অগ্নি নির্বাপক যন্ত্রের ব্যবহার জানেন না কেউ, শুনে হতবাক পরিদর্শন দল

ঝাঁ-চকচকে হাসপাতাল ভবনের দেওয়ালে টাঙানো হয়েছে অগ্নি নির্বাপক যন্ত্র। অথচ হাসপাতালের ওয়ার্ড মাস্টার থেকে কর্মী কেউই জানেন না কীভাবে সেই যন্ত্র ব্যবহার করতে হয়। বুধবার এমনই অস্বস্তির ছবি ধরা পড়ল ঝাড়গ্রাম জেলা হাসপাতালে।

Advertisement

কিংশুক গুপ্ত

ঝাড়গ্রাম শেষ আপডেট: ১৪ জুলাই ২০১৬ ০১:৩৮
Share:

যন্ত্রের ব্যবহার বোঝাচ্ছেন পরিদর্শক দল। —নিজস্ব চিত্র।

ঝাঁ-চকচকে হাসপাতাল ভবনের দেওয়ালে টাঙানো হয়েছে অগ্নি নির্বাপক যন্ত্র। অথচ হাসপাতালের ওয়ার্ড মাস্টার থেকে কর্মী কেউই জানেন না কীভাবে সেই যন্ত্র ব্যবহার করতে হয়। বুধবার এমনই অস্বস্তির ছবি ধরা পড়ল ঝাড়গ্রাম জেলা হাসপাতালে।

Advertisement

স্বচ্ছ ভারত অভিযানের আওতায় ‘কায়াকল্প’ প্রকল্পে পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন জেলা হাসপাতালগুলিকে পুরস্কৃত করা শুরু হয়েছে গত বছর থেকে। বুধবার ঝাড়গ্রাম জেলা হাসপাতাল পরিদর্শনে এসেছিল পূর্ব মেদিনীপুর জেলা হাসপাতালের এক প্রতিনিধি দল। পূর্ব মেদিনীপুর জেলা হাসপাতালের সুপার গোপল দাসের নেতৃত্বাধীন ওই প্রতিনিধি দলটি ঝাড়গ্রাম জেলা হাসপাতালের সামগ্রিক পরিষ্কার পরিচ্ছন্নতা, পরিষেবা, কর্মীদের দায়িত্বজ্ঞান ইত্যাদি বিষয় খতিয়ে দেখে। প্রতিনিধি দলটি আসবে বলে হাসপাতাল চত্বর ঝাড়পোঁছ করা হয়েছিল।

কিন্তু তারপরও পরিদর্শক দলটির সদস্যরা দেখেন হাসপাতালের ডাস্টবিন ভর্তি ওষুধের খালি প্যাকেট ও খালি শিশি। অপারেশন থিয়েটরের গ্রিলের দরজায় ঝুল। হাসপাতাল চত্বরে নোংরা পড়ে থাকতে দেখেও উষ্মা প্রকাশ করেন তাঁরা। সুপার স্পেশ্যালিটি ভবনে আউটডোর বিভাগে পৌঁছে পরিদর্শকরা দেখেন, কোনও লাইন নেই। বিশৃঙ্খল ভাবে রোগীরা হুড়োহুড়ি করছেন। পরিদর্শক দলের ধমক খেয়ে আউটডোরের লাইন ঠিক করেন কর্মীরা।

Advertisement

এরপর সুপার স্পেশ্যালিটি ভবনের দেওয়ালে অগ্নি নির্বাপক যন্ত্রটি দেখে পরিদর্শক দলের প্রধান গোপালবাবু হাসপাতলের এক ওয়ার্ড মাস্টারকে বলেন, “যন্ত্রটা চালিয়ে দেখান তো।” থতমত ওই ওয়ার্ড মাস্টার বলেন, “স্যার ওটা আমি চালাতে জানি না।” ওয়ার্ড মাস্টারের হাঁকডাকে ছুটে আসেন হাসপাতালের কর্মীরা। কিন্তু তাঁরাও অগ্নিনির্বাপক যন্ত্র চালাতে জানেন না বলে কবুল করেন। এরপরই বিরক্ত গোপালবাবু বলেন, “এত টাকা দিয়ে এসব কেনা হয়েছে। আর আপনারা এগুলো চালাতে জানেন না! আগুন লাগলে তখন কী করবেন?” পরিস্থিতি বেগতিক দেখে আমতা আমতা করে কর্মীরা বলেন, “স্যার, আমরা শিখে নেব।”

এ দিনের পরিদর্শন সম্পর্কে গোপালবাবু কোনও মন্তব্য করতে চাননি। জানা গিয়েছে, এরপর রাজ্যস্তরের প্রতিনিধি দল ঝাড়গ্রাম জেলা হাসপাতাল পরিদর্শনে আসবে। প্রসঙ্গত, গত ২৫ মে হাসপাতাল পরিদর্শনে এসে অপরিচ্ছন্ন পরিবেশ দেখে মেজাজ হারিয়েছিলেন জেলা সভাধিপতি উত্তরা সিংহ। ঝাড়গ্রামের সিএমওএইচ অশ্বিনীকুমার মাঝি বলেন, “হাসপাতালে সুষ্ঠু অগ্নি নির্বাপন ব্যবস্থা গড়ে তোলা হবে। কর্মীদেরও অগ্নিনির্বাপন প্রশিক্ষণ দেওয়ার ব্যবস্থা করা হবে।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন