পুজোর জামাকাপড় পেয়ে গিয়েছে তারা। কিন্তু পুজোর আগে আর স্কুল পড়ুয়াদের হাতে পৌঁছল না সরকারি ভাবে বরাদ্দ পোশাক।
প্রাথমিক বিদ্যালয়ের পড়ুয়াদের পোশাক দেওয়ার জন্য অর্থ বরাদ্দের নির্দেশ হয়েছিল গত মার্চ মাসে। তবে তা ২০১৬ –’১৭ আর্থিক বছরের জন্য। সরকারি নির্দেশ অনুযায়ী, প্রথম থেকে চতুর্থ শ্রেণির পড়ুয়াদের দু’সেট করে পোশাক তৈরি করতে বরাদ্দ মাথাপিছু ৪০০ টাকা। স্কুলগুলিতে সেই টাকা পৌঁছেও গিয়েছে। কিন্তু আজ পর্যন্ত জেলার অনেক প্রাথমিক বিদ্যালয়ের পড়ুয়া পোশাকই পায়নি বলে অভিযোগ।
শিক্ষাবর্ষ শেষ হতে চললেও পড়ুয়াদের হাতে পোশাক তুলে দিতে না পারায় অভিভাবকদের প্রশ্নের মুখে পড়তে হচ্ছে বলে অভিযোগ শিক্ষক-শিক্ষিকাদের। এই নিয়ে তাঁদের মধ্যে ক্ষোভও বাড়ছে। জেলার শিক্ষক সংগঠনগুলির অভিযোগ, স্কুল কর্তৃপক্ষের হাতে পোশাক কেনার ক্ষমতা নেই। নিয়ম, স্বসহায়ক গোষ্ঠীর পরিচালনায় থাকা মহাসংঘ বা সংঘের মাধ্যমে তা কিনতে হবে। কিন্তু সময়মত পোশাক সরবরাহ করতে পারছে না সংঘগুলি। সরকারি নিয়ম বদলের জেরেই এমন সমস্যা তৈরি হয়েছে বলে অভিযোগ শিক্ষক সংগঠনগুলির। পোশাক কেনায় গতি আনতে জেলা প্রশাসনকে ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানিয়েছে তারা।
জেলা প্রাথমিক বিদ্যালয় সংসদের সভাপতি মানস দাস বলেন, ‘‘পোশাক কারা দেবে তা নিয়ে জটিলতায় কিছুটা দেরি হয়েছে। তবে এই বিষয়ে নিয়ম সরলীকরণ করা হয়েছে। ফলে এখন দ্রুত পোশাক সরবরাহ করা হচ্ছে।’’ প্রশাসন ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, পূর্ব মেদিনীপুরে ৩ হাজার ২৬৫টি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রথম থেকে চতুর্থ শ্রেণির পড়ুয়াদের দু’সেট পোশাক দেওয়ার জন্য অর্থ বরাদ্দ করেছে সর্বশিক্ষা মিশন।
নন্দকুমার ব্লকের কল্যাণচক প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক তপনকুমার মণ্ডলের অভিযোগ, ১৮৫ জন পড়ুয়ার পোশাক তৈরির জন্য ৪ মাস আগেই স্কুলের অ্যাকাউন্টে টাকা পাঠানো হয়েছে। পোশাক তৈরির দায়িত্বপ্রাপ্ত সংঘ দু’মাস আগে স্কুলে এসে পড়ুয়াদের পোশাকের মাপ নিয়ে গিয়েছিল। কিন্তু এখনও পোশাক হাতে আসেনি। গত বছর পুজোর আগেই পড়ুয়াদের হাতে পোশাক তুলে দেওয়া হয়েছিল। এ বার আর দেওয়া গেল না।
একই অবস্থা শহিদ মাতঙ্গিনী ব্লকের মথুরী এক নম্বর প্রাথমিক বিদ্যালয়েও। প্রধাম শিক্ষক চিরঞ্জীব কুইল্যা বলেন, ‘‘গত সপ্তাহে পড়ুয়াদের পোশাকের মাপ নেওয়া হয়েছে। কবে পোশাক হাতে পাব জানি না।’’
পশ্চিমবঙ্গ প্রাথমিক শিক্ষক সমিতির জেলা সম্পাদক অরূপ কুমার ভৌমিকের অভিযোগ, ‘‘স্ব-সহায়ক সংঘ ও গোষ্ঠীগুলির হাতে পোশাক তৈরির দায়িত্ব দেওয়া হলেও অনেকেরই পোশাক তৈরির পরিকাঠামো নেই। তাই সময়ে পোশাক সরবরাহে দেরি হচ্ছে।’’
যদিও তমলুকের এক স্বসহায়ক সংঘের নেত্রীর দাবি, ‘‘পোশাক তৈরির বরাত পাওয়ায় দেরি হওয়ার জন্যই সময়মত সব স্কুলে একসঙ্গে পোশাক দিতে দেরি হচ্ছে।’’