Dead

কথা কম বলতেন বিশ্বজিৎ

পশ্চিম মেদিনীপুরের দাসপুর থানার শ্রীবরা গ্রামে বাড়ি বিশ্বজিতের। চাষি পরিবার।

Advertisement

অভিজিৎ চক্রবর্তী

দাসপুর শেষ আপডেট: ০৪ জুলাই ২০২০ ০৪:৫১
Share:

পরিজনদের সঙ্গে শোকার্ত বাবা। ছবি: কৌশিক সাঁতরা

কোনও কিছুতেই তেমন উচ্ছ্বাস দেখাতেন না। খেলাধুলো করতে ভালবাসতেন। কিন্তু দর্শকদের উত্তেজনার মধ্যেও তিনি থাকতেন নির্লিপ্ত। বিশ্বজিৎ কারকের (৩২) পাড়া-প্রতিবেশীরা তেমনই জানাচ্ছেন। শুক্রবার মহাকরণে রাজ্য সশস্ত্র পুলিশের পঞ্চম ব্যাটেলিয়নের কনস্টেবল বিশ্বজিতের নিজের সার্ভিস রিভলবারের গুলিতে মৃত্যু হয়েছে। প্রাথমিক ভাবে অনুমান, আত্মহত্যা করেছেন তিনি।

Advertisement

পশ্চিম মেদিনীপুরের দাসপুর থানার শ্রীবরা গ্রামে বাড়ি বিশ্বজিতের। চাষি পরিবার। মাঠের দিকে ফাঁকা জায়গায় বাড়ি। সেই বাড়িতে থাকেন বাবা গোপাল কারক, ভাই সনজিৎ। বিশ্বজিতের স্ত্রী মণিমালা আর জি কর হাসপাতালের নার্স। তাঁদের ছেলে অর্কদ্যুতির বয়স বছর আড়াই। তাই মা মীরা ছেলের কাছেই লেকটাউনে থাকেন। বছর খানেক আগে লেকটাউনে বিশ্বজিৎ ফ্ল্যাট নিয়েছিলেন। শুক্রবার দুপুরের পরে স্ত্রী মণিমালাই প্রথম ফোন করে গ্রামের বাড়িতে দুঃসংবাদটি জানান। খবর পাওয়ার পরেই ভাই সনজিৎ কারক কলকাতায় রওনা দেন।

গত বছর অগস্ট মাসে কাকা সঞ্জয় মারা যান। সেই সময়েই শেষ গ্রামে এসেছিলেন বিশ্বজিৎ। পড়শিরা জানাচ্ছেন, বরাবরই চুপচাপ থাকতেন। বাড়িতে এলে লোকজনের সঙ্গে কম কথা বলতেন। তবে পাড়ার লোকের সঙ্গে বিশ্বজিতের সুসম্পর্ক ছিল। গ্রামেরই হাইস্কুল থেকে মাধ্যমিক পাশ করে উচ্চ মাধ্যমিকে ভর্তি হয়েছিলেন। তবে পরীক্ষা দেননি। পড়া ছেড়ে চাকরির খোঁজ করতে শুরু করেন। ২০১১ সালে বিশ্বজিৎ চাকরি পান। গতকাল ফোন করেছিলেন বাবাকে। চাষবাসের খবর নেন। বাবাকে শরীরের যত্ন নিতে এবং সাবধানে থাকতে বলেন। কাকা শ্যামল বললেন, ‘‘ভাইপো বলেছিল, ছুটি পেলেই আসবে। ওর ছেলেটা ভাল করে গ্রাম দেখেনি। বলেছিল, যখন যাব ছেলেটাকে গ্রাম ঘুরিয়ে দেখিও।’’

Advertisement

কেন এমন ঘটল? পরিবারের সদস্যরা কিছু বুঝে উঠতে পারছেন না বলে জানালেন। এদিন তাঁর গ্রামের বাড়িতে ভিড়। পাড়ার লোকেরাও বুঝে উঠতে পারছেন কী করে এমন শান্তশিষ্ট ছেলেটির জীবনে এমন ঘটল। বিশ্বজিতের বাবা বললেন, ‘‘আমি কোনওদিন ছেলেকে কষ্ট দিইনি। ছেলের মুখ থেকেও তার কষ্টের কথা শুনিনি। কিন্তু এই ধরনের ঘটনা যখন ঘটে তখন তো প্রচণ্ড কষ্ট থেকেই হয়।’’ বিশ্বজিৎ এক মাসের বেশি ছুটিতে ছিলেন। মাসখানেক আগে কাজে যোগ দিয়েছিলেন। তাঁর কী হয়েছিল? বিশ্বজিতের বাবা বলছেন, ‘‘চিকিৎসা হয়েছে। কী অসুখ হয়েছিল জানি না।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন