প্রতীকী ছবি
লালারসের নমুনার পাহাড় জমছে। তাই দেরি হচ্ছে করোনা পরীক্ষার রিপোর্ট পেতে।
করোনার উপসর্গ নিয়ে হাসপাতালে ভর্তি খড়্গপুরের তরুণীর জরুরি ভিত্তিতে করোনা পরীক্ষা হয়েছিল। সে ক্ষেত্রে লালারসের নমুনা সংগ্রহের ৩৬ ঘন্টায় মিলেছিল রিপোর্ট। অবশ্য ওই তরুণী আক্রান্ত হওয়ার ৭২ঘন্টা পরেও সরাসরি সংস্পর্শে আসা পরিজনের করোনা পরীক্ষার রিপোর্ট এল না!
সোমবার পর্যন্ত রিপোর্ট না আসায় খড়্গপুরের আয়মার বাসিন্দা ওই তরুণীর পরিজনেরা চরম উদ্বেগে রয়েছেন। তরুণী কী ভাবে আক্রান্ত হয়েছেন সেই সূত্র না মেলায় উদ্বেগে রয়েছেন শহরের বাসিন্দারাও। সূত্রের খোঁজে ইতিমধ্যে তরুণীর পাড়ার সকলের করোনা পরীক্ষার সিদ্ধান্ত নিয়েছে স্বাস্থ্য দফতর। তবে এখনও সরাসরি সংস্পর্শে আসা ১৮জনের রিপোর্টই না আসায় ক্ষোভ বাড়ছে। জেলার অতিরিক্ত মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক দেবাশিস পাল বলেন, “রিপোর্ট আসতে একটু দেরি হবে। আসলে আগে থেকে অনেক নমুনা জমে থাকায় সমস্যা হচ্ছে। তবে আমরা এক্ষেত্রে একটু দ্রুত রিপোর্ট দেওয়ার আবেদন রেখেছি।”
গত ২১ মে রেল হাসপাতালে ভর্তি তরুণীর লালারসের নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছিল। জরুরি ভিত্তিতে পরদিনই রিপোর্ট আসে। তারপর শনিবার সকালে তরুণীর সরাসরি সংস্পর্শে আসা ১৮জন ও পরোক্ষ সংস্পর্শে আসা ৮জনকে নিভৃতবাস কেন্দ্রে পাঠানো হয়। শনিবারই সরাসরি সংস্পর্শে আসা ১৪জনের লালারসের নমুনা সংগ্রহ হয়। রবিবার আরও ৪জনের নমুনা সংগ্রহ হয়েছে। রিপোর্ট কবে আসবে তা নিয়ে সংশয়ে স্বাস্থ্যকর্তারা।
স্বাস্থ্য দফতর সূত্রে খবর, মেদিনীপুর মেডিক্যালে এখন পূর্ব মেদিনীপুর (নন্দীগ্রাম স্বাস্থ্য জেলা), বাঁকুড়া, পুরুলিয়া, পশ্চিম মেদিনীপুর-সহ ৭টি জেলার করোনা পরীক্ষা হচ্ছে। তাতেই দিনে প্রায় দেড় হাজার লালারসের নমুনা জমা হচ্ছে। পরিযায়ীরা ফিরে আসায় সংখ্যা বাড়ছে বলে অনুমান। এই মুহূর্তে মেদিনীপুর মেডিক্যালে শুধুমাত্র পশ্চিম মেদিনীপুরের ৫,৯০০টি লালারসের নমুনা পরীক্ষার জন্য লাইনে রয়েছে। করোনা আক্রান্ত ওই তরুণীর বাবা বলেন, “তিনদিন ধরে মেয়ে এক হাসপাতালে আর আমরা কোয়রান্টিন কেন্দ্রে পড়ে রয়েছি। মেয়ের কোনও খবর পাচ্ছি না। আমরাও করোনা পজ়িটিভ কিনা জানতে পারছি না। এ ভাবে কি বাঁচা যায়!”
উপসর্গ রয়েছে এমন রোগীর রিপোর্ট অবশ্য দ্রুত দেওয়ার চেষ্টা হচ্ছে। সমস্যা স্বীকার করে জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক গিরীশচন্দ্র বেরা বলেন, “আসলে নমুনা অনেক জমে যাচ্ছে। প্রতিদিন হাজার-হাজার নমুনা জমা হচ্ছে। আমাদের জেলার বহু নমুনা জমে রয়েছে। যে নমুনা এসেছে সেগুলি আগে ছাড়াই নিয়ম। তবে আমরা উপসর্গ থাকা রোগীর ক্ষেত্রে দ্রুত রিপোর্ট দিতে বলছি।”