Dengue

থানায় মশার বাসা, ডেঙ্গি পুলিশেরও

এই চিত্র পূর্ব মেদিনীপুরের কাঁথি থানার। এখানকার দুই পুলিশকর্মী ডেঙ্গিতে আক্রান্ত হয়েছে। এএসআই (ট্রাফিক) সুদীপ কর্মকার ও কনস্টেবল নিরঞ্জন প্রামানিক দু’জনেই হাসপাতালে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কাঁথি শেষ আপডেট: ০৪ অক্টোবর ২০১৭ ০২:০৭
Share:

স্তূপাকার: মশার আঁতুরঘর।— নিজস্ব চিত্র।

থানা চত্বরে স্তূপাকার হয়ে পড়ে রয়েছে ভাঙা বাইক, দোমড়ানো মোচড়ানো গাড়ি। যন্ত্রাংশের ফাঁকে জমা জলে নিশ্চিন্তে ডিম পাড়ছে মশা। আর ডেঙ্গি হুলে কাবু হচ্ছেন পুলিশকর্মী।

Advertisement

এই চিত্র পূর্ব মেদিনীপুরের কাঁথি থানার। এখানকার দুই পুলিশকর্মী ডেঙ্গিতে আক্রান্ত হয়েছে। এএসআই (ট্রাফিক) সুদীপ কর্মকার ও কনস্টেবল নিরঞ্জন প্রামানিক দু’জনেই হাসপাতালে। সুদীপ্তবাবু জামশেদপুরে এবং নিরঞ্জনবাবু কাঁথি মহকুমা হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। মশা মারতে পুলিশ কামানও দাগতে পারছে না। কারণ, ভাঙাচোরা গাড়িতে যে আইনের সুতোর ফাঁস!

ক’দিন আগেই কলকাতার টালিগঞ্জ থানায় পড়ে থাকা অভিনেতা বিক্রম চট্টোপাধ্যায়ের গাড়ির ভেতরে জমা জলে মিলেছিল ডেঙ্গি মশার লার্ভা। এ বার কাঁথি থানাতেও সেই এক ছবি প্রশ্ন তুলে দিয়েছে পুরসভা ও স্বাস্থ্য দফতরের ভূমিকা নিয়ে। ভগবানপুর থেকে পটাশপুর— জেলার বিভিন্ন জায়গাতেই দেখা গিয়েছে, বহু মানুষ ডেঙ্গিতে আক্রান্ত হওয়ার পরেও স্বাস্থ্য দফতর উদাসীন। আক্রান্তদের চিকিৎসা চলেছে বাড়িতে, এলাকায় মেডিক্যাল টিম পর্যন্ত যায়নি।

Advertisement

কাঁথি থানা চত্বরে মশার বাড়বাড়ন্ত নিয়েও দায়িত্ব ঝেড়ে ফেলছে স্বাস্থ্য দফতর। কাঁথির সহ-মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক চন্দ্রশেখর মাইতির বক্তব্য, ‘‘মাসে দু’বার পুরকর্মীদের নিয়ে স্বাস্থ্য দফতর ডেঙ্গির সমীক্ষা করে। পুরসভাকে পরামর্শ দেওয়া আমাদের কাজ। কিন্তু পরিষ্কার করার দায়িত্ব পুরসভার। তাছাড়া, থানায় জমে থাকা জিনিস আদালতের সম্পত্তি। তাই আমাদের কিছু করার নেই।’’

কাঁথি মহকুমায় সব থেকে বড় ক্যাম্পাস কাঁথি থানায়। সেখানেই পড়ে বিভিন্ন ধরনের গাড়ির ভাঙাচোরা যন্ত্রাংশ। কোনটাও ট্রাফিক আইন ভাঙায় আটক হয়েছে, কোনওটা আবার দুর্ঘটনায় তছনছ। মিনি লরি, এসি গাড়ি সবই রোদ-বৃষ্টিতে পড়ে থেকে জীর্ণ হয়েছে, তাতে গজিয়েছে শ্যাওলা, ঝোপ। আর সেখানেই মশার বাড়বাড়ন্ত। থানা লাগোয়া অংশে রয়েছে পুলিশ ব্যারাক, মহিলা থানা, পুলিশ আধিকারিকদের আবাসন। পুলিশ আধিকারিকরা এখানে সপরিবার থাকেন। ফলে, আতঙ্ক ছড়িয়েছে। এই সব ভাঙাচোরা যন্ত্রাংশ ফেলে দেওয়ারও জো নেই। কারণ, মামলার স্বার্থে তার প্রয়োজন পড়তে পারে যে কোনও দিন। জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার ইন্দ্রজিৎ বসু বলেন, “ভাঙাচোরা এই সব যানবাহন আদালতের সম্পত্তি। তাই এগুলো আমাদের রক্ষা করতে হয়। তবে মশার দাপট কমাতে গোটা চত্বর পরিষ্কার করা হবে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন