দুর্ঘটনায় মৃত্যু, লরিতে আগুন ধরাল জনতা

মেদিনীপুরের দিক থেকে আসা বালি, মোরাম, পাথর বোঝাই লরি যাতায়াতের জেরে দুর্ঘটনা বাড়ছিল। দিনের বেলায় তমলুক-পাঁশকুড়া রাজ্য সড়কে মালবাহী লরি চলাচল বন্ধও করেছিল জেলা প্রশাসন।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

তমলুক শেষ আপডেট: ২৬ ফেব্রুয়ারি ২০১৭ ০১:২৪
Share:

তখনও জ্বলছে আগুন। তমলুকে তোলা নিজস্ব চিত্র।

মেদিনীপুরের দিক থেকে আসা বালি, মোরাম, পাথর বোঝাই লরি যাতায়াতের জেরে দুর্ঘটনা বাড়ছিল। দিনের বেলায় তমলুক-পাঁশকুড়া রাজ্য সড়কে মালবাহী লরি চলাচল বন্ধও করেছিল জেলা প্রশাসন। কিন্তু তাতে লরি চালকদের অসুবিধা হচ্ছিল। ফলে ২১ ফেব্রুয়ারি থেকে বেলা ১২ টা থেকে দুপুর ২ টা পর্যন্ত মালবাহী লরি চলাচলে ছাড় দিয়েছিল প্রশাসন। আর সেটাই কাল হল।

Advertisement

প্রশাসনের নিষেধাজ্ঞা শিথিল হতেই ফের বেপরোয়া এক লরির ধাক্কায় মোটরবাইক আরোহী দুই ব্যক্তির মৃত্যুর অভিযোগ উঠেছে। শনিবার দুপুরে তমলুকের নাইকুড়ি এলাকায় তমলুক বিডিও অফিসের কাছেই দুর্ঘটনাটি ঘটে। উত্তেজিত জনতা বালি বোঝাই লরিতে আগুন ধরিয়ে দেয়। পুলিশকে মৃতদেহ নিতে আপত্তি জানিয়ে বিক্ষোভ দেখানো হয় বলে অভিযোগ। বিশাল পুলিশ বাহিনী ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।

পূর্ব মেদিনীপুরের পুলিশ সুপার অলোক রাজোরিয়া বলেন, ‘‘তমলুক-পাঁশকুড়া সড়কে ভারী লরি চলাচল বন্ধ ছিল। সেই নিয়ম কিছু সময়ের শিথিল করা হয়েছিল। আজকের এই ঘটনার পর এ বিষয়ে ফের পর্যালোচনা করা হবে। এ দিনের দুর্ঘটনায় লরির চালককে আটক করা হয়েছে।’’

Advertisement

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, মৃত দু’জনের নাম গোকুল সাঁতরা (৫৫) ও কর্ণ সাঁতরা (২৮)। গোকুলবাবুর বাড়ি নন্দকুমারের কামারদা গ্রামে। কর্ণের বাড়ি নন্দকুমারের বিরিঞ্চিবসান গ্রামে। সম্পর্কে আত্মীয় ওই দু’জন এ দিন সকালে তমলুকের বহিচাড় গ্রামে এক আত্মীয়ের বাড়িতে গিয়েছিলেন। সেখান থেকে বাইক চেপে পাঁশকুড়া- তমলুক রাজ্য সড়ক ধরে ফেরার পথে একই দিকে যাওয়া লরিটি বাইকে ধাক্কা মারে বলে অভিযোগ। ঘটনাস্থলেই দুই আরোহীর মৃত্যু হয়।

ঘটনার জেরে স্থানীরা লরিটিতে ভাঙচুর করে আগুন ধরিয়ে দেয়। খবর পেয়ে তমলুক থানার পুলিশ ও দমকল বাহিনী সেখানে যায়। পুলিশ মৃতদেহ উদ্ধার করতে গেলে স্থানীয় বাসিন্দারা বাধা দেন বলে অভিযোগ। পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে স্থানীয় বাসিন্দাদের আশ্বাস দেওয়ার পর পুলিশ দেহ উদ্ধার করে। বিকেল সাড়ে ৫টা নাগাদ পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়।

স্থানীয় বাসিন্দা শেখ মেহবুব আলির অভিযোগ, ‘‘এই সড়কে মালবাহী লরি যাতায়াত করার জেরে প্রায়ই দুর্ঘটনা ঘটছে। ২০১৫ সালে সড়ক পার হওয়ার সময় লরির ধাক্কায় আমার মা মারা গিয়েছিলেন। এই এলাকাতেই গত তিন মাসে ৫ টি দুর্ঘটনা ঘটেছে। পুলিশের কাছে এনিয়ে কয়েকবার অভিযোগ জানানোর পর এখানে শুধু একটি ট্রাফিক ব্যারিকেড বসিয়ে দায় সেরেছে। তাও কিছুদিন লরি যাতায়াত বন্ধ ছিল। আবার যে কে সেই। তারই এ দিন মাসুল গুনল ওই দু’টো লোক।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন