Coronavirus

বাড়ছে করোনা আক্রান্তের সংখ্যা, শয্যা সঙ্কটের আশঙ্কা

জেলা প্রশাসনের অবশ্য দাবি, পরিস্থিতির দিকে তাদের নজর রয়েছে। শয্যা নিয়ে সমস্যা হবে না।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

মেদিনীপুর শেষ আপডেট: ৩১ জুলাই ২০২০ ০৩:৩১
Share:

প্রতীকী ছবি।

সংক্রমণ ঊর্ধ্বমুখী। যে হারে করোনা আক্রান্তের সংখ্যা বাড়ছে, তাতে চিকিৎসায় শয্যা সঙ্কট দেখা দিতে পারে পশ্চিম মেদিনীপুরে।

Advertisement

রাজ্য স্বাস্থ্য দফতরের বুধবারের বুলেটিন অনুযায়ী, জেলায় সক্রিয় করোনা রোগীর সংখ্যা ২৫৯। জেলা স্বাস্থ্য দফতর সূত্রে খবর, এ জেলায় করোনা চিকিৎসার জন্য শয্যা রয়েছে ২৬০টি। এই দুই পরিসংখ্যান ধরলে ইতিমধ্যে এখানে প্রায় একশো শতাংশ শয্যাই ভর্তি। পরিস্থিতি যে দিকে এগোচ্ছে, তাতে আগামী দিনে শয্যা নিয়ে টানাটানি হতে পারে জেলায়।

জেলা প্রশাসনের অবশ্য দাবি, পরিস্থিতির দিকে তাদের নজর রয়েছে। শয্যা নিয়ে সমস্যা হবে না। করোনা মোকাবিলায় গঠিত জেলাস্তরের টাস্কফোর্সের চেয়ারম্যান তথা জেলাশাসক রশ্মি কমল বলেন, ‘‘জেলায় শয্যার অভাব হওয়ার কথা নয়। দু’টি কোভিড হাসপাতাল রয়েছে। সেফ হোমও চালু হয়েছে।’’ জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক নিমাইচন্দ্র মণ্ডলেরও বক্তব্য, ‘‘জেলায় শয্যার সমস্যা নেই।’’ তবে বিভিন্ন মহলেরই দাবি, সংক্রমণ বৃদ্ধির হারের নিরিখে এখনও পর্যাপ্ত পরিকাঠামো গড়ে ওঠেনি পশ্চিম মেদিনীপুরে। পরিস্থিতি একই থাকলে শীঘ্রই শয্যা সমস্যা বড় আকার নিতে পারে। জেলার এক চিকিৎসকও বলছেন, ‘‘শয্যার জোগান যে অপ্রতুল, স্বাস্থ্য দফতরের বুলেটিনেই তার আভাস রয়েছে। সক্রিয় রোগী এবং কোভিড শয্যার সংখ্যা পাশাপাশি রাখলেই স্পষ্ট হচ্ছে যে, জেলায় পর্যাপ্ত শয্যা নেই।’’ জেলার এক স্বাস্থ্য আধিকারিকের আশ্বাস, ‘‘এখন রোজ বেশ কিছু কেস হচ্ছে। কত শয্যা রয়েছে, কত প্রয়োজন হতে পারে, সে সব খতিয়ে দেখা হচ্ছে।’’ তাঁর দাবি, এখন জেলায় সক্রিয় করোনা রোগীর সংখ্যা ২৫৯ নয়, কিছুটা কম। গত দু’-তিন দিনে বেশ কয়েকজন সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরেছেন।

Advertisement

পশ্চিম মেদিনীপুরে দু’টি করোনা হাসপাতাল চালু হয়েছে। শালবনিতে (সুপার স্পেশালিটি) ১৫০টি শয্যা এবং মেদিনীপুরে (আয়ুষে) ৮০টি শয্যা রয়েছে। অর্থাৎ, জেলার দুই করোনা হাসপাতালে সবমিলিয়ে শয্যা রয়েছে ২৩০টি। সম্প্রতি ডেবরা গ্রামীণ হাসপাতালে সেফ হোম চালু হয়েছে। এখানে ৩০টি শয্যা রয়েছে। উপসর্গহীন কিংবা মৃদু উপসর্গযুক্ত করোনা রোগীদের এখানে রাখা হচ্ছে। জেলা স্বাস্থ্য দফতরের এক সূত্রে খবর, শীঘ্রই খড়্গপুর এবং ঘাটালে সেফ হোম চালু হচ্ছে। খড়্গপুরে ৫০টি, ঘাটালে ৪০টি শয্যা রাখা হতে পারে। ফলে জেলার তিনটি সেফ হোমে ১২০ জনকে রাখার ব্যবস্থা হয়ে যাবে।

বিভিন্ন মহলের দাবি, এখনই যা পরিস্থিতি তাতে আগামীতে শয্যা পেতে করোনা রোগীদের হাসপাতাল থেকে হাসপাতালে ঘুরতে হতে পারে। গুরুতর অসুস্থদের যাতে এ ভাবে ঘুরতে না হয় সেটা নিশ্চিত করা জরুরি। শয্যা বৃদ্ধিতে প্রতিকূলতাও রয়েছে। জেলার এক স্বাস্থ্যকর্মীর কথায়, ‘‘শুধু শয্যা বাড়ালে হবে না। পর্যাপ্ত স্বাস্থ্যকর্মী কই?’’

করোনা হাসপাতালে ভর্তি রোগীর শারীরিক অবস্থার উন্নতি হলেও, ফের পরীক্ষার ফল নেগেটিভ না আসা পর্যন্ত শয্যা আটকে থাকে। একাধিক মহলের মতে, এটাও একটা সমস্যা। চিকিৎসকদের একাংশের মতে, জেলার কিছু হাসপাতালে আইসোলেশন ওয়ার্ড খোলা উচিত। যেখানে সঙ্কটজনক কোভিড সন্দেহভাজন রোগীদের রেখে নমুনা পরীক্ষার সঙ্গে সঙ্গে চিকিৎসা দিয়ে স্থিতিশীল করা যাবে। জেলার এক স্বাস্থ্য আধিকারিক বলেন, ‘‘সংক্রমিতদের বেশিরভাগই উপসর্গহীন। করোনা রোগীর ক্ষেত্রে শয্যা সঙ্কট যাতে না হয়, তা নিশ্চিত করার সব রকম চেষ্টা চলছে।’’

(জরুরি ঘোষণা: কোভিড-১৯ আক্রান্ত রোগীদের জন্য কয়েকটি বিশেষ হেল্পলাইন চালু করেছে পশ্চিমবঙ্গ সরকার। এই হেল্পলাইন নম্বরগুলিতে ফোন করলে অ্যাম্বুল্যান্স বা টেলিমেডিসিন সংক্রান্ত পরিষেবা নিয়ে সহায়তা মিলবে। পাশাপাশি থাকছে একটি সার্বিক হেল্পলাইন নম্বরও।

• সার্বিক হেল্পলাইন নম্বর: ১৮০০ ৩১৩ ৪৪৪ ২২২
• টেলিমেডিসিন সংক্রান্ত হেল্পলাইন নম্বর: ০৩৩-২৩৫৭৬০০১
• কোভিড-১৯ আক্রান্তদের অ্যাম্বুল্যান্স পরিষেবা সংক্রান্ত হেল্পলাইন নম্বর: ০৩৩-৪০৯০২৯২৯)

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন