Haldia

বিক্ষোভ সামলাতে জেলাশাসক

হলদিয়ায় শ্রমিকদের বিক্ষোভ যেমন থামছে না, তেমনই তৃণমূল শ্রমিক সংগঠনের কোর কমিটি নিয়েও মিটছে না জলঘোলা।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

হলদিয়া শেষ আপডেট: ১৩ জানুয়ারি ২০২১ ০১:৩৬
Share:

কারখানায় বিক্ষোভ। মঙ্গলবার হলদিয়ায়। নিজস্ব চিত্র।

জেলার শিল্পাঞ্চলে শ্রমিক ক্ষোভ অব্যাহত। বিভিন্ন দাবিতে হলদিয়ায় শ্রমিকদের বিক্ষোভ যেমন থামছে না, তেমনই তৃণমূল শ্রমিক সংগঠনের কোর কমিটি নিয়েও মিটছে না জলঘোলা। শেষমেশ পরিস্থিতি সামাল দিতে আসরে নামলেন পূর্ব মেদিনীপুর জেলাশাসক এবং পুলিশ সুপার।

Advertisement

স্থানীয় সূত্রের খবর, মঙ্গলবার সকাল থেকেই হলদিয়ার একটি বেসরকারি কারখানার দরজায় দাবি সনদ তৈরি করার দাবিতে বিক্ষোভ দেখাতে শুরু করেন সংস্থার ঠিকা শ্রমিকেরা। বিক্ষোভের ফলে কারখানায় সকালে বিভাগের উৎপাদন পুরোপুরি ব্যাহত হয়। শেষে পরিস্থিতি সামাল দিতে বেলা ১টা নাগাদ কারখানায় আসেন জেলাশাসক বিভু গোয়েল, জেলা পুলিশ সুপার প্রবীণ প্রকাশ, হলদিয়া উন্নয়ন পর্ষদের সিইও হরিশঙ্কর পান্নিকার, হলদিয়ার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার পার্থ ঘোষ।

কারখানা সূত্রের খবর, জেলার উচ্চপদস্থ প্রশাসনিক আধিকারিকেরা শ্রমিকদের সঙ্গে কথা বলে তাঁদের দাবিদাওয়া শোনেন। তারপর কারখানা কর্তৃপক্ষ সঙ্গে আলোচনায় বসেন। প্রায় তিন ঘণ্টা ধরে চলে এই বৈঠক। শ্রমিক পক্ষের একাংশের দাবি, জেলাশাসক তাঁদের দাবি দাওয়াগুলি কারখানা কর্তৃপক্ষের সঙ্গে বিবেচনা করে দেখবেন। এর পরেই তাঁরা দুপুরে কাজে যোগ দেন বিক্ষোভকারীরা। কারখানার উৎপাদন ব্যাহত হতে দেবেন না বলে শ্রমিকেরা আশ্বাস দিয়েছেন। তবে শ্রমিকদের একাংশের অভিযোগ, এ দিন বিক্ষোভ থামাতে দেখা মিলেনি তৃণমূলের শ্রমিক সংগঠনের কোনও নেতাদের। যদিও হলদিয়ার প্রাক্তন বিধায়ক তথা শিল্পাঞ্চলে কোরকমিটির সদস্য তুষার মণ্ডলের দাবি, ‘‘আমি সকাল থেকে শ্রমিকদের সঙ্গে কথা বলেছি।’’

Advertisement

উল্লেখ্য, ওই কারখানায় গত সাত দিনের মধ্যে দু’বার অস্থায়ী শ্রমিকরা বিক্ষোভ দেখালেন। দিন কয়েক আগেই হলদিয়া বন্দরের অতিথি নিবাসে তৃণমূলের শ্রমিক সগংঠনের রাজ্যের নেত্রী দোলা সেন বৈঠকে এসেছিলেন। সে সময়ও সংগঠনের একাংশ শ্রমিক বিক্ষোভ দেখান। নেতা-নেত্রীদের বিরুদ্ধে স্লোগান দেওয়ার পাশাপাশি আইএনটিটিএইসি’র প্রাক্তন কার্যকরী নেতা শিবনাথ সরকারকে মারধর করাও অভিযোগ ওঠে। সংগঠন সূত্রের খবর, ওই মারধরের ঘটনায় রীতিমতো স্তম্ভিত শ্রমিক নেতৃত্ব। তাই কোনও জায়গায় শ্রমিকরা বিক্ষোভ করলেও তাঁদের সঙ্গে আলোচনা করতে এগিয়ে যেতে সাহস পাচ্ছেন না বলে খবর সংগঠন সূত্রে। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক শ্রমিক নেতা বলেন, ‘‘কোর কমিটিতে শ্যামল আদক এবং শিবনাথ সরকারের মতো নেতাদের রাখা হয়েছিল। কিন্তু তাঁদের প্রতি শ্রমিকদের ওই আচরণ দেখে তাঁরা আর কোর কমিটিতে থাকবেন কি না, তা নিয়েও সন্দেহ রয়েছে। ভুললে চলবে না ওইদিন দোলা সেনের বিরুদ্ধেও স্লোগান দিয়েছেন শ্রমিকেরা। সুতরাং দলের সিদ্ধান্ত কী হবে, তা রাজ্য নেতৃত্ব জানবেন।’’ আর ব্যাপারে এ দিনের বিক্ষোভরত শ্রমিকদের দাবি, যে ভূমিকা শ্রমিক সংগঠনের নেতৃত্বের নেওয়ার দরকার ছিল, তা তাঁরা নেননি। উল্টে সেই ভূমিকা নিতে দেখা গেল জেলা প্রশাসনের আধিকারিকদের। তাই প্রশাসনিক আধিকারিকদের হস্তক্ষেপে শ্রমিকদের সমস্যা মিটবে বলে তাঁরা আশাবাদী।

এ ব্যাপারে জেলাশাসক বিভু গোয়েল বলেন, ‘‘কারখানা কর্তৃপক্ষ এবং শ্রমিকদের পক্ষ থেকে আমাকে ফোন করা হয়েছিল। দুপক্ষই আমার পরামর্শ চেয়েছিলেন। সেজন্য আমি কারখানায় গিয়ে সবার সঙ্গে আলোচনা করি। অস্থায়ী শ্রমিকদের দাবি সনদের কাজ চলছে। আরও কিছুটা সময় লাগবে। কারখানা কর্তৃপক্ষও বলেছেন শ্রমিকদের দাবিদাওয়া গুলি বিবেচনা করবেন।’’ এ দিনের বিক্ষোভ প্রসঙ্গে জানতে চেয়ে কারখানায় আধিকারিক রূপম চট্টোপাধ্যায়কে ফোন করা হয়। তবে তিনি ফোন ধরেননি।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন