বাড়িতে লার্ভা পেলে লেখা হবে ‘এল’

শুধু গত বছর নয়, পর পর কয়েক বছরই জেলায় চোখ রাঙিয়েছে ডেঙ্গি। চলতি বছরে শুরু থেকেই মশাবাহিত এই রোগকে নিয়ন্ত্রণে রাখতে বিশেষ কর্মসূচি গ্রহণ করছে স্বাস্থ্য দফতর।

Advertisement

অভিজিৎ চক্রবর্তী

ঘাটাল শেষ আপডেট: ০৪ জানুয়ারি ২০১৮ ০০:৩৬
Share:

প্রতীকী ছবি।

২০১৭ সালে পশ্চিম মেদিনীপুর জেলায় ডেঙ্গি আক্রান্তের সংখ্যা পাঁচশো ছাড়িয়েছিল। শীত পড়তে নিয়ন্ত্রণে এসেছে মশাবাহিত এই রোগ।

Advertisement

তাই আর ঝুঁকি না নিয়ে ঠান্ডার আমেজ থাকতে থাকতেই এ বার মশা মারতে উদ্যোগী হচ্ছে স্বাস্থ্য দফতর। রীতিমতো প্রশ্নপত্র সাজিয়ে বাড়ি বাড়ি যাবেন স্বাস্থ্য দফতরের আধিকারিকরা। পরিদর্শনের সময় কোনও বাড়িতে মশার লার্ভা মিললে সেই বাড়ির দরজায় লিখে দেওয়া হবে ‘এল’ (লার্ভা) অক্ষরটি।

শুধু গত বছর নয়, পর পর কয়েক বছরই জেলায় চোখ রাঙিয়েছে ডেঙ্গি। চলতি বছরে শুরু থেকেই মশাবাহিত এই রোগকে নিয়ন্ত্রণে রাখতে বিশেষ কর্মসূচি গ্রহণ করছে স্বাস্থ্য দফতর।

Advertisement

তিনটি পর্যায়ে হবে কাজ।

প্রথম পর্যায়ে প্রতি মাসের ১-৫ তারিখের মধ্যে শহর এলাকার প্রতি বাড়িতে ঢুঁ মারবেন পুরসভার কর্মীরা। একই ভাবে প্রতি মাসের ১৫-১৯ তারিখের মধ্যে আর এক দফায় পুরকর্মীরা বাড়ি বাড়ি ঘুরবেন। গৃহকর্তাকে নানা প্রশ্ন করবেন তাঁরা। বাড়ির চারিদিক পরিষ্কার তো, কোথাও মশার লার্ভা নেই তো‌, এমনই
নানা প্রশ্ন রয়েছে তালিকায়। পরিদর্শনের সময় কারও বাড়িতে মশার লার্ভা পাওয়া গেলে ওই বাড়ির দেওয়াল কিংবা দরজায় লিখে দেওয়া হবে ‘এল’ অক্ষর।

স্বাস্থ্য দফতর সূত্রে খবর, দ্বিতীয় পর্যায়ে আরও দু’জন পুরকর্মী সংশ্লিষ্ট বাড়ি বা পাড়ায় গিয়ে মশা মারার তেল স্প্রে করবেন। কাজ ঠিকমতো হচ্ছে কি না তা দেখতে।

তৃতীয় পর্যায়ে সুপারভাইজারকে সঙ্গে নিয়ে কাউন্সিলররা বিভিন্ন বাড়িতে যাবেন। গ্রামীণ এলাকায় ডেঙ্গি রোধে সচেতনতা বাড়ানোর কাজ করবেন পঞ্চায়েতের প্রতিনিধিরা।

গত বছর জেলায় ডেঙ্গিতে আক্রান্ত হন ৫৬৪ জন। জ্বরেও আক্রান্ত হন অনেকে। ডেঙ্গির বাড়বাড়ন্ত ঠেকাতে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নির্দেশে জেলায় জেলায় ‘ডিস্ট্রিক্ট লেভেল মনিটরিং কমিটি’ গঠন করা হয়েছে। প্রতি জেলার জেলাশাসককে কমিটির চেয়ারম্যান করা হয়। পুরসভা, পঞ্চায়েত, জনস্বাস্থ্য ও কারিগরি দফতর, আইসিডিএস, শিক্ষা দফতর-সহ সংশ্লিষ্ট সব দফতরকেই মাঠে নামানোর সিদ্ধান্ত নেয় সরকার।

এ বার প্রতিটি পুরসভা এলাকায় কাউন্সিলরদের নজরদারি চালানোও বাধ্যতামূলক করা হয়েছে বলে স্বাস্থ্য দফতরের এক সূত্রে খবর। নিয়ম
মেনে পুরসভা ও পঞ্চায়েত কর্তৃপক্ষগুলি এলাকা পরিষ্কার করছে কি না তা দেখতে পরিদর্শন করবেন কমিটির সদস্যরা।

জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক গিরীশচন্দ্র বেরা বলেন, “মশাবাহিত রোগ একেবারে নির্মূল করতেই নতুন পরিকল্পনা গ্রহণ করা হয়েছে। আশা করা যায়, এর ফল মিলবে।”

জেলার পতঙ্গবাহিত রোগের নোডাল অফিসার তথা উপ-মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক রবীন্দ্রনাথ প্রধান বলেন, “দিনে দিনে মশা পরিবেশের সঙ্গে মানিয়ে নিচ্ছে। তবে সাধারণ মানুষের মধ্যে এ নিয়ে সচেতনতা বাড়ছে না, এটাই চিন্তার বিষয়। মানুষকে আরও সচেতন করতেই আমাদের এমন ভাবনা।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন