Neem Tree

নারকেলের পরে নিম, অজানা সংক্রমণে আতঙ্ক

জেলায় নারকেল গাছে মড়কের পাশাপাশি মড়ক শুরু হয়েছে নিম গাছেও।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

পাঁশকুড়া শেষ আপডেট: ১৬ এপ্রিল ২০২০ ০৫:৪৪
Share:

ব্যাকটিরিয়ার আক্রমণে গজায়নি কচি পাতা। শুকিয়ে যাচ্ছে গাছ। পাঁশকুড়ায়। নিজস্ব চিত্র

সাধারণত ফাল্গুন, চৈত্র মাসে নিম গাছের কচি পাতা বের হয়। নানা রকম রোগের প্রতিরোধে নিমের কচি পাতা ভেজে খাওয়ার চল রয়েছে। কিন্তু এ বার পাঁশকুড়া ও কোলাঘাট ব্লকের বেশ কিছু জায়গায় নিম গাছে কচি পাতা গজানো দূরের কথা, অজানা সংক্রমণে নিম গাছ মারা যাওয়ার খবর এসেছে। গত বছরও জেলার একাধিক ব্লকে নিম গাছ মারা যাওয়ার ঘটনা ঘটেছিল। তখন যে সব জায়গায় এই সংক্রমণ ছড়ায়নি এ বছর সে সব জায়গায় নতুন করে শুরু হয়েছে সংক্রমণ।

Advertisement

জেলায় নারকেল গাছে মড়কের পাশাপাশি মড়ক শুরু হয়েছে নিম গাছেও। গত সাতদিনে পাঁশকুড়া ও কোলাঘাট ব্লকের একাধিক জায়গা থেকে অসংখ্য নিম গাছ মারা যাওয়ার খবর এসেছে। বহু গাছ আবার এই অজানা সংক্রমণে মৃতপ্রায়। পূর্ব মেদিনীপুর জেলা কৃষি দফতরের এক আধিকারিক জানান, এটি একটি ব্যাকটিরিয়া ঘটিত রোগ। তবে নিমের মতো তেতো স্বাদের গাছে কী ভাবে এই রোগের আক্রমণ হল তা নিয়ে উদ্বিগ্ন সাধারণ মানুষ। কোলাঘাটের দেড়িয়াচক গ্রামের বাসিন্দা কার্তিক সাহু বলেন, ‘‘আমার বাড়ির সামনে থাকা দু’টি নিম গাছই রোগ অজানা সংক্রমণের কয়েক দিনের মধ্যে মারা গিয়েছে। প্রথমে গাছের পাতা শুকিয়ে যেতে শুরু করে। তারপর ডালপালাগুলো শুকিয়ে গিয়ে গোটা গাছই মরে যায়।’’ একই অভিজ্ঞতা পাঁশকুড়ার চাঁইপুরের বাসিন্দা সুবীর কুমার ঘোড়াইয়ের। তিনি বলেন, ‘‘আমার বাড়ির আশপাশে অনেকগুলি নিমগাছ গত এক সপ্তাহে মারা গিয়েছে। এ বছর আর গাছে নিমের কচি পাতা দেখা গেল না।’’

কিন্তু নিমের মতো তেতো গাছে রোগ সংক্রমণ সম্ভব?

Advertisement

কৃষি বিজ্ঞানী কাঞ্চন কুমার ভৌমিক বলেন, ‘‘নিম গাছের মধ্যে রয়েছে অ্যাজাডিরেক্টিন নামে বিশেষ এক ধরনের উৎসেচক। এটি নিমের মধ্যে তেতো স্বাদ বাড়াতে সাহায্য করে। তবে আমাদের রাজ্যে ক্রমাগত দূষণের কারণে নিম গাছের তেতো স্বাদ অনেকটাই কমে গিয়েছে। দূষণের দরুন গত কয়েক বছরে নিম পাতার মধ্যে থাকা জীবাণুনাশক ও ছত্রাক নাশক উৎসেচকগুলির উপস্থিতি বিপজ্জনক ভাবে কমে গিয়েছে। ফলে নিমগাছের মধ্যে রোগ পোকার আক্রমণের সম্ভাবনা প্রবল হয়ে উঠেছে।’’

নিমের মতো উপকারি গাছে রোগ পোকা আক্রমণের ঘটনায় উদ্বিগ্ন কৃষি দফতরও। পূর্ব মেদিনীপুর জেলা কৃষি দফতরের উপ অধিকর্তা আশিস বেরা বলেন, ‘‘এটি এক ধরনের ব্যাকটিরিয়ার আক্রমণ। তবে মেক্সিকান ফ্লাই-এর আক্রমণও হতে পারে। বিষয়টি খোঁজ নেওয়া হচ্ছে।’’ এর থেকে গাছকে বাঁচানোর উপায়? আশিসবাবুর মতে, ‘‘নিমগাছ যদি বাড়ির কাছাকাছি থাকে সে ক্ষেত্রে জৈব কীটনাশক, বাড়ি থেকে কিছুটা দূরে নিমগাছ থাকলে রাসায়নিক কীটনাশক স্প্রে করলে বেঁচে যেতে পারে গাছ।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন