ভরা নদীতেই নিজস্বী! 

দুর্যোগের দিনে নদীঘাটে নজরদারি ছিল না কেন? মেদিনীপুরের (সদর) মহকুমাশাসক দীননারায়ণ ঘোষ বলেন, ‘‘নজরদারি থাকার কথা। বিষয়টি দেখছি।’’

Advertisement

নিজস্ব প্রতিবেদন

শেষ আপডেট: ১০ নভেম্বর ২০১৯ ০০:৫৩
Share:

ঝুঁকি নিয়েই চলছে নিজস্বী তোলা। মেদিনীপুরের কংসাবতীতে। নিজস্ব চিত্র

নিষেধ অমান্য করেই চলল নদীতে মাছ ধরা। কেউ কেউ নিজস্বীও তুললেন।

Advertisement

শনিবার দুপুরে ঘূর্ণিঝড় বুলবুলের আবহে এই ছবিই দেখা গেল মেদিনীপুরের কংসাবতীর অ্যানিকেতের আশেপাশে। এ দিন সেখানে গিয়ে কোনও নজরদারিও দেখা যায়নি।

এ দিন দুপুরে কংসাবতীর অ্যানিকেতের আশেপাশের নদীঘাটে এসেছিলেন পীযূষ দাস। তাঁকে নদীর জলে নেমে তাঁদের নিজস্বী তুলতে দেখা গিয়েছে। তিনি বলেন, ‘‘জল কতটা বেড়েছে সেটা দেখতেই এখানে আসা। দেখলাম আরও কয়েকজন নেমেছে। তাই আমরাও নদীর জলে নেমেছি। নিজস্বীও তুলেছি। এমন ভরা নদী তো সব দিন থাকবে না!’’ নদীতে নামা তো ঝুঁকির? পীযূষের উত্তর, ‘‘এইসময়ে খানিক ঝুঁকির তো বটেই। তবে আমরা দেখেশুনেই নেমেছি।’’ কার্তিক সাহু নামে আরেকজন আবার মাছ ধরছিলেন। তিনি বলেন, ‘‘জল বাড়লেই আমরা ছিপ নিয়ে এখানে চলে আসি।’’

Advertisement

দুর্যোগের দিনে নদীঘাটে নজরদারি ছিল না কেন? মেদিনীপুরের (সদর) মহকুমাশাসক দীননারায়ণ ঘোষ বলেন, ‘‘নজরদারি থাকার কথা। বিষয়টি দেখছি।’’ পাশাপাশি তাঁর দাবি, এই সময়ে নদীর জল ফুলেফেঁপে উঠে বিপত্তি হতে পারে। তাই সাধারণ মানুষকেও এই নিয়ে সচেতন হতে হবে। আজ, রবিবার পর্যন্ত সব জায়গায় ফেরি সার্ভিস বন্ধ থাকবে বলে জানিয়েছে জেলা প্রশাসন। এক আধিকারিক জানান, যে সব ঘাটে নৌকা পারাপার হয় সেগুলিতে নজর রাখার জন্য ব্লক প্রশাসনকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। নির্দেশ অমান্য করলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। ওই আধিকারিকের দাবি, ‘‘নদীর আশেপাশের এলাকার মানুষদের সতর্ক করা হয়েছে। কিছু এলাকায় কাঁচা বাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে বলে শুনেছি। কিছু গাছ পড়েছে। সবদিক খতিয়ে দেখে ক্ষতিগ্রস্তদের ক্ষতিপূরণ দেওয়া হবে।’’ ঘাটাল মহকুমাতেও খোলা হয়েছে কন্ট্রোল রুম। ঘাটালের মহকুমাশাসক অসীম পাল জানান, পরিস্থিতির উপর নজর রাখা হচ্ছে। ঝাড়গ্রাম জেলার ৮টি ব্লকেও মাইকে সতর্ক-প্রচার করা হয়। বেলপাহাড়ি ব্লকে গোটা তিনটি মাটির বাড়ি ভেঙে পড়ার খবর মিলেছে। তবে কেউ হতাহত হননি। ঝাড়গ্রামের জেলাশাসক আয়েষা রানি বলেন, ‘‘এখনও পর্যন্ত বড় ক্ষয়ক্ষতির খবর নেই। পরিস্থিতির উপর নজর রাখা হচ্ছে।’’

পশ্চিম মেদিনীপুর জেলা প্রশাসনের এক সূত্রে খবর, মোহনপুর এবং সবংয়ে প্রায় ৪৫ মিলিমিটার বৃষ্টি হয়েছে। মেদিনীপুর, ঘাটালের মতো এলাকাতেও প্রায় ৩৫ মিলিমিটার বৃষ্টি হয়েছে। শনিবার রাত পর্যন্ত জেলায় বড় কোনও ক্ষয়ক্ষতির খবর নেই। ঘাটালের বরদা চৌকানে নবি দিবসের গেট ঝড়ের দাপটে হুড়মুড়িয়ে ভেঙে পড়ে রাস্তায়। তার ফলে ঘাটাল-চন্দ্রকোনা সড়ক কিছুক্ষণের জন্য অবরুদ্ধ হয়ে যায়। কংসাবতীর জল শনিবার পর্যন্ত বিপদসীমার নীচে ছিল। তবে বৃষ্টি চলতে থাকলে তা বিপদসীমায় পৌঁছতে পারে। দুর্যোগ মোকাবিলায় বিভিন্ন দফতরকে তৈরি থাকার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। ব্লকে ব্লকে ‘রেসকিউ সেন্টার’ হয়েছে।

মজুত রাখা হয়েছে ত্রাণ সামগ্রী এবং খাদ্য সামগ্রী।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন