Coronavirus in Midnapore

করোনার আতঙ্ক, রক্তচাপ মাপতে নারাজ হাতুড়েরা

গ্রামীণ এলাকায় হাতুড়ে চিকিৎসকদের এমন ভূমিকায় ফাঁপরে পড়েছেন রোগীরা।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কাঁথি শেষ আপডেট: ০৪ মে ২০২০ ০০:৫৭
Share:

প্রতীকী ছবি।

কেন্দ্রীয় সরকারের করোনা সংক্রমিত এলাকার তালিকায় ‘রেড জ়োন’-এ রয়েছে পূর্ব মেদিনীপুর। এরপর থেকেই করোনা সংক্রমণ ছড়িয়ে পড়ার আশঙ্কা কাবু করে ফেলেছে এঁদের। তাই গ্রামে গ্রামে ঘুরে রোগী দেখা তো কার্যত বন্ধই, পাশাপাশি একান্ত পরিচিত রোগী ছাড়া ব্লাড-প্রেসারটুকুও মাপতে চাইছেন না এলাকার হাতুড়ে চিকিৎসকেরা।

Advertisement

লকডাউন ঘোষণার পর থেকে এলাকায় এমবিবিএস চিকিৎসকদের অধিকাংশ চেম্বারই বন্ধ। ফলে গ্রামীণ এলাকায় হাতুড়ে চিকিৎসকদের এমন ভূমিকায় ফাঁপরে পড়েছেন রোগীরা। কাঁথি-৩ ব্লকের কুসুমপুর এলাকার এক বয়স্কের কথায়, ‘‘বুকে ব্যথা হচ্ছিল। শ্বাস নিতেও কষ্ট হচ্ছিল বলে স্থানীয় এক হাতুড়ে চিকিৎসকের কাছে ব্লাড-প্রেসার মাপতে গিয়েছিলাম। কিন্তু ওই চিকিৎসক প্রাথমিক ভাবে ব্লাড-প্রেসার মাপতে রাজি হননি। পরে অনেক অনুরোধ করায় হাতে জীবাণুনাশক স্প্রে করে ব্লাড-প্রেশার মেপেছিলেন।’’

খেজুরি এলাকার একাধিক হাতুড়ে চিকিৎসক জানাচ্ছেন, করোনার কারণে আপাতত গ্রামে ঘোরা বন্ধ রেখেছেন তাঁরা। চেম্বারও বন্ধ। যে সব রোগীরা বাড়ি খুঁজে পৌঁছে যাচ্ছেন, তাঁদের সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখে প্রয়োজনীয় ওষুধ দিয়ে ছেড়ে দেওয়া হচ্ছে। তবে শ্বাসকষ্ট কিংবা সর্দি-জ্বরের উপসর্গ থাকা রোগীদের দু-একদিন পর্যবেক্ষণে রাখার পরেই স্বাস্থ্য কেন্দ্রে যেতে বাধ্য করা হচ্ছে বলে রামনগর এলাকার হাতুড়ে চিকিৎসকদের দাবি। খেজুরি এলাকায় দীর্ঘদিন ধরে চিকিৎসা করেন এমন এক হাতুড়ের দাবি, ‘‘গাছ থেকে পড়ে গিয়ে জখম হয়ে একজন রোগী এসেছিলেন। তাঁকে সেলাই করা এবং ইঞ্জেকশন দেওয়ার আগে শরীরের ওই সব অংশ জীবাণুমুক্ত করার পরামর্শ দেওয়া দিই। তারপরই চিকিৎসা করি।’’

Advertisement

প্রসঙ্গত, হলদিয়াতে করোনা আক্রান্ত এক রোগীর সংস্পর্শে এসেছিলেন এক স্থানীয় হাতুড়ে চিকিৎসক। পরে তিনিও করোনা আক্রান্ত বলে পরীক্ষায় ধরা পড়ে। জানা যাচ্ছে, তারপর থেকেই গ্রামীণ এলাকায় রোগী দেখার ক্ষেত্রে বিশেষ সতর্কতা অবলম্বন করছেন তাঁরা। গোটা জেলায় প্রায় সাত হাজার হাতুড়ে চিকিৎসক রয়েছেন। ইতিমধ্যে তাঁরা ‘ভিলেজ হেল্থ অ্যাসোসিয়েশন’ নামে একটি সংগঠন তৈরি করেছে। সংগঠনের জেলা কমিটির সহ-সভাপতি রাজকুমার জানা বলেন, ‘‘করোনা পরিস্থিতিতে প্রত্যেকেরই সতর্ক থাকা উচিত। তাই খুব পরিচিত কিংবা নিয়মিত ব্লাড-প্রেসার মাপতে হয়, এ রকম রোগীদেরই কেবল ব্লাড-প্রেসার পরিমাপ করা হচ্ছে। পাশাপাশি চিকিৎসকদের বাড়িতে বসেই সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখে রোগীদের পরিষেবা দেওয়ার কথা বলা হয়েছে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন