Cyclone Amphan

ঘর ভেঙে নষ্ট বই, ঘুরে দাঁড়াতে মরিয়া প্রিয়াঙ্কা

সামসাবাদ ধান্যখোলা বিদ্যাপীঠের নবম শ্রেণির ছাত্রী প্রিয়াঙ্কা মাইতি। বাড়ি ধান্যখোলা গ্রামে। বাবা পেশায় দিন মজুর।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ২৫ মে ২০২০ ০৪:২৩
Share:

খোলা আকাশের নীচে ভিজে বই শুকিয়ে নিচ্ছে প্রিয়াঙ্কা। নিজস্ব চিত্র

আমপানে ধূলিসাৎ বাড়ি। ঝড় শুধু বাড়িই ভাঙেনি, উড়িয়ে নিয়ে গিয়েছে পড়ার বইও। অবশিষ্ট যা ছিল বৃষ্টিতে তাও ভিজে নষ্ট হয়েছে। লকডাউনের জেরে বন্ধ স্কুল। নতুন বই পাওয়ার জো নেই। তব হাল ছাড়তে রাজি নয় সে। ভেজা বই নিয়েই ফের ফের পড়াশোনায় ফেরার লড়াই শুরু করেছে নন্দীগ্রামের প্রিয়াঙ্কা। তবে শুধু সেই-ই নয়, এমন অবস্থা বহু ছাত্রছাত্রীর।

Advertisement

সামসাবাদ ধান্যখোলা বিদ্যাপীঠের নবম শ্রেণির ছাত্রী প্রিয়াঙ্কা মাইতি। বাড়ি ধান্যখোলা গ্রামে। বাবা পেশায় দিন মজুর। সরু পাঁচ ইঞ্চির পাকার দেওয়ালে টালির ছাউনি দেওয়া একটু চিলতে ঘরে বাস। তিন বোনের মধ্যে প্রিয়াঙ্কাই বড়। বুধবার যখন নন্দীগ্রামে আমপানের দাপট শুরু হয় তখন বাড়িতেই ছিল প্রিয়াঙ্কার পরিবার। ঝড়ের দাপট বাড়তে থাকায় এক প্রতিবেশীর কংক্রিটের ছাদ দেওয়া বাড়িতে গিয়ে চলে যায় তারা। তারপরই বিশালাকার একটি গাছ উপড়ে পড়ে তাদের ঘরের উপরে। হুড়মুড় করে ভেঙে পড়ে ঘর। নিরাশ্রয় হয়ে পড়ে গোটা পরিবার। ঝড় উড়িয়ে নিয়ে গিয়েছে সবকিছু। পরনের পোশাক ছাড়া আর কিছু নেই। ভাঙা ঘরে এসে বৃষ্টিতে ভিজে যাওয়া গুটিকতক বই কোনওমতে উদ্ধার করতে পেরেছে প্রিয়াঙ্কা। স্থানীয় প্রশাসন প্রিয়াঙ্কাদের ক্ষয়ক্ষতির রিপোর্ট সংগ্রহ করেছে।

লকডাউনে বন্ধ স্কুল। তবে ক্লাসের পড়া বাড়িতে বসেই চালিয়ে যাচ্ছিল প্রিয়াঙ্কা। কিন্তু আমপানের তাণ্ডবে সব শেষ। কতদিনে ফের মাথার উপরে ছাদ মিলবে তা নিয়ে সংশয়ে গোটা পরিবার। তবে তার জন্য পড়াশোনা থামাতে রাজি নয় একরত্তি মেয়েটি। প্রিয়াঙ্কার বাবা প্রদীপ মাইতি বলেন, ‘‘লকডাউনের জেরে দু’মাস বন্ধ রোজগার। ফের ঘর তৈরির সামর্থ্য নেই। মেয়েদের বইপত্র সব উড়ে গিয়েছে। কিছু ভিজে নষ্ট হয়েছে। প্রশাসনের সাহায্যের দিকে তাকিয়ে আছি।’’ তবে ভেজা বই রোদে শুকিয়ে নিয়ে পড়াশোনা চালাতে মরিয়া প্রিয়াঙ্কা। তার কথায়, ‘‘এ ছাড়া আর উপায় নেই। স্কুল খুললে নতুন বই চাইব শিক্ষকদের কাছে। তবে সবার আগে দরকার ঘর। বই উড়ে গেলেও পড়াশোনা থামাতে চাই না।’’

Advertisement

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement
Advertisement