উড়ালপুলে ফাটল, আতঙ্ক

উড়ালপুল তৈরি হয়েছে এক বছরের কিছু বেশি সময় হল। এরই মধ্যে একটি স্তম্ভে আড়াআড়ি ফাটল দেখা গিয়েছে বড়সড়। ফলে রীতিমতো আতঙ্কে ঝাড়গ্রামের বাসিন্দারা।

Advertisement

কিংশুক গুপ্ত

ঝাড়গ্রাম শেষ আপডেট: ২৩ ফেব্রুয়ারি ২০১৭ ০০:১১
Share:

ফাটল ধরেছে এই অংশেই।

উড়ালপুল তৈরি হয়েছে এক বছরের কিছু বেশি সময় হল। এরই মধ্যে একটি স্তম্ভে আড়াআড়ি ফাটল দেখা গিয়েছে বড়সড়। ফলে রীতিমতো আতঙ্কে ঝাড়গ্রামের বাসিন্দারা।

Advertisement

শহরের নতুনডিহি রেলওয়ে ক্রসিং সংলগ্ন ৫ নম্বর রাজ্য সড়কে (এটি অরণ্যশহরের মেন রোড হিসেবে পরিচিত) উড়ালপুল তৈরির কাজ শুরু হয় ২০১১ সালের অগস্টে। শেষ হয় ২০১৫ সালের মাঝামাঝি। আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন না-হলেও সে বছর সেপ্টেম্বর থেকেই শুরু হয়ে যায় যান চলাচল। উড়ালপুলের নীচে এখন বসে সব্জি, মাছের বাজার। গজিয়ে উঠেছে অস্থায়ী হরেক রকমের স্টলও। সকাল বিকেল প্রচুর মানুষের আনাগোনা। ফলে সিঁদুরে মেঘ দেখছেন বাসিন্দারা। কলকাতার বিবেকানন্দ রোডের উড়ালপুল ভেঙে পড়ার ঘটনার স্মৃতি ফিকে হয়ে যায়নি।

ঝাড়গ্রামের পুরপ্রধান দুর্গেশ মল্লদেব বলেছেন, “উড়ালপুলে ফাটল ধরেছে। বিষয়টি রেলের কারিগরি বিভাগকে জানিয়েছি। এখনও আনুষ্ঠানিকভাবে উড়ালপুলের দায়িত্ব রাজ্য সরকারের হাতে দেওয়া হয়নি।” দক্ষিণ-পূর্ব রেলের মুখ্য জনসংযোগ আধিকারিক সঞ্জয় ঘোষ অবশ্য দাবি করেছেন, “উড়ালপুলে ফাটল ধরেনি। দু’টি স্ল্যাবের জয়েন্টের মাঝে পলেস্তারা খসে গিয়েছে। ঘটনাটি জানার পরে জুনিয়র ইঞ্জিনিয়াররা পরিদর্শন করছেন। প্রয়োজনীয় যা করার তা রেলের তরফেই করা হবে। এতে আতঙ্কিত হওয়ার কিছু নেই।”

Advertisement

বাসিন্দাদের দাবি, বাঁকুড়াগামী রাজ্য সড়কের ওই উড়ালপুল দিয়ে প্রতিদিন কয়েক হাজার যানবাহন চলে। ঝাড়গ্রাম শহরের মূল রেলওয়ে ক্রসিংয়ের উত্তরপ্রান্তে উড়ালপুলের তলা দিয়ে যাওয়ার সময় উপরে তাকালেই একধারের ফাটলটি স্পষ্ট দেখা যাচ্ছে। পুরসভা সূত্রে খবর, রেলের কারিগরি বিভাগকেও আশঙ্কার কথা জানানো হয়েছে।

সূত্রের খবর, ২০১১ সালে উড়ালপুল তৈরির জন্য রেল ও রাজ্য সরকার মোট ১২ কোটি টাকা বরাদ্দ করেছিল। পরে প্রকল্প ব্যয় কিছুটা বাড়ে। পুরো কাজটার দায়িত্ব নেয় রেল। রেলের তরফেই টেন্ডার ডেকে কলকাতার একটি ঠিকাদার সংস্থাকে নিয়োগ করা হয়। ২০১৫ সালের মাঝামাঝি কাজটি শেষ হয়। কিন্তু উড়ালপুলের নীচে দু’পাশে পথচারীদের জন্য যথেষ্ট রাস্তা এখনও তৈরি হয়নি। রাস্তার দু’পাশের স্থায়ী দোকানপাটগুলির কিছুটা অংশ ভেঙে সেতুর তলায় দু’পাশে সমান্তরাল দু’টি রাস্তা তৈরি করার পরিকল্পনা থাকলেও তা বাস্তবায়িত হয়নি।

প্রশাসনিকস্তরে সিদ্ধান্ত হয়েছে, রাস্তা তৈরির জন্য দু’পাশের দোকান-বাড়ির অংশ বিশেষ ভাঙা হবে, সেই সব দোকান ও বাড়ির মালিকদের ক্ষতিপূরণ দেওয়া হবে। অভিযোগ, প্রশাসনের গড়িমসির কারণে এবং পূর্ত দফতর এবং পূর্ত সড়ক দফতরের মধ্যে সমন্বয়ের অভাবে উড়ালপুলের তলায় দু’পাশের রাস্তা তৈরির কাজ শুরুই হয়নি। কেবল কোন কোন ভবনগুলির কতটা অংশ ভাঙা হবে, সেটা চিহ্নিত করা হয়েছে। স্থানীয় বাসিন্দাদের বক্তব্য, ঝাড়গ্রাম উড়ালপুলে কোনও অঘটন ঘটলে দমকল, ক্রেন ও উদ্ধারকারী দলের ঢোকাটাই দুঃসাধ্য হয়ে পড়বে। সে ক্ষেত্রে বড় ধরনের বিপর্যয়ের আশঙ্কা রয়েছে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন