বাধা পেরিয়ে স্বপ্নের উড়ান সৌগতদের

কেশপুরের তোড়িয়া হাইস্কুলের ছাত্র পীযূষকান্তি ঘোষ মাধ্যমিকে ৬৩৯ নম্বর পেয়েছে। তার বাড়ি মাইপুরে। বাবা লক্ষ্মণবাবু চাষের কাজ করেন। সামান্য জমি রয়েছে। মা চম্পাদেবী গৃহবধূ। টানাটানির সংসারে ‘লড়াই’ ছাড়েনি পীযূষকান্তি।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

মেদিনীপুর শেষ আপডেট: ৩০ মে ২০১৭ ০২:২৮
Share:

কৃতী: বাঁ দিক থেকে, সৌগত ঘোষ, পীযূষকান্তি ঘোষ, শুভঙ্কর রানা। —নিজস্ব চিত্র

কারও চোখে ডাক্তার হওয়ার স্বপ্ন। কারও বা ইঞ্জিনিয়ার। আর্থিক সামর্থ্য তেমন নেই। স্বপ্নপূরণের পথে দারিদ্র্যতা কাঁটা হয়ে দাঁড়াবে না তো? মাধ্যমিকে ভাল ফল করেও দুর্ভাবনা কাটছে না সৌগত ঘোষ, পীযূষকান্তি ঘোষ, শুভঙ্কর রাণাদের। মনের জোরেই এতটা পথ পেরিয়ে এসেছে তারা। বাকি পথও একইভাবেই এগোতে পারবে বলে তাদের বিশ্বাস।

Advertisement

শালবনির প্রত্যন্ত জনপদ রাউতোড়ার ছেলে সৌগত ঘোষ মাধ্যমিকে ৬৭৩ নম্বর পেয়েছে। দেবগ্রাম হাইস্কুলের ছাত্র সৌগতর বাবা গৌতমবাবু চাষের কাজ করেন। সামান্য ক’বিঘা জমি চষেই সংসার চলে। মা সীমাদেবী গৃহবধূ। দারিদ্র্যের মধ্যেই বড় হয়ে ওঠা। সৌগত অঙ্ক ও ভৌতবিজ্ঞানে ১০০ শতাংশ নম্বর পেয়েছে। জীবনবিজ্ঞানে ৯৫। মেদিনীপুরে এসে উচ্চ মাধ্যমিকের পড়াশোনা করার ইচ্ছে রয়েছে সৌগতর। চোখে ডাক্তার হওয়ার স্বপ্ন। গৌতমবাবু বলছিলেন, “জানি না ছেলের স্বপ্নপূরণ করতে পারব কি না। স্কুল সব রকম সহযোগিতা করেছে। না হলে ও এই ফল করতে পারত না।”

কেশপুরের তোড়িয়া হাইস্কুলের ছাত্র পীযূষকান্তি ঘোষ মাধ্যমিকে ৬৩৯ নম্বর পেয়েছে। তার বাড়ি মাইপুরে। বাবা লক্ষ্মণবাবু চাষের কাজ করেন। সামান্য জমি রয়েছে। মা চম্পাদেবী গৃহবধূ। টানাটানির সংসারে ‘লড়াই’ ছাড়েনি পীযূষকান্তি। বড় হয়ে ডাক্তার হতে চায় সে। নিজের ইচ্ছের কথা শিক্ষকদের, পরিজনেদেরও জানিয়েছে। অঙ্কে তার প্রাপ্ত নম্বর ১০০, ভৌতবিজ্ঞানে ৯১, জীবনবিজ্ঞানে ৮৬। পীযূষ বলছিল, “বাড়িতে আর্থিক সমস্যা রয়েছে। জানি না কতদূর এগোতে পারব।” তোড়িয়া হাইস্কুলের প্রধান শিক্ষক উৎপল গুড়ে মানছেন, “পীযূষের মতো ছাত্ররা যদি আর্থিক সাহায্য পায় তাহলে আরও বেশি বিকাশ ঘটাতে পারে। আমরা যতটা পেরেছি, সহযোগিতা করেছি।”

Advertisement

মেদিনীপুর টাউন স্কুলের ছাত্র (বালক) শুভঙ্কর রাণা ৫৮৮ নম্বর পেয়েছে। বাড়ি শহরের বেড়বল্লভপুরে। বাবা শঙ্করবাবু এক দোকানে কাজ করেন। মা স্বাতীদেবী গৃহবধূ। শুভঙ্কর বড় হয়ে ইঞ্জিনিয়ার হতে চায়। তার কথায়, “ইঞ্জিনিয়ার হওয়ার ইচ্ছে আছে। জানি না কী হবে। চেষ্টা করব।” এই কৃতী ছাত্রের ভর্তি ফি মকুব করে দেওয়ার আশ্বাস দিয়েছেন টাউন স্কুলের প্রধান শিক্ষক বিবেকানন্দ চক্রবর্তী।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন