হোটেল থেকেই ফণীতে চোখ মমতার

সকালেই পশ্চিম মেদিনীপুরের তৃণমূল জেলা সভাপতি অজিত মাইতিকে ফোন করে মমতা জানিয়ে দেন আগামী শনিবার পর্যন্ত সব কর্মসূচি বাতিল করছেন তিনি। তারপর থেকে ঘনঘন ফোনে জেলা নেতাদের সঙ্গে যোগাযোগ।

Advertisement

নিজস্ব প্রতিবেদন

শেষ আপডেট: ০৪ মে ২০১৯ ০১:১১
Share:

পূর্ব ঘোষণামতো সব সভা বাতিল করলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। ফাইল চিত্র।

ফণীর শক্তি বাড়ছে? যাত্রাপথ পরিবর্তন হচ্ছে কি? রাজ্যের কোন জায়গায় সে তাণ্ডব চালাতে পারে? খড়্গপুরের হোটেল থেকেই শুক্রবার সারাদিন ঘূর্ণিঝড় ফণীর উপর নজর রাখলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।

Advertisement

সকালেই পশ্চিম মেদিনীপুরের তৃণমূল জেলা সভাপতি অজিত মাইতিকে ফোন করে মমতা জানিয়ে দেন আগামী শনিবার পর্যন্ত সব কর্মসূচি বাতিল করছেন তিনি। তারপর থেকে ঘনঘন ফোনে জেলা নেতাদের সঙ্গে যোগাযোগ। হোটেলের বাইরে ছিল কড়া পাহারা। হোটেলে মমতার তাঁর নিজস্ব রক্ষী ছাড়া জেলা পুলিশের আধিকারিকদের যেতে দেখা যায়নি। এমনকি, নির্বাচনী বিধি থাকায় ওই হোটেলে যাননি জেলা প্রশাসনের কর্তারাও। তৃণমূল সূত্রের খবর, প্রতিনিয়ত যোগাযোগ রাখলেও মমতা কোনও জেলা নেতাকে হোটেলে ডেকে পাঠাননি। দলের নেতাদের যে কোনও পরিস্থিতির জন্য তৈরি থাকার নির্দেশ দিয়েছেন তিনি।

এ দিন আরামবাগ লোকসভা কেন্দ্রের অধীন চন্দ্রকোনা বিধানসভা এলাকার ক্ষেত্রপালে তৃণমূল নেত্রীর সভা ঘিরে প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছিল। সকাল থেকে রাস্তায়, মোড়ে পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছিল। প্যন্ডেল সহ যাবতীয় প্রস্তুতি সারা। বৃষ্টি হবে ধরে নিয়ে মুখ্যমন্ত্রীর সভাস্থল, প্যান্ডেল যথেষ্ট শক্তপোক্ত ভাবে করা হয়েছিল। উপরে ছিল ছাউনি। আকাশ ছিল মেঘলা। শুরু হয় বৃষ্টি। সঙ্গে ছিল হালকা ঝড়ো হাওয়া। এমন পরিবেশে সকালেই বাতিল হয়ে যায় সভা। এ দিন সকাল থেকে নেতারাও আসতে শুরু করেছিলেন। তাঁরাও ফিরে যান। এই নিয়ে চন্দ্রকোনায় দ্বিতীয়বার বাতিল হল সভা। প্রসঙ্গত, আজ, শনিবার চন্দ্রকোনায় ভোট প্রচার শেষ হচ্ছে। জেলা তৃণমূল সভাপতি বলেন, “এবার ঘাটাল লোকসভার জন্য প্রচার করবেন দলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তবে ঘাটালে সভা নিয়ে এখনও কোনও দিনক্ষণ ঠিক হয়নি।” যদি ফণীর জেরে রাজ্যে তেমন কোনও বিপর্যয় না হয়? তৃণমূল সূত্রের খবর, সে ক্ষেত্রে আজ, শনিবার ঘাটাল চন্দ্রকোনা এলাকায় মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় পদযাত্রা করতে পারেন। এ ব্যাপারে অনুমতিও নেওয়া হয়েছে।

Advertisement

চন্দ্রকোনায় এ দিন মুখ্যমন্ত্রীর সভা বাতিল হলেও আশায় রয়েছে গোয়ালতোড়ের তৃণমূল। সেখানে রবিবার দুপুরে মুখ্যমন্ত্রীর জনসভা হওয়ার কথা। সভা হবে ধরে নিয়েই গোয়ালতোড়ে শুরু হয়েছে জোর প্রশাসনিক প্রস্তুতি। দলীয় স্তরেও শুরু হয়েছে প্রস্তুতি। এ দিন সকাল থেকে গোয়ালতোড়ের হাইস্কুল মাঠে মঞ্চ বাঁধার কাজ শুরু হয়েছে। পাশের সনকা স্টেডিয়ামে করা হচ্ছে অস্থায়ী হেলিপ্যাড। দু’টি জায়গায় মাটি, বালি ফেলে ছোটখাটো সংস্কারের কাজ করা হচ্ছে। জেলা পুলিশের কর্মকর্তারা কয়েকবারই মাঠ পরিদর্শন করে গিয়েছেন, নির্বিঘ্নে সভা সম্পন্ন করতে গোয়ালতোড়ে হয়েছে প্রশাসনিক স্তরে বৈঠকও। বৃষ্টিতে মাঠে কাদা হলে মানুষের বসার অসুবিধা হতে পারে, সেটা আঁচ করেই তৃণমূলের পক্ষ থেকে বালি ও অতিরিক্ত ত্রিপলের ব্যবস্থা করা হচ্ছে।

ফণীর জেরে বিঘ্নিত হয়েছে অন্য রাজনৈতিক দলের নির্বাচনী প্রচারও। এ দিন বিকেলে গোয়ালতোড়ে দলীয় প্রার্থী দেবলীনা হেমব্রমের সমর্থনে মিছিল ও সভার কর্মসূচি ছিল সিপিএম নেতা সুজন চক্রবর্তীর। থাকার কথা ছিল প্রার্থীরও। ফণীর জেরে সেই কর্মসূচি বাতিল করা হয়। এদিন গড়বেতার মৌলাড়া থেকে লক্ষ্মণপুর পর্যন্ত ১২ কিলোমিটার রাস্তায় বিজেপি প্রার্থী কুনার হেমব্রমের রোড শো করার কথা থাকলেও তা হয়নি। পরিবর্তে কুনার হেমব্রম গড়বেতার দলদলি, আগুইবনি, আমকোপা সহ কয়েকটি এলাকায় কর্মীদের নিয়ে ছোট ছোট সভা করেন।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন