নীলষষ্ঠীতে বর্গভীমা মন্দিরে চেনা ভিড় এ বার আর দেখা গেল না। ফাইল চিত্র
করোনা সতর্কতায় লকডাউনের জেরে ট্রেন, বাস বন্ধ। করোনা সংক্রমণ রোধে ভিড় এড়াতে বন্ধ বাজারের অধিকাংশ দোকানপাট থেকে সভা-সমাবেশ এমনকী উৎসব-অনুষ্ঠানও।বন্ধ জেলার ঐতিহ্যবাহী তমলুক শহরের বর্গভীমা মন্দিরে পুষ্পাঞ্জলি এবং ভোগপ্রসাদ খাওয়ানোর আয়োজন। সেই আবহেই এ বার তমলুক শহর-সহ জেলার অধিকাংশ গ্রামে চৈত্র মাসের শিবের গাজন ও চৈত্র সংক্রান্তি উৎসব-সহ চড়ক মেলার আয়োজন বন্ধ থাকছে বলে জানা গিয়েছে।
তমলুক শহরের অন্যতম ঐতিহ্যবাহী চক্রেশ্বর এবং ভূতনাথ মন্দিরের গাজন উৎসব এবার বন্ধ।একইভাবে নন্দকুমারের গুমাই ও শহিদ মাতঙ্গিনী ব্লকের মেচেদা সংলগ্ন চিমুটিয়া গ্রামে শিবমন্দির প্রাঙ্গণে মেলার আয়োজনও এ বার বন্ধ থাকছে বলে জানিয়েছেন বছর চৈত্র মাসের শেষদিকে জেলার শহর ও গ্রামের শিবমন্দির প্রাঙ্গণে গাজন উৎসবের আয়োজন করেন স্থানীয় বাসিন্দারা।গাজন ঘিরে চৈত্র সংক্রান্তির শেষদিনে শিবের মন্দিরে পুজো দেওয়ার জন্য মহিলারা ভিড় জমান। এই উপলক্ষে বিভিন্ন এলাকায় মেলার আয়োজন করা হয়। চৈত্র সংক্রান্তি উপলক্ষে জেলার বিভিন্ন এলাকায় চড়ক মেলার আয়োজন করা হয়।
কিন্তু করোনা সংক্রমণ রোধে সতর্কতা হিসেবে একই জায়গায় ৭ জনের বেশি লোকের জমায়েত বা ভিড় নিষিদ্ধ করা হয়েছে। প্রশাসনের তরফে মন্দির, মসজিদ, গির্জা-সহ জেলার বিভিন্ন এলাকায় ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানগুলিতে জমায়েত এড়ানোর পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। প্রশাসনের পরামর্শ মেনেই লকডাউন শুরুর পরেই তমলুক শহরের বর্গভীমা মন্দিরে ভক্তদের পুষ্পাঞ্জলি বন্ধ করা হয়েছে। মন্দির সংলগ্ন শিবমন্দিরে গাজনের আয়োজন করা হয়ে থাকে। করোনা সংক্রমণের কারণে এবার সেই গাজন উৎসবও বন্ধ করা হল। বর্গভীমা মন্দির পরিচালন কমিটির সদস্য অয়ন অধিকারী বলেন, ‘‘চৈত্র মাসের শেষে গাজন ও সংক্রান্তি উপলক্ষে ভূতনাথ মন্দিরে ভক্তদের ভিড় জমে। করোনা সতর্কতার জন্যই এবছর গাজন ও সংক্রান্তিতে উৎসব বন্ধ করা হয়েছে।’’
তমলুক পুরসভা অফিসের কাছেই রয়েছে চক্রেশ্বর শিবমন্দির। এখানেও গাজন বন্ধ। মন্দির পরিচালন কমিটির কর্তা সনাতন দাস বলেন, ‘‘প্রতিবছর ৯ দিন ধরে গাজন উৎসব চলত। এ ছাড়াও নীলপপুজো উপলক্ষে মন্দিরে ৩-৪ হাজার ভক্তের ভিড় হত।কিন্তু করোনা সতর্কতায় গাজন বন্ধ করা হয়েছে। সংক্রান্তির দিনে উৎসবও বন্ধ করা হয়েছে।’’ তমলুক শহরের শালগেছিয়া, শঙ্করআড়া ও ধারিন্দা এলাকায় শিবের গাজন ও চড়ক মেলাও এবার হচ্ছে না।
তমলুকের পুরপ্রধান রবীন্দ্রনাথ সেন বলেন, ‘‘করোনার জন্য ভিড় এড়াতেই প্রশাসনের তরফে মেলার আয়োজন বন্ধ রাখার জন্য বলা হয়েছিল। শহরের বিভিন্ন এলাকায় শিবমন্দিরে গাজন ও চড়ক মেলা বন্ধ করেছেন উদ্যোক্তারা।’’
নন্দকুমারের খঞ্চি এলাকার ডিহিগুমাই গ্রামে দক্ষিণেশ্বর শিবমন্দির প্রাঙ্গণে গাজন ও চৈত্র সংক্রান্তি উপলক্ষে চড়ক-সহ তিনদিন ধরে মেলার আয়োজন হত।ওই মেলা কমিটির সভাপতি বিশ্বনাথ জানা বলেন, ‘‘করোনা সতর্কতার জন্য এবার মন্দির প্রাঙ্গণে গাজন, চড়ক ও মেলা বন্ধ করা হয়েছে। এলাকার বাসিন্দাদের জানাতে শুক্রবার আমরা মাইকে প্রচারও করেছি।’’