শো-কজ হয়ে সুশান্ত বলছেন, দলেই আছি 

জেলা সিপিএম সূত্রে খবর, পার্টি নেতৃত্বের সমালোচনা করে ধারাবাহিকভাবে লেখা ও জেলা পার্টিকে না জানিয়ে জেলার বাইরে নিজের অনুগামীদের নিয়ে বৈঠক করার জন্যই সুশান্ত ঘোষকে শো-কজ করা হয়েছে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

গড়বেতা শেষ আপডেট: ১২ অগস্ট ২০১৯ ০১:৪৩
Share:

সুশান্ত ঘোষ। —ফাইল চিত্র

শো কজের জবাব দিয়ে সিপিএমেই থাকতে চান তিনি। শো-কজের চিঠি পাওয়ার পরে এমনটাই জানালেন গড়বেতার প্রাক্তন সিপিএম বিধায়ক তথা প্রাক্তন মন্ত্রী সুশান্ত ঘোষ।

Advertisement

সম্প্রতি সিপিএমের পশ্চিম মেদিনীপুর জেলা কমিটির বৈঠকে দলবিরোধী কাজের অভিযোগে সুশান্ত ঘোষকে শো-কজের সর্বসম্মত সিদ্ধান্ত হয়। শুক্রবারই শো-কজের চিঠি পেয়েছেন তিনি। সেই প্রসঙ্গে রবিবার তিনি ফোনে বলেন, ‘‘শো কজের চিঠি পেয়েছি। আমার বক্তব্য জানাব। এর বেশি কিছু মিডিয়ার সামনে বলব না।’’ এরপরে কি আপনি সিপিএমেই থাকবেন? সেই প্রশ্নের উত্তরে একসময়ের দাপুটে সিপিএম নেতা বলেন, ‘‘আদর্শের জন্য দল করি। সিপিএমে আছি। সিপিএমেই থাকতে চাই।’’

জেলা সিপিএম সূত্রে খবর, পার্টি নেতৃত্বের সমালোচনা করে ধারাবাহিকভাবে লেখা ও জেলা পার্টিকে না জানিয়ে জেলার বাইরে নিজের অনুগামীদের নিয়ে বৈঠক করার জন্যই সুশান্ত ঘোষকে শো-কজ করা হয়েছে। সুশান্তের নিজের এলাকা গড়বেতা ও চন্দ্রকোনা রোডের সিপিএম নেতৃত্ব অবশ্য এই শো-কজ নিয়ে কিছু বলতে নারাজ। একসময়ে সুশান্ত ঘোষের সঙ্গেই গড়বেতারই তপন ঘোষের নাম উচ্চারিত হত। এ দিন তপনও বলেন, ‘‘এটা পার্টির অভ্যন্তরীণ বিষয়, তাই এ নিয়ে কিছু বলব না।’’ সুশান্তের আরেক ঘনিষ্ঠ সিপিএম নেতা সুকুর আলিও একই কথা বলেন। গড়বেতার সিপিএম নেতা দিবাকর ভুঁইয়ার বক্তব্য, ‘‘শো-কজের একটা খবর শুনেছি। এর বেশি কিছু বলব না।’’ সুশান্ত এখন কলকাতায় থাকেন। স্ত্রী করুণা বন্দ্যোপাধ্যায় থাকেন চন্দ্রকোনা রোডে। তাঁর সঙ্গে যোগাযোগ করা যায়নি।

Advertisement

প্রকাশ্যে কেউ কিছু না বললেও গড়বেতা ও চন্দ্রকোনা রোডের অনেক সিপিএম নেতা-কর্মী আড়ালে সুশান্ত ঘোষের পাশেই দাঁড়াচ্ছেন। বাঁকুড়া জেলার বিষ্ণুপুরে গড়বেতার নেতা-কর্মীদের নিয়ে সুশান্তের বৈঠক করার বিষয়টি সিপিএমের পশ্চিম মেদিনীপুর জেলা কমিটি পরে জানতে পারে। তা ছাড়া, একটি পোর্টালে সুশান্তের ধারাবাহিক লেখায় নেতৃত্বের প্রতি বিষোদগারের অভিযোগ রয়েছে। জেলা নেতৃত্বের একাংশের মতে, এমন বৈঠক ‘উপদলীয় কার্যকলাপ’-এর শামিল এবং তা অবশ্যই শৃঙ্খলাভঙ্গ। তবে সেই বৈঠকে থাকা সিপিএম কর্মীদের একাংশ সেটা মনে করছে না।

বিষ্ণুপুরের ওই বৈঠকে থাকা নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক সিপিএম কর্মী বলেন, ‘‘মামলায় জর্জরিত সুশান্তদা জেলায় ঢুকতে পাচ্ছেন না। তাই উনি পার্টির বিষ্ণুপুরে কাজে এসেছেন খবর পেয়ে আমরা দেখা করতে গিয়েছিলাম। এতে অন্যায়ের কি আছে?’’ সে দিনের বৈঠকে থাকা এক সিপিএম নেতার দাবি, ‘‘উনি (সুশান্ত ঘোষ) তো পার্টি বিরোধী কিছু কাজ করতে বলেননি। বরং তাঁর উৎসাহে আমরা কয়েকটি এলাকায় বন্ধ হয়ে থাকা পার্টি অফিস খুলতে পেরেছি।’’ সুশান্ত অবশ্য এই নিয়ে কিছু বলতে রাজি হননি।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন