পুজোর সাজ। নিজস্ব চিত্র।
পুজোর মরসুমে নাটকের মহড়ায় চলছে জোরকদমে। নানা স্বাদের নাটক নিয়ে প্রস্তুত মহিষাদলের একাধিক দল। শিল্পকৃতি, পদাতিক, শ্রুতি শৈলী বা হলদিয়ার মোরাম— সকলেই এ বার নতুন করে তৈরি হয়েছেন পুজোর জন্য।
মোরাম মহিলা পরিচালিত এবং অভিনীত নাট্যদল। সুস্মিতা রায় ও রাজশ্রী মান্নার পরিচালনায় মোরামের নাটক মঞ্চস্থ হবে সপ্তমীর রাতে। শিব, দুর্গা, গণেশ, লক্ষ্মী সকলেই নারী। ‘‘সারা বছরের কাজের পর এমন নাটক করতে বেশ মজাই লাগে’’, বললেন দুর্গারূপী পার্বতী নন্দী। সামান্য উদ্বেগও রয়েছে। তবে পাড়ার ছেলেরা যে সহযোগিতা করছেন তা জানাতে ভোলেন না গণেশের চরিত্রাভিনেতা প্রতিমা পাল।
হলদিয়ার হাজরা মোড়ের নটরাজ ডান্স অ্যান্ড কালচার-এর ‘মহিষাসুরমর্দিনী’ জনপ্রিয় গীতিনাট্য। এ বারও তা মঞ্চস্থ হবে হলদিয়া টাউনশিপের শঙ্খিনী পুজা কমিটির অনুষ্ঠানে। আবার নাটকের বায়না নিয়ে ভিন্রাজ্যেও যাচ্ছেন অনেকে। পদাতিক নাট্য গোষ্ঠীর অলোকেশ সামন্ত জানান, মধ্যপ্রদেশের এক বাঙালিটোলায় ডাক পেয়েছেন তাঁরা। পুজোটা তাই এ বার ওই রাজ্যেই কাটাবেন কুশীলবরা। ‘শিল্পকৃতি’ প্রযোজনায় ‘চাণক্য’ মঞ্চস্ত হবে রবীন্দ্র পাঠাগারে। সংস্থার কর্ণধার সুরজিৎ সিংহ বলেন, ‘‘শুধু নাটক নয়। ষষ্ঠীর দিন মানসিক প্রতিবন্ধী ও দৃষ্টিহীনদের হাতে নতুন বস্ত্র তুলে দেবেন আমাদের সদস্যরা।’’
সুতাহাটার বাসুলিয়া গ্রামের বিশেষত্ব হল মুখোশ। মুখোশ পরেই নাটক হয় এখানে। আবার প্রতিমা বিসর্জনেও সকলে যোগ দেন মুখোশ পরে। স্থানীয় স্বপন প্রামাণিক তৈরি করেন মুখোশ। মূলত একটি কেন্দ্রীয় সরকারি স্কুলের শিক্ষাকর্মী স্বপনবাবু পুজোর সময় বরাবরই মুখোশ তৈরি করেন।
শুধু কি নাটক? শারদোৎসবের সংস্কৃতিতে হাজারও পত্রিকা প্রকাশের ঢল। প্রকাশিত হয়েছে ‘মেঘবল্লরী’র বিশেষ হলদিয়া সংখ্যা। ‘তিতুরসূ’, ‘ল্যাকেটু’, ‘রঙমশাল’, ‘তকমিনা’, ‘স্মাটি’, ‘সম্বিত’, ‘স্বপ্ন খেয়া’, ‘অর্ঘ্য’, ‘মেঘপালক’-এর মত নামী পত্রিকা এ বার প্রকাশিত হয়েছে। বিশেষ সংখ্যার তালিকায় রয়েছে ভাস্কর ব্রত পতির ঢাকিদের নিয়ে গবেষণা গ্রন্থ— ‘চড়াম চড়াম’। কবি শিশির বাগ বলেন, ‘‘এই সময় পত্রিকা প্রকাশের আনন্দ রয়েছে। পত্রিকা প্রকাশকে কেন্দ্র করে কোথাও কবিতা পাঠ আবার কোথাও গল্প পাঠের আসর বসছে।’’ হলদিয়ার নামী লেখক, প্রাবন্ধিক আমিনুল ইসলাম বলেন, ‘‘এই সময়টার জন্য চাতকের মতো অপেক্ষা করি। পত্রিকা হাতে পাওয়ার জন্য হাপিত্যেশ করি।’’