙ্কের জেরে ক’দিন ধরেই আনাজ, মুদির সামগ্রী বেশি করে কিনে রাখার প্রবণতা তৈরি হয়েছে নানা জায়গায়। শনিবার রাত পর্যন্ত বিভিন্ন দোকানে চাল, আলু, ডিম কেনার ভিড় ছিল। এ বার সোমবার বিকেল থেকে সম্পূর্ণ নিরাপত্তা বলয় চালুর আগে ফের লাগামছাড়া ভিড়ের আশঙ্কা থাকছেই। যদিও পরিস্থিতি মোকাবিলায় সতর্ক করেছে পুলিশ-প্রশাসন। ঘাটাল মহকুমা পুলিশ আধিকারিক অগ্নীশ্বর চৌধুরী বলেন, “পরিস্থিতি বুঝে পদক্ষেপ করা হবে।’’ পুলিশ জানিয়েছে, পুর শহরের বড় দোকানগুলিতে পুলিশ ঘোরাফেরা করবে। কালাবাজারি আটকাতে থাকবে সাদা পোশাকের পুলিশ।
খড়্গপুর শহরের ইন্দার বাসিন্দা কলেজ শিক্ষিকা সোমালি নন্দী বলেন, “সরকারের এই সিদ্ধান্তকে সাধুবাদ জানাই। তবে এটা আগেই নেওয়া দরকার ছিল। আমরা যত গৃহবন্দি থাকব তত এই সংক্রমণ থেকে বাঁচা যাবে।” ব্যবসায়ী সংগঠনগুলিও এমন সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানিয়েছে। খড়্গপুর রেলওয়ে মার্চেন্ট অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি নীরজ জৈন বলেন, “আজ না হয় এটা করতেই হতো। আমরা প্রস্তুত ছিলাম। হয়তো ছোট ব্যবসায়ীদের একটু সমস্যা হল। কিন্তু আগে তো জীবন। অত্যাবশ্যকীয় পণ্য ছাড়া সব দোকান বন্ধ থাকবে। মানুষ বাজারে ভিড় না করে ঘরে থাকুন।” যদিও ব্যবসায়ীদের একাংশ জানিয়েছেন, এরফলে অনেকে সমস্যায় পড়বেন। মালঞ্চ বাজারের পোশাক ব্যবসায়ী হৃষীকেশ গোপের আশঙ্কা, ‘‘অনেক ছোট ব্যবসায়ীর সমস্যা হয়ে গেল।”
খড়্গপুর মহকুমা হাসপাতালের সুপার কৃষ্ণেন্দু মুখোপাধ্যায় বলেন, “আমাদের হাসপাতালে প্রায় ১৬ জন চিকিৎসক ও কর্মী বাইরে থেকে যাতায়াত করেন। তাঁদের হাসপাতালে আসতে হবে। কোনও অজুহাত মানা হবে না বলে জানিয়ে দেওয়া হয়েছে।” ওই চিকিৎসক-কর্মীদের শহরে থাকার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।