ঝাড়গ্রাম শহরে বন্ধ দোকান। মঙ্গলবার সকােল। নিজস্ব চিত্র
করোনা মানচিত্রে সবুজ জেলা ঝাড়গ্রামে অতিরিক্ত দোকান খোলা নিয়ে বিভ্রান্তি বজায় থাকল মঙ্গলবারও।
জেলা সদর ঝাড়গ্রাম শহরে এ দিন সকালে নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসের বাইরে কিছু দোকানপাট খুলেছিল। তবে পুলিশ গিয়ে তার মধ্যে কয়েকটি বন্ধ করে দেয়। পরিস্থিতি বদলায় বিকেলের পরে। জেলা প্রশাসন সূত্রে খবর, জেলার বিভিন্ন ব্লকের বিডিও ও থানার ভারপ্রাপ্ত পুলিশ আধিকারিকদের নিয়ে এ দিন বিকেলে ভিডিয়ো বৈঠক করেন জেলাশাসক আয়েষা রানি ও জেলা পুলিশ সুপার অমিতকুমার ভরত রাঠৌর। সেখানে জেলাশাসক আয়েষা বিডিও-দের জানান, সরকারি নির্দেশে উল্লেখিত দোকানগুলি সকাল ১০টা থেকে সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত খোলা থাকবে। দোকানগুলিতে যাতে স্বাস্থ্যবিধি ও সামাজিক দূরত্ব মানা হয় সে ব্যাপারে নজরদারি চালাবে পুলিশ।
সোমবার বিকেলে নবান্নে সাংবাদিক বৈঠক করে মুখ্যসচিব জানিয়েছিলেন, গ্রিন জেলায় কী-কী পরিষেবা চালু হবে। সোমবার রাতে নয়া সরকারি নির্দেশিকাও জেলায় এসে পৌঁছয়। এরপরে মঙ্গলবার সকালে জেলার বালিগেড়িয়া, নয়াগ্রাম, মানিকপাড়া, গোপীবল্লভপুর, তপসিয়া, শিলদা, বেলপাহাড়ির মতো বিভিন্ন এলাকায় দোকান খোলা হয়। অন্য কোথাও তেমন সমস্যা না হলে ও ঝাড়গ্রাম শহরে পুলিশ এসে দোকান বন্ধ করে দেয়। ঝাড়গ্রাম শহরের মেন রোডের একটি পোশাক দোকানের কর্মী সঞ্জয় রায় বলেন, ‘‘সরকারি নির্দেশিকা জানার পরে সকাল দশটায় দোকান খুলেছিলাম। কিছুক্ষণ পরেই পুলিশ এসে দোকান বন্ধ করে দিল।’’এই নিয়ে ক্ষোভ ছড়িয়েছে স্থানীয় ব্যবসায়ীদের মধ্যে। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক ব্যবসায়ী বলেন, ‘‘থানায় ফোন করে দোকান বন্ধ করার কারণ জানতে চাইলে বলা হল, জেলা প্রশাসনের অনুমতি ছাড়া দোকান খোলা যাবে না।’’
রাজ্য সরকারের নির্দেশিকার পরেও বিভ্রান্তি কেন? তার স্পষ্ট জবাব পুলিশ-প্রশাসনের কাছে মেলেনি। জেলাশাসক আয়েষা রানি বলেন, ‘‘রাজ্য সরকারের নয়া নির্দেশিকা অনুযায়ী যে সব দোকান খোলা রাখতে বলা হয়েছে, সেগুলি খোলা থাকবে।’’ প্রশাসন সূত্রের খবর, নতুন নির্দেশিকার বিষয়টি মাইক্রোফোনের মাধ্যমে সবাইকে জানিয়ে দেওয়া হবে।
স্থানীয় সূত্রে খবর, পুলিশ কিছু দোকান বন্ধ করলেও ঝাড়গ্রাম শহর-সহ জেলার নানা জায়গায় চা-পান, নির্মাণ সামগ্রী, অটোমোবাইল, সার, টায়ারের বেশ কিছু দোকান খোলা ছিল এ দিন। খোলা ছিল কয়েকটি সেলুগনও। সিগারেট-সহ বিভিন্ন জিনিস প্রায় দ্বিগুণ দামে বিক্রি হয়েছে। মদের অফ শপগুলি দুপুর বারোটা থেকে সন্ধ্যে ছ'টা পর্যন্ত খোলা ছিল। মদ কেনার জন্য সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখে লম্বা লাইন দিয়েছিলেন ক্রেতারা। ঝাড়গ্রাম পুরসভার উদ্যোগে শহরের কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ এলাকায় এলাকাভিত্তিক ৫ জন শ্রমিক নিয়োগ করে হাইড্রেন পরিষ্কারের কাজও শুরু হয়েছে এ দিন।