Coronavirus in Midnapore

পশ্চিম মেদিনীপুরে করোনায় সর্বাধিক মৃত্যু অগস্টেই

বুধবার জেলা টাস্কফোর্সের বৈঠকেও মৃত্যুর হার নিয়ে পর্যালোচনা হয়েছে বলে প্রশাসন সূত্রে খবর।

Advertisement

বরুণ দে

মেদিনীপুর শেষ আপডেট: ১১ সেপ্টেম্বর ২০২০ ০০:৪৪
Share:

প্রতীকী ছবি।

করোনা-কালের পাঁচ মাসের মধ্যে পশ্চিম মেদিনীপুরে সব থেকে বেশি করোনা আক্রান্তের মৃত্যু হয়েছে অগস্ট মাসেই। প্রশাসন সূত্রে খবর, বুধবার পর্যন্ত জেলায় করোনা আক্রান্ত ৯৩ জনের মৃত্যু হয়েছে। এর মধ্যে ৪৩ জনেরই মৃত্যু হয়েছে অগস্টে। বিষয়টি উদ্বেগের ঠেকছে অনেকের কাছে।

Advertisement

বুধবার জেলা টাস্কফোর্সের বৈঠকেও মৃত্যুর হার নিয়ে পর্যালোচনা হয়েছে বলে প্রশাসন সূত্রে খবর। ওই সূত্রের অবশ্য দাবি, জেলায় মৃত্যুর হার উদ্বেগজনক নয়। সার্বিকভাবে ২ শতাংশেরও কম। বুধবার পর্যন্ত জেলায় করোনা আক্রান্ত হয়েছেন ৫,২৬২ জন। মৃত্যু হয়েছে ৯৩ জনের। মৃত্যুর হার ১.৭ শতাংশ। জেলার শহরগুলির মধ্যে সর্বাধিক মৃত্যু হয়েছে মেদিনীপুরে, ১৬ জনের। গ্রামীণ এলাকাগুলির মধ্যে সব থেকে বেশি মৃত্যু হয়েছে দাসপুরে, ১৭ জনের।

জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক নিমাইচন্দ্র মণ্ডলের দাবি, করোনা মোকাবিলায় যাবতীয় পদক্ষেপই করা হচ্ছে। জেলার উপ-মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক সৌম্যশঙ্কর সারেঙ্গীর সংযোজন, ‘‘কোনও ছোটখাটো উপসর্গও অনেক সময়ে মারাত্মক আকার নিতে পারে। কিছু ক্ষেত্রে নিচ্ছেও। তাই কোনও অবস্থাতেই এই অতিমারি সৃষ্টিকারী ভাইরাসকে অবহেলা করা উচিত নয়।’’

Advertisement

জেলা স্বাস্থ্য দফতরের মতে, জেলায় করোনা আক্রান্ত যাঁদের মৃত্যু হয়েছে, তাঁদের অনেকেই কো-মর্বিডিটির শিকার হয়েছেন। অর্থাৎ, তাঁদের অন্য রোগও ছিল। চিকিৎসকদের একাংশ অবশ্য মানছেন, এই সময়ের মধ্যে এমন কারও কারও মৃত্যু হয়েছে, যাঁদের কো-মর্বিডিটি কম ছিল, রক্তচাপ বা ডায়াবিটিসের সমস্যাও ছিল না। জেলার এক চিকিৎসকের কথায়, ‘‘আমরা প্রতিটা কেস থেকে কিছু বিষয় ধরে নিচ্ছি। অর্থাৎ, এগুলি তত্ত্ব। তবে এ বিষয়ে প্রচুর তথ্য ও গবেষণা প্রয়োজন।’’ তিনি মনে করিয়ে দিচ্ছেন, হার্ট ব্লক বা অ্যারিদমিয়া অর্থাৎ হৃদ্‌স্পন্দনের ছন্দ বিঘ্নিত হলেও কোভিড পজ়িটিভ হতে পারে। চিকিৎসকেদের মতে, কোভিড সংক্রমণে মাইক্রোভেসেলস, অর্থাৎ শরীরের সূক্ষ্ম সূক্ষ্ম রক্তজালিকাতে রক্তের ডেলা আটকে যায়। ফলে, অক্সিজেনযুক্ত রক্তের অভাবে নানা বিপত্তি দেখা যায়। ফুসফুসে হলে শ্বাসকষ্ট, হৃদপিণ্ডে হলে হার্ট অ্যাটাক ও মস্তিষ্কে হলে স্ট্রোক হয়। চিকিৎসক সংগঠন আইএমএ-র মেদিনীপুর শাখার সম্পাদক কৃপাসিন্ধু গাঁতাইত বলেন, ‘‘করোনা আক্রান্তদের কী উপসর্গ দেখা যাবে তা কিছুটা নির্ভর করে ভাইরাল লোডের (রক্তে ভাইরাসের পরিমাণ) উপর।’’ মেদিনীপুর মেডিক্যালের অ্যাসোসিয়েট প্রফেসর তথা ফিজিশিয়ান কৃপাসিন্ধু মানছেন, ‘‘কারও কারও ক্ষেত্রে ভাইরাল লোড বেশি থাকার কারণেই করোনাভাইরাস আচমকা মারাত্মক রূপ নিচ্ছে বলে মনে হচ্ছে।’’

(জরুরি ঘোষণা: কোভিড-১৯ আক্রান্ত রোগীদের জন্য কয়েকটি বিশেষ হেল্পলাইন চালু করেছে পশ্চিমবঙ্গ সরকার। এই হেল্পলাইন নম্বরগুলিতে ফোন করলে অ্যাম্বুল্যান্স বা টেলিমেডিসিন সংক্রান্ত পরিষেবা নিয়ে সহায়তা মিলবে। পাশাপাশি থাকছে একটি সার্বিক হেল্পলাইন নম্বরও।

• সার্বিক হেল্পলাইন নম্বর: ১৮০০ ৩১৩ ৪৪৪ ২২২
• টেলিমেডিসিন সংক্রান্ত হেল্পলাইন নম্বর: ০৩৩-২৩৫৭৬০০১
• কোভিড-১৯ আক্রান্তদের অ্যাম্বুল্যান্স পরিষেবা সংক্রান্ত হেল্পলাইন নম্বর: ০৩৩-৪০৯০২৯২)

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন