Dengue

ছড়াচ্ছে জ্বর, ডেঙ্গি-ভয় ঝাড়গ্রামেও

চুবকা পঞ্চায়েতের প্রধান দিলীপ সোম জানিয়েছেন, ১০ জনের রক্তে ডেঙ্গির জীবাণু মিলেছে। যদিও ঝাড়গ্রামের মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক অশ্বিনী মাঝি বলেন, “চুবকা এলাকায় সরকারি ভাবে ডেঙ্গি আক্রান্তের খবর নেই।”

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

ঝাড়গ্রাম শেষ আপডেট: ২৫ সেপ্টেম্বর ২০১৭ ০০:৩৩
Share:

প্রতীকী ছবি।

খড়্গপুর, মেদিনীপুরের পর এ বার জ্বরের প্রকোপ ঝাড়গ্রামে। চুবকা অঞ্চলের রাংড়াকোলা ও রাউতাড়াপুর গ্রামে জ্বরের প্রকোপ বেড়েছে গত দু’সপ্তাহে। দুই গ্রামে প্রায় জনা কুড়ি বাসিন্দা জ্বরে আক্রান্ত হয়ে মেদিনীপুরের সরকারি ও বিভিন্ন বেসরকারি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন।

Advertisement

চুবকা পঞ্চায়েতের প্রধান দিলীপ সোম জানিয়েছেন, ১০ জনের রক্তে ডেঙ্গির জীবাণু মিলেছে। যদিও ঝাড়গ্রামের মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক অশ্বিনী মাঝি বলেন, “চুবকা এলাকায় সরকারি ভাবে ডেঙ্গি আক্রান্তের খবর নেই।”

স্থানীয় সূত্রে খবর, আক্রান্তের মধ্যে সাতজন রাংড়াকোলা গ্রামের এবং তিনজন রাউতারাপুর গ্রামের বাসিন্দা। এখন মেদিনীপুরের হাসপাতালে চিকিৎসা করিয়ে চারজন সুস্থ। বাকি ছ’জনের চিকিৎসা চলছে মেদিনীপুর মেডিক্যাল কলেজ এবং মেদিনীপুরের দু’টি বেসরকারি হাসপাতালে।

Advertisement

ঝাড়গ্রাম ব্লকের চুবকা গ্রাম পঞ্চায়েতের রাংড়াকোলা গ্রামে একশোটি পরিবারের বাস। জনসংখ্যা প্রায় ছ’শো। ওই গ্রামের বেশির ভাগ বাসিন্দা পেশায় আনাজ চাষি। ওই এলাকা থেকে ঝাড়গ্রাম জেলা সদরের দূরত্ব প্রায় ৪০ কিমি। কিন্তু কংসাবতী পেরোলেই মেদিনীপুর। খড়্গপুর আবার মাত্র ১৪ কিলোমিটার দূরে। ফলে যে কোনও প্রয়োজনে স্থানীয় বাসিন্দারা খড়্গপুর ও মেদিনীপুরেই যান। তাই সেখানকার হাসপাতালেই চিকিৎসা করান। আবার খড়্গপুরের গোলবাজারে আড়তদারদের কাছে আনাজ বিক্রি করতে যান স্থানীয় চাষিরা। তাই অনেকেই আশঙ্কা করছেন, খড়্গপুরে গিয়েই রোগ বাঁধিয়ে এসেছিলেন কয়েকজন। স্থানীয় আনাজ চাষি তরণী পাল, শিশির মাইতি, অচিন্ত্য সামন্ত, অচিন্ত্যবাবুর ছেলে স্কুলপড়ুয়া দিগন্তের মতো অনেকেরই রক্তে ডেঙ্গির জীবাণু মিলেছে।

চুবকার পঞ্চায়েত প্রধান দিলীপ সোমের দাবি, “এলাকার মানুষজনকে সচেতন করা হচ্ছে। স্বাস্থ্য দফতরকে বিষয়টি জানিয়েছি।” তবে বাসিন্দাদের অভিযোগ, পঞ্চায়েত সদস্যের মাধ্যমে বিডিও এবং স্বাস্থ্য দফতরে বিষয়টি জানানো সত্ত্বেও আক্রান্ত গ্রামে মেডিক্যাল টিম পাঠানো হয়নি। বেসরকারি নির্ণয় কেন্দ্রের রক্ত পরীক্ষার রিপোর্ট সঠিক নয় বলে দাবি করছেন স্থানীয় চুবকা স্বাস্থ্যকেন্দ্রের চিকিৎসক ও স্বাস্থ্যকর্মীরা। ফলে, মেদিনীপুরের দু’টি বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি হতে বাধ্য হচ্ছেন এলাকাবাসী।

ঝাড়গ্রামে ডেঙ্গি পরীক্ষার ব্যবস্থা নেই। ঝাড়গ্রাম হাসপাতালের মাধ্যমে মেদিনীপুর মেডিক্যাল থেকে রিপোর্ট আসতে অনেক দেরি হয়। তাই বেসরকারি নির্ণয় কেন্দ্রে ছুটতে হয়। বেসরকারি হাসপাতালে পরিষেবাও ভাল। তাই চিকিৎসা করাতে অভাবী পরিবারগুলি ধানদেনা করতে বাধ্য হচ্ছে।

রাংড়াকোলা গ্রামের পঞ্চায়েত সদস্য বিদ্যুৎ খামরই বলেন, “গত দু’সপ্তাহে রাংড়াকোলা গ্রামের ১৪ জন ডেঙ্গি আক্রান্ত হয়েছেন। আক্রান্তরা মেদিনীপুরের বিভিন্ন সরকারি ও বেসরকারি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন।’’ তাঁর দাবি, পরিস্থিতি উদ্বেগজনক বলে ব্লক প্রশাসন ও স্বাস্থ্য দফতরকে বার বার জানানো হয়েছে। স্থানীয় স্বাস্থ্য কেন্দ্র থেকে কয়েকজনের রক্ত পরীক্ষা হয়েছে। তবে এখনও মেডিক্যাল টিম এলাকায় আসেনি।

মেদিনীপুরের একটি বেসরকারি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন বাচ্চু ঘোড়ই নামে এক রোগীর অবস্থা আশঙ্কাজনক বলে জানা গিয়েছে। ফলে আতঙ্ক ছড়াচ্ছে এলাকায়।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন