Coronavirus in Midnapore

বিধিভাঙা ভিড় দশেরায়! 

খড়্গপুরের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার কাজী সামসুদ্দিন আহমেদ বলেন, “আমরা ভেবেছিলাম যে ভিড় হবে তা নিয়ন্ত্রণ করা যাবে। কিন্তু এত মানুষের ভিড় কি নিয়ন্ত্রণ করা যায়!” 

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

খড়্গপুর শেষ আপডেট: ২৮ অক্টোবর ২০২০ ০২:৪৬
Share:

ভিড় ছিল এমনই। নিজস্ব চিত্র।

শুভ শক্তির কামনায় ঐতিহ্যের রাবণ বধ ও দশেরা উৎসবে ভিড় এড়াতে নানা ব্যবস্থা করেছিল প্রশাসন। ছিল গণ্ডি কাটা, ভার্চুয়ালি ও কেবল নেটওয়ার্কে সম্প্রচারের মতো ব্যবস্থা। কিন্তু গোড়ায় ছিল গলদ। কারণ ভার্চুয়াল ব্যবস্থার সঙ্গেই সরাসরি রাবণ বধ দেখার সুযোগও রাখা ছিল। তার ফলে সোমবার দশমীর বিকেলে জেলাশাসকের উপস্থিতিতেই বিপুল জনসমাগম আছড়ে পড়ল নিউ সেটলমেন্টের রাবণ ময়দানে। শিকেয় উঠল স্বাস্থ্যবিধি।

Advertisement

এ বার করোনা আবহে পুজো ঘিরে দেখা গিয়েছে নানা নাটকীয়তা। হাইকোর্টের রায়ে পুজো মণ্ডপে প্রবেশ নিষেধ হলেও রেলশহর খড়্গপুরে নিয়ম ভাঙার নানা ছবি সামনে এসেছে। কয়েকটি মণ্ডপ চত্বরে তো মেলাও বসিয়েছিল পুজো কমিটিগুলি। মিশ্র সংস্কৃতির এই শহরে রাবণ দহন উৎসব নিয়েও চিন্তা ছিল। ভিড় ঠেকাতে নানা পদক্ষেপের কথা জানিয়েছিল দশেরা উৎসব কমিটি। কেবল টিভি, ফেসবুক ও ইউটিউবে সরাসরি সম্প্রচারের ব্যবস্থা হয়েছিল। রাবণ ময়দানে কাটা হয়েছিল গণ্ডি। দূরত্ব বিধি পালনে ভার্চুয়াল ব্যবস্থার সঙ্গে রাবণ দহনে তিরের বদলে রিমোট ব্যবহার করাও হয়েছিল। তারপরেও ঠাসা ভিড় দেখে সেখানে প্রশাসনিক আধিকারিক ও জনপ্রতিনিধিদের একাংশ ‘মানুষের আবেগ’কে সামনে রাখছেন।

দশেরা উৎসব কমিটির সভাপতি তথা বিধায়ক প্রদীপ সরকার বলছেন, “মিশ্র সংস্কৃতির শহরে এই রাবণ বধের সঙ্গে আবেগ জড়িয়ে রয়েছে। তাকে সম্মান জানাতেই ভার্চুয়ালি সমস্ত ব্যবস্থা করে মাইকে প্রচার করা হয়েছিল। কিন্তু তার পরেও কিছু মানুষ আবেগতাড়িত হয়ে খোলা মাঠে চলে এসেছিল। এই ভিড় না হলেই ভাল হত।” কেন ভিড় এড়ানো গেল না সেই প্রশ্নের সরাসরি উত্তর না দিয়ে জেলাশাসক রশ্মি কমল বলেন, “স্থানীয় প্রশাসন ও উদ্যোক্তাদের পক্ষ থেকে যথেষ্ট মাস্ক ও স্যানিটাইজ়ারের ব্যবস্থা করা হয়েছিল।”

Advertisement

প্রতিবার দশেরায় দুই মেদিনীপুর ও ঝাড়গ্রাম ছাড়াও ওড়িশা, ঝাড়খণ্ড থেকে কয়েক লক্ষ মানুষ খড়্গপুরে আসেন। করোনা পরিস্থিতিতেও যে ভিড়ের ছবি দেখতে হবে তা অনেকেই ভাবেননি। অনেকে ভিড় হবে না ভেবে চলে এসে সংক্রমিত হওয়ার আশঙ্কা নিয়ে বাড়ি ফিরেছেন। যেমন ভিড়ের মধ্যে থাকা শহরের মথুরাকাটির বাসিন্দা পি সন্তোষ বলেন, “ভিড় নিয়ন্ত্রণ হবে ভেবে এসেছিলাম। এখন তো মনে হচ্ছে করোনা নিয়ে ফিরব!”

অনুষ্ঠান মঞ্চে জেলাশাসক ছাড়াও জেলা পরিষদের সহ-সভাপতি অজিত মাইতি, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার কাজী সামসুদ্দিন আহমেদ-সহ জেলা প্রশাসনের অনেকে ছিলেন। সেখানেও অনেকের মুখে দেখা যায়নি মাস্ক। ছিল না সামাজিক দূরত্বও। অজিতের দাবি, “অন্য বারের থেকে ভিড় কম হয়েছে। পুলিশ ব্যারিকেডও করেছিল। কিন্তু মানুষের আবেগের কাছে সব হার মেনেছে।” ভিড় নিয়ন্ত্রণ করা গেল না কেন? খড়্গপুরের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার কাজী সামসুদ্দিন আহমেদ বলেন, “আমরা ভেবেছিলাম যে ভিড় হবে তা নিয়ন্ত্রণ করা যাবে। কিন্তু এত মানুষের ভিড় কি নিয়ন্ত্রণ করা যায়!”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন