Coronavirus in West Bengal

ফের মৃত্যু করোনায়, প্রশ্ন বুলেটিন নিয়ে

‘সার্ভিস ডক্টরস ফোরাম’-এর রাজ্য সাধারণ সম্পাদক সজল বিশ্বাসের ক্ষোভ, ‘‘মৃতের সংখ্যা গোপন করায় ঝাড়গ্রামে করোনার বাস্তব চিত্রটাও স্পষ্ট হচ্ছে না। করোনা হাসপাতালের প্রয়োজনীয় পরিকাঠামোরও উন্নতি ঘটানো হচ্ছে না। ’’

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

ঝাড়গ্রাম শেষ আপডেট: ১০ নভেম্বর ২০২০ ০৫:০৮
Share:

প্রতীকী ছবি।

করোনা আক্রান্ত হয়ে ফের এক স্বাস্থ্য কর্মীর মৃত্যু হল ঝাড়গ্রাম জেলায়। জঙ্গলমহলের এই জেলায় গত দু’মাসে এই নিয়ে করোনা আক্রান্ত হয়ে এক স্বাস্থ্য আধিকারিক ও দুই স্বাস্থ্য কর্মীর মৃত্যু হল বলে খবর।

Advertisement

রবিবার রাতে মৃত্যু হয় ঝাড়গ্রাম ব্লকের মোহনপুর গ্রামীণ হাসপাতালের কর্মী কল্যাণ চট্টোপাধ্যায়ের (৫৫)। তিনি রোগী ভর্তি নেওয়ার আগে অ্যান্টিজেন পরীক্ষার দায়িত্বে ছিলেন। জানা গিয়েছে, জেনারেল ডিউটি অ্যাটেনডেন্ট (জিডিএ) পদে কর্মরত কল্যাণ শনিবার হাসপাতালে নাইট ডিউটি করেন। রবিবার ছিল তাঁর ডে অফ। ওই দিন বিকেলে হাসপাতালের আবাসনেই অসুস্থবোধ করেন তিনি। শুরু হয় শ্বাসকষ্ট। অ্যান্টিজেন পরীক্ষায় জানা যায় তাঁর করোনা পজ়িটিভ। তাঁর হাইপারটেনশন ও ব্লাড সুগারের সমস্যাও ছিল। মোহনপুর গ্রামীণ হাসপাতালেই তাঁকে অক্সিজেন দেওয়া হয়। রাতেই তাঁর মৃত্যু হয়।

ঝাড়গ্রাম শহরের বিদ্যাসাগর পল্লির বাসিন্দা অবসরপ্রাপ্ত রেল কর্মী আদিত্য পান্ডাও (৭৪) করোনায় মারা গিয়েছেন। গত ৩০ অক্টোবর জেলা হাসপাতালে পরীক্ষায় জানা গিয়েছিল যে তিনি করোনা পজ়িটিভ। তারপর থেকে হোম আইসোলেশনেই ছিলেন আদিত্য। রবিবার বিকেলে বাড়িতেই শ্বাসকষ্ট শুরু হয়। ঝাড়গ্রাম করোনা হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হলে তাঁকে মৃত ঘোষণা করা হয়।

Advertisement

এর আগে গত ৭ সেপ্টেম্বর করোনায় আক্রান্ত হয়ে কলকাতার হাসপাতালে মৃত্যু হয় জেলার ডেপুটি সিএমওএইচ-২ সুবোধ মণ্ডলের। ঝাড়গ্রাম সিএমওএইচ অফিসের অ্যাকাউন্টস বিভাগের কর্মী ৩৫ বছরের সুকল্যাণ বেরা করোনা আক্রান্ত হয়ে গত ৬ নভেম্বর কলকাতার হাসপাতালে মারা গিয়েছেন। ঝাড়গ্রাম হাসপাতালেও চিকিৎসাধীন রোগীর মৃত্যুর সংখ্যা বাড়ছে। সূত্রের খবর, প্রতিদিনই এক-দু’জন করে করোনা আক্রান্ত রোগীর মৃত্যু হচ্ছে হাসপাতালে। রবিবার এক মহিলার মৃত্যু হয়েছে। সোমবারও চিকিৎসাধীন এক রোগীর মৃত্যু হয়েছে। যদিও যদিও রাজ্য স্বাস্থ্য দফতরের সরকারি বুলেটিন দেখলে অবশ্য মনে হতেই পারে যে পরিস্থিতি অতটাও উদ্বেগজনক নয়। কারণ সোমবার পর্যন্ত সেখানে ঝাড়গ্রামের করোনায় মৃতের সংখ্যা ছিল ১৩ জন!

এই বিষয়ে মন্তব্য করতে চাননি পুর-আধিকারিক ও জেলা স্বাস্থ্য কর্তারা। কেউ কিছু না বললেও প্রশ্ন উঠছে করোনায় মৃতের সৎকারের জন্য কেনা কাঠের পরিমাণ নিয়ে। ঝাড়গ্রামে করোনা আক্রান্ত হয়ে কারও মৃত্যু হলে তাঁদের সৎকার মূলত ঝাড়গ্রাম শহরের উপকন্ঠে নহড়খাল শ্মশানে হয়। সৎকারের দায়িত্বে রয়েছে পুরসভা। সেখানে প্রতিটি দেহ সৎকারের জন্য চার কুইন্ট্যাল কাঠ বরাদ্দ করা হয়। সরবরাহকারীর মাধ্যমে কাঠ কেনা হয়। সূত্রের খবর, গত জুলাই থেকে এ পর্যন্ত প্রায় তিনশো কুইন্ট্যাল কাঠ কেনা হয়েছে। বিপুল পরিমাণ এই কাঠে কতগুলি মৃতদেহের সৎকার হয়েছে সেই নিয়ে চাপানউতোর শুরু হয়েছে।

‘সার্ভিস ডক্টরস ফোরাম’-এর রাজ্য সাধারণ সম্পাদক সজল বিশ্বাসের ক্ষোভ, ‘‘মৃতের সংখ্যা গোপন করায় ঝাড়গ্রামে করোনার বাস্তব চিত্রটাও স্পষ্ট হচ্ছে না। করোনা হাসপাতালের প্রয়োজনীয় পরিকাঠামোরও উন্নতি ঘটানো হচ্ছে না। ’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন