বিদ্যুৎ চুরির খবর ছিল গোপন সূত্রে। সদলবলে অভিযানে গিয়েছিলেন বিদ্যুৎ দফতরের আধিকারিক। কিন্তু এ বারও ব্যতিক্রম হয়নি। দফতরের তিন কর্মীই মার খেয়েছেন স্থানীয় বাসিন্দাদের হাতে। বৃহস্পতিবার রাতে ঘাটাল থানার মান্দারপুর গ্রামের ঘটনা।
বিদ্যুৎ দফতরের ঘাটাল সাপ্লাই অফিসের স্টেশন ম্যানেজার অনিরুদ্ধ মণ্ডলের অভিযোগের ভিত্তিতে পুলিশ তদন্ত শুরু করেছে। অনিরুদ্ধবাবু বলেন, “ওই এলাকার বেশ কয়েকটি জায়গায় হুকিং ছিল। সেই অনুযায়ী সংযোগ কাটার কাজ শুরুও হয়েছিল। হঠাৎ ৩০-৪০ জন লোক আমাদের উপর চড়াও হয়। আমাদের তিনজনকে মারধর করা হয়।” অভিযোগ, মোবাইল কেড়ে নিয়ে ভাঙচুর করা হয়েছে একটি মোটর বাইকও।
বিদ্যুৎচুরির ঘটনা এবং অভিযানে গিয়ে কর্মীদের মার খাওয়ার ঘটনা অবশ্য নতুন নয়। ঘটনায় উদ্বিগ্ন জেলা প্রশাসন।
দিন কয়েক আগেও বেলদা এলাকায় এমন এক ঘটনা ঘটেছিল। দুই ক্ষেত্রেই বিদ্যুৎ কর্মীদের দীর্ঘক্ষণ ঘেরাও করে রাখা হয়। তার পর চলে মারধর।
জেলার বিদ্যুৎ কর্মাধ্যক্ষ অমূল্য মাইতি অবশ্য কড়া গলায় বলেছেন, “এমন ঘটনা বরদাস্ত করা হবে না। যে বা যারা এমন ঘটনার সঙ্গে জড়িত, তাদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।” অমূল্যবাবুর হুঁশিয়ারি, “বিদ্যুৎ চোরেদের ছেড়ে কথা বলা হবে না। হুকিংয়ের বিরুদ্ধে অভিযান যেমন চলছে, তেমনই চলবে।” অনিরুদ্ধবাবুও বলেছেন “পুরো ঘটনার কথাই পুলিশকে জানিয়েছি।”
এ দিকে মিটারে কারচুপি করে বিদ্যুৎ চুরির অভিযোগে তিন গ্রামবাসীর বিরুদ্ধে পৃথক মামলাও করছে বিদ্যুৎ দফতর। গোপন সূত্রে খবর পেয়েই ওই রাতে মান্দারপুরে গিয়েছিলেন বিদ্যুৎ দফতরের আধিকারিক। চুরির প্রমাণও মিলেছিল। কিন্তু তারপরই বাধা দেন বাসিন্দারা।
পুলিশ ও বিদ্যুৎ দফতর সূত্রের খবর, ঘাটাল ব্লকের মহারাজপুর গ্রাম সংলগ্ন মান্দারপুর গ্রামে একাধিক বাড়িতেই হুকিং করা হয়। এর আগেও অভিযান চালিয়েছে দফতর। তাতে চুরি বন্ধ করা যায়নি।
বহুদিন ধরেই স্থানীয় বনমালি দোলই, অনিল দোলই এবং সুনীল দোলইয়ের বিরুদ্ধে মিটারে কারচুপি করার অভিযোগ উঠেছিল।
বৃহস্পতিবার দফতরের কর্মীরা ওই তিন জনের বাড়িতে হানা দেন। কারচুপির প্রমাণও পান। এক এক করে মিটারের ছবি তুলতেও শুরু করেন। তখনই একদল লোক এসে তাঁদের মোবাইল ফোনটি কেড়ে নেন বলে অভিযোগ।
পুলিশ জানিয়েছে, অভিযোগ পেয়ে ঘটনার তদন্ত শুরু হয়েছে। তবে অভিযুক্তেরা পলাতক। তাঁদের খোঁজে তল্লাশি শুরু হয়েছে। অনিরুদ্ধবাবুর দাবি, পরের বার পুলিশ নিয়েই তিনি অভিযানে যাবেন।