Coronavirus

করোনা কালে অর্থ বরাদ্দ, প্রশ্নে উন্নয়ন

গত ছ’মাসে দু’দফায় প্রতি ওয়ার্ডে বিপুল পরিমাণ অর্থ বরাদ্দ করেছে পুরসভা। অথচ শহরবাসীর অভিযোগ, চোখে পড়ছে না উন্নয়ন।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

খড়্গপুর শেষ আপডেট: ০৫ অক্টোবর ২০২০ ০২:৪৬
Share:

খড়্গপুরের কৌশল্যা তেলমিলের গলিপথ বেহাল। নিজস্ব চিত্র

করোনা পর্বেই শেষ হয়েছে পুরবোর্ডের মেয়াদ। এখন বিদায়ী কাউন্সিলরেরা ওয়ার্ডের কো-অর্ডিনেটর। উন্নয়নের দায়িত্ব তাঁদের কাঁধেই। উন্নয়নমূলক কাজে টাকার অভাব নেই। গত ছ’মাসে দু’দফায় প্রতি ওয়ার্ডে বিপুল পরিমাণ অর্থ বরাদ্দ করেছে পুরসভা। অথচ শহরবাসীর অভিযোগ, চোখে পড়ছে না উন্নয়ন।

Advertisement

পুরসভা সূত্রের খবর, করোনা পর্ব শুরুর ঠিক আগে গত ১৯ ফেব্রুয়ারি ছিল খড়্গপুরের তৃণমূল পরিচালিত পুরবোর্ডের শেষ বৈঠক। ওই বোর্ড মিটিংয়ে রাজ্য থেকে বরাদ্দ হওয়া ৮ কোটি টাকার কথা জানানো হয়েছিল। সেই অর্থ থেকেই শহরের ‘এ’ শ্রেণিভুক্ত ২২টি ওয়ার্ডকে ১৫ লক্ষ ও ‘বি’ শ্রেণিভুক্ত ৪টি ওয়ার্ডকে ১৩লক্ষ টাকা করে দেওয়া হয়। এ ছাড়াও রেল ও আইআইটি মিলিয়ে শহরের ‘সি’ শ্রেণিভুক্ত ৯টি ওয়ার্ডের জন্য ১০ লক্ষ টাকা করে বরাদ্দ করা হয়। এর পরে গত জুনে শেষ হয় বোর্ডের মেয়াদ। বিদায়ী কাউন্সিলরদের ওয়ার্ড কো-অর্ডিনেটর করে পুরপ্রশাসকমণ্ডলী গঠন করে সরকার। তার পরেও অবশ্য অর্থের অভাব হয়নি। গত অগস্টে ফের বৈঠক ডেকে রাজ্যের পাঠানো ৭ কোটি টাকা শহরের প্রতিটি ওয়ার্ডে বিলি করা হয়। এক্ষেত্রে ‘এ’ শ্রেণিভুক্ত ওয়ার্ডকে ১৩লক্ষ, ‘বি’ শ্রেণিভুক্ত ওয়ার্ডকে ১১লক্ষ ও ‘সি’ শ্রেণিভুক্ত ওয়ার্ডকে ৯লক্ষ টাকা দেওয়া হয়েছে। সবমিলিয়ে গত ৬মাসে উন্নয়নের কাজের জন্য লক্ষ-লক্ষ টাকা পেয়েছে ওয়ার্ডগুলি। কিন্তু উন্নয়নমূলক কাজ সেভাবে হয়েছে কি! প্রশ্ন তুলছেন শহরের বাসিন্দাদের একাংশ।

২৪ নম্বর ওয়ার্ডের বাসিন্দা রেলকর্মী কৃশানু আচার্য বলছেন, ‘‘৫বছর ধরে আমাদের ওয়ার্ডে সেভাবে উল্লেখযোগ্য কাজ হয়নি। আর করোনা পর্বে গত ৬মাসে শুনলাম লক্ষ-লক্ষ টাকা বরাদ্দ হয়েছে। কিন্তু কোনও উন্নয়নমূলক কাজ নজরে পড়েনি। বরং তেলমিলের পাশের রাস্তা বেহাল হয়েছে। ওয়ার্ডে আমার বাড়ির সামনেই এখনও কাঁচা রাস্তা। আলোর অভাব।” একইভাবে শহরের ১৯ নম্বর ওয়ার্ডের রাজীব দে বলেন, ‘‘অনেক টাকাই এই ওয়ার্ডে বরাদ্দ হয়েছে। ১-২টি পথবাতিতেই লক্ষ-লক্ষ টাকা হয়তো খরচ হয়েছে। কারণ, এর বাইরে তো কাউন্সিলরের নিজের বাড়ির সামনে ছাড়া ওয়ার্ডের কোনও রাস্তা সংস্কার হতে দেখিনি। রাস্তা বেহাল এই ওয়ার্ডে। গত ৬মাস তো কাজ চোখেই পড়েনি।”

Advertisement

সবচেয়ে সমস্যায় পড়েছেন শহরের দুই ওয়ার্ডের সীমানায় থাকা বাসিন্দারা। কাউন্সিলরদের সমন্বয়ের অভাবে ভুগতে হয়েছে ওই ওয়ার্ডবাসীকে। নর্দমা থেকে রাস্তা বা পথবাতি নিয়ে ক্ষোভ থাকলেও সমাধান হয়নি। যেমন ৫ ও ৬ নম্বর ওয়ার্ডের সীমানা এলাকার বাসিন্দা আশিস রায় বলেন, ‘‘আমাদের বাড়ির সামনে নর্দমার জল রাস্তা দিয়ে বয়ে যাচ্ছে। গত একবছর ধরে সরব হলেও এখনও সমাধান হয়নি। ওয়ার্ডের কাজে টাকা আসছে। কিন্তু কোথায় খরচ হচ্ছে জানি না।”

কাউন্সিলরদের প্রতি বিশ্বাস না হারিয়ে পুর-প্রশাসক প্রদীপ সরকার বলছেন, “আমি তো জানি সব ওয়ার্ডেই কাজ হচ্ছে। এর পরেও বাসিন্দারা সরাসরি অভিযোগ জানালে পদক্ষেপ করব।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন