চিকিৎসক সঙ্কটে ধুঁকছে হাসপাতাল

থাকার কথা ছ’জনের। কিন্তু বাস্তবে রয়েছেনে মাত্র তিনজন চিকিৎসক। এর মধ্যে একজন অসুস্থ হয়ে ছুটিতে রয়েছেন। আর সুপার তো প্রায়শই ব্যস্ত থাকেন প্রশাসনিক কাজ সামলাতে।

Advertisement

অভিজিৎ চক্রবর্তী

শেষ আপডেট: ২৫ জুন ২০১৬ ০৭:৪১
Share:

থাকার কথা ছ’জনের। কিন্তু বাস্তবে রয়েছেনে মাত্র তিনজন চিকিৎসক। এর মধ্যে একজন অসুস্থ হয়ে ছুটিতে রয়েছেন। আর সুপার তো প্রায়শই ব্যস্ত থাকেন প্রশাসনিক কাজ সামলাতে। তাই প্রতিদিন হাসপাতালে গেলেই চোখ পড়ে রোগীদের লম্বা লাইন। এমনই ছবি চন্দ্রকোনা-১ ব্লকের ক্ষীরপাই গ্রামীণ হাসপাতালের।

Advertisement

ক্ষীরপাই গ্রামীণ হাসপাতালটির উপর গোটা চন্দ্রকোনা-১ ব্লকের ছ’টি গ্রাম পঞ্চায়েতের মানুষ নির্ভরশীল। ব্লকের এই হাসপাতালের অধীনে রয়েছে পাঁচটি প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্র ও ২৩ টি উপ-স্বাস্থ্যকেন্দ্র। শয্যা সংখ্যা ৩০টি। সকাল হলেই বহিবির্ভাগে রোগীদের লম্বা লাইনও পড়ে যায়। রোগীদের চাপ সামলাতে দু’জন করে চিকিৎসক বহিবির্ভাগে রোগী দেখেন। কিন্তু এখন পর্যাপ্ত চিকিৎসক না থাকায় বন্ধ হতে বসেছে ওই বিভাগটিও। আর ইনডোরের রোগীদের পরিষেবা দিতেই হিমসিম খেতে হচ্ছে চিকিৎসকদের। ঘন্টার পর ঘন্টা লাইনে দাঁড়িয়ে থাকতে হচ্ছে রোগীদের। অনেকে আবার ফিরে যেতেও বাধ্য হচ্ছেন। স্থানীয় জাড়া গ্রামের সমর রুইদাস তো বলেই ফেললেন, “অনেকদিন ধরেই হাঁটুর সমস্যায় ভুগছি। শুক্রবার ব্লক হাসপাতালে গিয়েছিলাম। দেড় ঘন্টা দাঁড়িয়ে থেকেও ফিরে এলাম। আর ওখানে যাব না।’’

হাসপাতাল সূত্রেই জানা গিয়েছে, হাসপাতালে নেই কোনও বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক। মেডিক্যাল অফিসার হিসাবেই চিকিৎসকেরা নিয়োগ হন। অথচ, এই গ্রামীণ হাসপাতালে জ্বর-সর্দি, উচ্চ রক্তচাপ, দুঘর্টনায় জখম রোগী থেকে ডায়েরিয়া-সহ সমস্ত রকমের রোগীই এখানে আসেন। প্রতি মাসে হাসপাতালের বহির্বিভাগে তিন থেকে সাড়ে তিন হাজার রোগীর চিকিৎসা হয়। কোনও দুঘর্টনা ঘটলে তো কথাই নেই। আর পরিষেবা দেওয়ার জন্য রয়েছেন মোটে তিনজন চিকিৎসক। স্বাভাবিক ভাবেই পাল্লা দিয়ে বাড়ছে রেফারের সংখ্যা। মনোহরপুর পঞ্চায়েতের বাসিন্দা কৃষ্ণা ঘোষের অভিযোগ, “আমার ছেলে মাথায় সামান্য আঘাত লাগে। ছেলেকে না দেখেই ডাক্তারবাবু ঘাটাল যাওয়ার জন্য নির্দেশ দিলেন।’’ নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক চিকিৎসকের কথায়, “প্রতিদিন সকাল থেকে রাত পর্যন্ত কী রোগী দেখা সম্ভব! প্রত্যন্ত গ্রাম থেকে রোগীরা আসেন। আমরাও বুঝতে পারি। কিন্তু এখানে এত চাপ!’’

Advertisement

সমস্যার কথা মেনে নিয়ে হাসপাতালের সুপার নিরঞ্জন কুঁতির কথায়, ‘‘চিকিৎসকের অভাব রয়েছে-একথা ঠিক। বিষয়টি মুখ্যস্বাস্থ্য আধিকারিককে জানানো হয়েছে।” সমস্যার কথা স্বীকার করে মুখ্যস্বাস্থ্য আধিকারিক গিরীশচন্দ্র বেরার জবাব, ‘‘জেলা জুড়ে চিকিৎসকের সমস্যা রয়েছে। ওই হাসপাতালে একজন চিকিৎসক অসুস্থ হওয়ায় সাময়িক সমস্যা তৈরি হয়েছে। কিছুদিন আগেই অস্থায়ী ভাবে একজন চিকিৎসককে নিয়োগ করা হয়েছে। পরিস্থিতি স্বাভাবিক করতে দ্রুত আরও দু’জন চিকিৎসক নিয়োগ করা হবে।”

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement
Advertisement