Coronavirus

পশ্চিমের রাজধানী যোগ বাড়ছে

প্রশাসন সূত্রের খবর, মেদিনীপুরের যে ৭ জন দিল্লির সমাবেশে যোগ দিয়েছিলেন তার মধ্যে ২ জন মেদিনীপুর গ্রামীণের রামনগরের বাসিন্দা, ৩ জন কেরানিচটির, ১ জন হোসনাবাদের এবং ১ জন মেদিনীপুর শহরের অলিগঞ্জের বাসিন্দা।

Advertisement

নিজস্ব প্রতিবেদন

শেষ আপডেট: ০৩ এপ্রিল ২০২০ ০২:১১
Share:

ছবি পিটিআই।

দিল্লির নিজামুদ্দিনের তবলিগ-ই-জামাতের সভার সঙ্গে পশ্চিম মেদিনীপুরের যোগ আরও বাড়ল।

Advertisement

বুধবারই সাতজন ইন্দোনেশীয় মৌলবি-সহ ৯ জনকে খড়্গপুর থেকে রাজারহাটে কোয়রান্টিনে পাঠানো হয়েছিল। বৃহস্পতিবার জানা গেল, জেলার আরও ১১ জন (মেদিনীপুরের সাতজন এবং ঘাটাল মহকুমার চারজন) দিল্লির ওই সভায় যোগ দিয়েছিলেন। প্রত্যেককেই কোয়রান্টিনে পাঠিয়েছে প্রশাসন। দাসপুরে একই পরিবারের দু’জনেরও একই সময়ে দিল্লি যোগ মেলায় কোয়রান্টিনে পাঠানো হয়েছে তাঁদেরও। তবে ওই দু’জন সমাবেশে যোগ দিয়েছিলেন কি না, সে বিষয়ে এখনও নিশ্চিত নয় প্রশাসন।

প্রশাসন সূত্রের খবর, মেদিনীপুরের যে ৭ জন দিল্লির সমাবেশে যোগ দিয়েছিলেন তার মধ্যে ২ জন মেদিনীপুর গ্রামীণের রামনগরের বাসিন্দা, ৩ জন কেরানিচটির, ১ জন হোসনাবাদের এবং ১ জন মেদিনীপুর শহরের অলিগঞ্জের বাসিন্দা। এঁদের মধ্যে ৪ জন ২৯ মার্চ ফিরেছিলেন। এঁদের কোয়রান্টিন সেন্টারে পাঠানো হয়েছে। ৩ জন ১২ মার্চ ফিরেছিলেন। এঁদের হোম কোয়রান্টিনে রাখা হয়েছে। ঘাটালের এক গ্রামের দু’জন দিল্লি গিয়েছিলেন। সমাবেশ সেরে ওড়িশা হয়ে তাঁরা ২৮ মার্চ ঘাটাল ফিরেন। তাঁদের চিহ্নিত করে ঘাটাল ব্লকের বীরসিংহ আইটিআই কোয়রান্টিন কেন্দ্রে পাঠানো হয়েছে। একই সাথে তাঁদের পরিবারের আরও চার সদস্যকে পাঠানো হয়েছে ওই কেন্দ্রে। চন্দ্রকোনার এক দম্পতিও নিজামুদ্দিন সমাবেশে অংশ নিয়েছিলেন। তাঁরাও ওড়িশা হয়ে চন্দ্রকোনায় আসেন। তাঁদেরকে ক্ষীরপাই ব্লকের নিচনা প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রের আইসোলেশন কেন্দ্রে পাঠানো হয়েছে। দাসপুর-২ব্লকের একই পরিবারের দু’জনেরও দিল্লি গিয়েছিলেন। তাঁরা নিজামু্দ্দিন সমাবেশে অংশ নিয়েছিলেন কিনা, তা জানা যায়নি। তবে মার্চ মাসের প্রথম সপ্তাহে তাঁরা দিল্লি গিয়েছিলেন। ২৬ মার্চ তাঁরা গ্রামের বাড়ি ফিরে আসেন।

Advertisement

এ দিন খড়্গপুর শহরের পাঁচবেড়িয়ার দু’টি মসজিদের ইমাম-সহ ৩ জনকে কোয়ারান্টিন করা হয়েছে। দুই ইমাম ছাড়া তৃতীয় ওই ব্যক্তি ইন্দোনেশিয়ার ওই মৌলবিদের জন্য খাবার ও বাজার পৌঁছে দিতেন বলে জানা গিয়েছে। গত ১৭ মার্চ থেকে ২৬ মার্চ পর্যন্ত শহরের পাঁচবেড়িয়ার দু’টি ও ইন্দার একটি মসজিদে ছিলেন ইন্দোনেশিয়ার ওই সাত মৌলবি ও তাঁদের দুই অনুবাদক। পরে তাঁরা চলে যান শহরের উপকণ্ঠে সতকুঁইয়ের মসজিদে। সেখানেই ৩১ মার্চ পর্যন্ত অবাধে ঘুরেছেন তাঁরা। এর পরে নিজামুদ্দিনের ঘটনা সামনে আসতেই পুলিশ তাঁদের কোয়রান্টিনে পাঠানোর বন্দোবস্ত করে।

৯ জনকে কোয়রান্টিনে পাঠানোর পর থেকে আতঙ্কিত এলাকাবাসী। যদিও গত ২৭মার্চ শহরের সমস্ত মসজিদে নামাজ বন্ধ থাকায় আতঙ্কের কারণ নেই বলে দাবি করেছে পুলিশ। খড়্গপুরের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার কাজী সামসুদ্দিন আহমেদ বলেন, “আমরা আগাম সতর্কতায় গত শুক্রবারের নামাজ বন্ধ করেছিলাম। তাতে মসজিদে জমায়েত না হওয়ায় সংক্রমনের সম্ভাবনা অনেক কমে গিয়েছে। তাছাড়া আমরা জানার পরেই ওই ৯জনের সংস্পর্শে সরাসরি যাঁরা এসেছিলেন তাঁদের কোয়রান্টিন করছি। আতঙ্কের কারণ নেই।”

গত শুক্রবার, ২৭ মার্চ শহরের মসজিদে নামাজ বন্ধ ছিল। ওই ৯ জন ২৭ মার্চই শহরে ছেড়েছিলেন। কিন্তু ২৬ মার্চ পর্যন্ত মসজিদগুলিতে চলা ধর্ম প্রচারে ওই ৯ জন বহু মানুষের সংস্পর্শে এসেছিলেন। শহরের পাঁচবেড়িয়ার বাসিন্দা শেখ জামশেদ বলেন, ‘‘সব জানার পর থেকে আতঙ্কে রয়েছি।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন