ডেঙ্গিতে প্রৌঢ়ার মৃত্যু, লাগাতার প্রচারে জোর

ডেঙ্গি আক্রান্ত এক প্রৌঢ়ার মৃত্যু হল উত্তর ২৪ পরগনার ব্যারাকপুরে। শনিবার ব্যারাকপুরের বেসরকারি হাসপাতালে সন্ধ্যা নাগ (৬৫)-এর মৃত্যু হয়। সন্ধ্যাদেবী পশ্চিম মেদিনীপুরের দাসপুর-২ ব্লকের খেপুত গ্রামের বাসিন্দা।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

ঘাটাল শেষ আপডেট: ২২ অগস্ট ২০১৬ ০০:৫৬
Share:

এলাকায় ব্লিচিং পাউডার ছড়াচ্ছেন স্বাস্থ্য কর্মীরা। — নিজস্ব চিত্র।

ডেঙ্গি আক্রান্ত এক প্রৌঢ়ার মৃত্যু হল উত্তর ২৪ পরগনার ব্যারাকপুরে। শনিবার ব্যারাকপুরের বেসরকারি হাসপাতালে সন্ধ্যা নাগ (৬৫)-এর মৃত্যু হয়। সন্ধ্যাদেবী পশ্চিম মেদিনীপুরের দাসপুর-২ ব্লকের খেপুত গ্রামের বাসিন্দা। এই ঘটনায় স্বাস্থ্য দফতরের বিরুদ্ধে উদাসীনতার অভিযোগে সরব মৃতার ভাইপো ওই গ্রামেরই বাসিন্দা অমিয় নাগ। তাঁর অভিযোগ, “কাকিমা ডেঙ্গিতে আক্রান্ত হওয়ার পরই স্বাস্থ্য দফতরে জানিয়েছিলাম। কিন্তু প্রশাসনের কেউ গ্রামে আসেননি।”

Advertisement

সন্ধ্যাদেবীর বড় মেয়ে শম্পা রায়ের বাড়ি ব্যারাকপুরে। জ্বর-সহ ডেঙ্গির নানা উপসর্গ দেখা দেওয়ায় মাকে নিজের বাড়িতে নিয়ে যান মেয়ে। পশ্চিম মেদিনীপুর জেলা মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক গিরীশচন্দ্র বেরা বলেন, “সন্ধ্যা নাগ নামে এক মহিলার মৃত্যু হয়েছে। তবে ব্যারাকপুরে ওঁনার চিকিৎসা চলছিল।” গিরীশচন্দ্রবাবু আরও বলেন, “সন্ধ্যাদেবী ক্যানসারে ভুগছিলেন। ফলে তাঁর রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা এমনিতেই কমে গিয়েছিল। ডেঙ্গিতে আক্রান্ত হওয়ার পর প্লেটলেটও কমে যাওয়ায় তাঁর মৃত্যু হয়েছে।”

পশ্চিম মেদিনীপুর জেলা জুড়ে ডেঙ্গিতে আক্রান্তের সংখ্যা দেড়শো ছুঁইছুঁই। সরকারি হিসেবে জেলায় এখন ডেঙ্গি আক্রান্ত ১৪৭ জন। যদিও জেলায় ডেঙ্গিতে এখনও কোনও মৃত্যুর ঘটনা ঘটেনি। জেলার বাসিন্দা ওই মহিলার মৃত্যুর ঘটনার পরই নড়ে উদ্বেগ বেড়েছে স্বাস্থ্য দফতরের।

Advertisement

রবিবার খেপুত গ্রাম ঘুরেই ডেঙ্গি রোধে উদাসীনতার প্রমাণ মিলল। খেপুত ছাড়াও সংলগ্ন মহিষঘাটা, মানিকদীপা, উত্তরবাড়-সহ বিভিন্ন গ্রামের একাধিক জায়গায় নোংরা জল জমে রয়েছে। বিভিন্ন বাড়ির উঠানেও জমে রয়েছে জল। একাধিক জায়গায় আগাছার জঙ্গল। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক স্বাস্থ্য দফতরের এক আধিকারিকের কথায়, “শহরের মতো গ্রামে ডেঙ্গি নিয়ে প্রচার শুরুই হয়নি। ফলে গ্রামে-গ্রামে ডেঙ্গি আক্রান্তের সংখ্যা বাড়ছে। গ্রামাঞ্চলেও আরও তৎপর হওয়া প্রয়োজন। তবে ডেঙ্গি রোধে সাধারণ মানুষকেও এগিয়ে আসতে হবে।”

স্বাস্থ্য দফতর সূত্রে খবর, ডেঙ্গি থেকে রেহাই পেতে সচেতনতা যেমন জরুরি, তেমনই বাড়ির চারিদিক পরিষ্কারও রাখতে হবে। এ দিন জেলা উপ-মুখ্য স্বাস্থ্য রবীন্দ্রনাথ প্রধান খেপুত গ্রামের বিভিন্ন এলাকায় যান। এলাকার বাসিন্দাদের জানানো হয়, বাড়ির চারপাশে ব্লিচিং পাউডার ছড়ান। রাতে মশারি লাগিয়ে শোওয়ার কথাও বলা হয়। পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি অরুণ মুখোপাধ্যায় বলেন, “পঞ্চায়েতগুলিতে প্রচার শুরু হয়েছে। এ বার মশানাশক তেল স্প্রে করা ও ব্লিচিং পাউডার ছড়ানো হবে।”

স্থানীয়দেরও বিভিন্ন এলাকায় ঘুরে ডেঙ্গি নিয়ে সচেতনতা বাড়ানোর কাজ করতে আহ্বান করা হয়। রবীন্দ্রনাথবাবু বলেন, ‘‘সরকারি ভাবে প্রচার তো হচ্ছেই। আপনারাও পাড়ায় পাড়ায় ঘুরে ডেঙ্গি নিয়ে সচেতনতা বাড়ানোর কাজে এগিয়ে আসুন। একযোগে এই কাজ
করতেই হবে।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন