‘ঝাল লঙ্কা’ মুদির দোকানে, চাইলেই হাতে

অভিযান নামেই। মুদি দোকানেও শব্দবাজি। দেখল আনন্দবাজার অভিযোগ, শব্দবাজি-সহ অন্যান্য বেআইনি বাজি রুখতে কালীপুজোর আগে বাজি তৈরির কারখানাগুলিতে পুলিশ লাগাতার অভিযান চালালেও বাজি বিক্রির দোকানগুলিতে সে ভাবে অভিযান চালাতে দেখা যায় না।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কাঁথি শেষ আপডেট: ২৩ অক্টোবর ২০১৯ ০০:২৭
Share:

সাধারণ বাজির আড়ালেই চলে শব্দবাজি বিক্রি। নিজস্ব চিত্র

কলকাতার মতো বাজির নির্দিষ্ট কোনও বাজার নেই। বড় সড়ক কিংবা জনবহুল এলাকার একাধিক দোকানে বিক্রি হয় বাজি। যেখানে আড়ালে আবডালে মেলে শব্দবাজিও।

Advertisement

অভিযোগ, শব্দবাজি-সহ অন্যান্য বেআইনি বাজি রুখতে কালীপুজোর আগে বাজি তৈরির কারখানাগুলিতে পুলিশ লাগাতার অভিযান চালালেও বাজি বিক্রির দোকানগুলিতে সে ভাবে অভিযান চালাতে দেখা যায় না। ফলে তমলুক থেকে হলদিয়া, কাঁথি, এগরা মহকুমার বিভিন্ন এলাকায় দোকানে যে কারণে, লঙ্কা, পটকা, চকলেট বোম, জল বোমের মতো শব্দবাজি অবাধে বিক্রি হয়।

স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, কাঁথি শহরের ক্যানাল পাড়, রসুলপুর বাসস্ট্যান্ড, সুপার মার্কেট এলাকায় সারি সারি বাজি দোকান বসেছে। ওই সব দোকানে সামনের দিকে নানা রকম আলোক বাজি এবং মোমবাতি সাজিয়ে রাখা হয়। তবে চেনা জানা কোনও গ্রাহক গিয়ে চাহিদার কথা জানালে নিমেষে আড়াল আবডাল থেকে হাতে পৌঁছে যায় পছন্দের চকলেট, জল বা গাছবোমার মতো বিকট শব্দের বাজি। কাঁথি শহরের এক বাজি বিক্রেতার দাবি, এখানকার চাহিদার কথা ভেবে দুর্গাপুজোর পরে ট্রেনে কেরল থেকে লঙ্কা পটকা এবং চকলেট বোম সংগ্রহ করে আনতে হয়।

Advertisement

গত কয়েক বছর ধরে কালীপুজোয় শব্দবাজি নিষিদ্ধ করেছে পরিবেশ দফতর। তারপরে দীপাবলিতে শব্দবাজির তাণ্ডব কিছুটা কমলেও তা একেবারে বন্ধ হয়নি। কী ভাবে সেই শব্দ বাজি বিক্রি করা হয়! সুপার মার্কেটের এক বাজি বিক্রেতার কথায়, ‘‘সারা বছর শব্দবাজি নিয়ে তেমন কঠোর পদক্ষেপ করে না পুলিশ। তবে কালীপুজোয় যাতে ব্যবসার অসুবিধা না হয় সে জন্য আগে থেকে স্থানীয় থানাগুলিতে টাকা দিয়ে আসতে হয়।’’ আর এক বাজি বিক্রেতা বলেন, ‘‘মুদির দোকানের পাশাপাশি বাজি বিক্রি করি। মাঝেমধ্যে পুলিশ আসে। সে কথা ভেবেই আগে থেকে অন্যত্র শব্দবাজি সরিয়ে রাখতে হয়। আর যাঁরা শব্দবাজি কেনেন তাঁদের জন্য অন্য ব্যবস্থা রয়েছে। যেমন কেউ দোকানে এসে বলেন লঙ্কা দেবেন। তবে যেন কড়া ঝাল হয়। তার মানে তিনি এমন ভাল আওয়াজের শব্দবাজি চাইছেন।’’

কাঁথির ক্যানাল পাড় এলাকায় রবিবার থেকে বাজির পসরা বসে গিয়েছে। এক দোকানদার জানান, দোকানে কী ধরনের বাজি রাখা হয় এবং বিক্রি করা হয় সে ব্যাপারে কখনই খোঁজ নিতে আসে না পুলিশ। শুধু কাঁথি নয়, রামনগর, দিঘা এবং এগরা মহকুমা সদর শহর সহ পটাশপুর, ভগবানপুর, মংলামাড়ো এলাকায় অস্থায়ীভাবে প্রচুর বাজির দোকান বসে। এঁদের বেশিরভাগই বাজি ব্যবসার জন্য স্থানীয় প্রশাসনের কাছ থেকে অনুমতি নেন না বলেও অভিযোগ। আর ওই সব অস্থায়ী বাজির দোকান থেকেই চোরাগোপ্তা শব্দবাজি বিক্রি হয় বলে গ্রাহকরা জানিয়েছেন।

শব্দ বাজি নিয়ে প্রশাসনের কঠোর পদক্ষেপের পরেও কেন পুরোপুরি ঠেকানো যাচ্ছে না এই ধরনের বাজি। এগরা থানার এক পুলিশ আধিকারিক জানান, দীপাবলীর আগে এক সপ্তাহ জুড়ে লাগাতার ওইসব অস্থায়ী দোকানে অভিযান চালানো হয়। অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (হলদিয়া) পারিজাত বিশ্বাস জানান, জেলাজুড়ে শব্দবাজির বিরুদ্ধে নিয়মিত অভিযান চালানো হয়। তা ছাড়া এ ধরনের নিষিদ্ধ শব্দবাজি বিক্রি খবর পেলেই সেখানে অভিযান চালিয়ে শব্দবাজি বাজেয়াপ্ত করা হয়। তবে কিছু কিছু এলাকায় গোপনে যে শব্দবাজি বিক্রি হয় তা অস্বীকার করা যাবে না।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন