স্বচ্ছতা বজায় রাখতে যে প্রক্রিয়ায় ভরসা করা হচ্ছিল, সেই ই-টেন্ডারেও উঠেছিল দুর্নীতির অভিযোগ। সম্প্রতি আনন্দবাজারে সেই খবর প্রকাশিত হওয়ার পরেই নড়ে বসল জেলা প্রশাসন। পুরনো প্রক্রিয়া বাতিল করে ফের নতুনভাবে দরপত্র আহ্বানের নির্দেশ দেওয়া হল।
পশ্চিম মেদিনীপুরের মাওবাদী প্রভাবিত ১১টি ব্লকে ১১টি আবাসিক মডেল স্কুল তৈরি হয়েছে। আসবাবপত্র কেনার জন্য প্রতিটি স্কুলকে প্রায় ১ কোটি করে টাকা দেওয়া হয়েছে। সম্প্রতি মেদিনীপুর সদর ব্লক ৯৪ লক্ষ ১৭ হাজার ৬৭০ টাকার সরঞ্জাম কেনার দরপত্র আহ্বান করে। কিন্তু দরপত্র আহ্বানের প্রক্রিয়াতে বিস্তর অসঙ্গতি রয়েছে বলে অভিযোগ ওঠে। অভিযোগ, পছন্দের ঠিকাদারকে বরাত পাইয়ে দিতে অন্যান্য ঠিকাদারদের নথি জমা নিতে অস্বীকার করে বিডিও অফিস। এমনকী দরপত্রে সরঞ্জামের নির্দিষ্ট মাপকাঠির উল্লেখও ছিল না। শুধুই ‘উন্নত মান’ ও ‘স্কুলের ইনচার্জের নির্দেশ’ মতো আসবাব কিনতে বলা হয়েছিল। এ নিয়ে জেলাশাসক থেকে শুরু করে প্রশাসনের নানা মহলেই লিখিত অভিযোগ জানান অন্য ঠিকাদারেরা। তারপরই নতুন করে দরপত্র আহ্বানের নির্দেশ দিয়েছে প্রশাসন। এ ব্যাপারে জানতে চাওয়া হলে জেলা উন্নয়ন ও পরিকল্পনা আধিকারিক সুমন্ত রায় শুধু বলেন, “ফের নতুন করে দরপত্র আহ্বানের কথা বলা হয়েছে।”
জেলা প্রশাসন সূত্রে খবর, মেদিনীপুর সদর ব্লক ছাড়াও জামবনি ও বেলপাহাড়ি ব্লক দরপত্র আহ্বান করেছিল। সদর ব্লকে দরপত্র আহ্বানের প্রক্রিয়ায় ত্রুটির বিষয়টি আনন্দবাজারে প্রকাশিত হওয়ার পরে অন্য ব্লকেও অভিযোগ আসতে থাকে। তারপর ‘ওয়ার্ক অর্ডার’ দিতে নিষেধ করা হয় জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে। জানা গিয়েছে, ১১টি মডেল স্কুলের জন্য জেলা প্রশাসনের কাছেই টাকা পাঠিয়েছিল রাজ্য সরকার। জেলা প্রশাসন এ ক্ষেত্রে একটি কমিটি তৈরি করে। কমিটি সিদ্ধান্ত নেয়, ব্লক প্রশাসনের কাছে সেই টাকা পাঠিয়ে দেওয়া হবে। কিন্তু ব্লক প্রশাসন দরপত্র আহ্বানের পরেই ভুরি ভুরি অভিযোগ উঠতে থাকে।
গোটা প্রক্রিয়া ত্রুটিমুক্ত করতে এ বার টেন্ডারে প্রতিটি সংস্থাকে যোগ দেওয়ার সুযোগ দিতে হবে, কী কী আসবাব কেনা হবে, তার মাপ কত, সব কিছুর উল্লেখ থাকতে হবে। সেই মতো নতুন করে দরপত্র আহ্বানের জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছে ব্লকগুলি।