প্রতীকী ছবি।
দলমার হাতির পালকে কাছ থেকে দেখতে গিয়ে মৃত্যু হল এক যুবকের। ওই ঘটনায় হাতির হামলায় গুরুতর জখম হয়েছেন মৃতের এক সম্পর্কিত ভাইও। বুধবার বিকেলে ঝাড়গ্রাম জেলার নয়াগ্রাম ব্লকের চাঁদাবিলা রেঞ্জের সিংধুই এলাকার ঘটনা। মেদিনীপুর সদর ব্লকের অন্য একটি ঘটনায় দাঁতালের হানায় এক বৃদ্ধেরও মৃত্যু হয়েছে।
মৃতের নাম সমীর মাহাতো (৩০)। তাঁর বাড়ি চাঁদাবিলা গ্রামে। সমীরের জ্যাঠতুতো ভাই জখম নগেন মাহাতোও চাঁদাবিলা গ্রামের বাসিন্দা। আশঙ্কাজনক অবস্থায় নগেন এখন মেদিনীপুর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন।
বন দফতর ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, দিন তিনেক আগে নয়াগ্রামের জঙ্গলে ঢুকেছে দলমার পালের প্রায় ৫০-৫৫টি হাতি। গত দু’রাতে হাতির পাল লোকালয়ে হানা দিয়ে বিঘার পর বিঘা জমির সদ্য রোপণ করা ধান চাষের ক্ষতি করেছে। স্থানীয় চাষি লালমোহন মাহাতো, দিলীপ মাহাতো জানালেন, হাতির দল ধানের চারা খেয়ে যতটা না ক্ষতি করছে, তার চেয়ে বেশি ধানি জমি পায়ে মাড়িয়ে যাওয়ার সময় বেশি ক্ষতি হচ্ছে। এলাকা থেকে হাতির দলকে খেদানোর দাবিতে শুরু হয়েছে বিক্ষোভ। এলাকাবাসী ও হুলাপার্টির তাড়া খেয়ে পালের ২৫টি হাতি মঙ্গলবার রাতে ওড়িশা সীমানা লাগোয়া কেশরেখা এলাকার জঙ্গলে চলে গিয়েছিল। সিংধইয়ের জঙ্গলে ছিল আরও গোটা পঁচিশটা মতো হাতি। কিন্তু ওড়িশার দিক থেকে হাতিগুলি ফের চাঁদাবিলা রেঞ্জের জঙ্গলে এসে হাজির হয়েছে।
বুধবার বিকেলে এলাকার কিছু লোকজন সিংধুই গ্রামের লাগোয়া জঙ্গলে হাতি দেখতে গিয়েছিলেন। একটি হাতি জঙ্গল থেকে বেরিয়ে এসে তাড়া করে। সমীর ও নগেন হাতির সামনে পড়ে যান। সমীরকে শুঁড়ে তুলে আছড়ে দেয় হাতিটি। নগেনকে হাতিটি ধাক্কা মেরে ফেলে দেয়। স্থানীয়রা হাতিটিকে জঙ্গলে খেদিয়ে দেন। দু’জনকে উদ্ধার করে মেদিনীপুর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়। বুধবার রাতে হাসপাতালে মৃত্যু হয় সমীরের।
ডিএফও (খড়্গপুর) অরূপ মুখোপাধ্যায় বলেন, “এলাকার জঙ্গলে হাতির পাল রয়েছে জেনেও এ ভাবে হাতি দেখতে যাওয়া খুবই বিপজ্জনক। মৃতের পরিবারকে সরকারি নিয়ম অনুযায়ী অর্থসাহায্য করা হবে।” জীবন বিপন্ন করে জঙ্গলে হাতি দেখতে না যাওয়ার জন্য ফের আবেদন জানিয়েছেন ডিএফও। হাতির দলটিকে এলাকা থেকে অন্যত্র সরানোর চেষ্টা হচ্ছে।
অন্য দিকে, মেদিনীপুর সদর ব্লকের সুন্দরলাটায় বুধবার গভীর রাতে শৌচকর্মের জন্য বাড়ির বাইরে বেরিয়েছিলেন অমূল্য মাহাতো। আচমকা তাঁর ওপর হামলা চালায় হাতি। শুঁড়ে তুলে আছড়ে মারে। ঘটনাস্থলেই তাঁর মৃত্যু হয়।